সবাই বলে স্কুল লাইফ টা নাকি বেস্ট ,আমার টাও বেস্ট ছিলো ,স্কুল লাইফ এই প্রথম সবাই বালোবাসতে শিখে আমিও শিখে ছিলাম ,শুধু দুঃখ একটাই রয়েগেলো আমার ভালোবাসা সম্পূর্ণ হলো না।আর সম্পূর্ণ হবে কি করে তুই তো ছেড়ে গেলি মাজ পথে একা ফেলে।
আমি যাকে ভালবাসতাম তার নাম ছিলো দিয়া আমাদের বাড়িও ছিলো একই জায়গায় আর স্কুল টাও ছিলো একটাই, কিন্তু প্রথমে ছোটো ছিলাম জন্য হয়তো ভালোবাসা টা কি তা বুজতাম না কিন্তু আমরা ভালো বন্ধু ছিলাম,। তারপর যখন একটু বুজতে শিখলাম তখন বুজলাম দিয়া কে আমি ভালোবেসে ফেলেছি আর ভালোবাসা না হয়ে কোনো উপায় ও ছিল না কারণ সবকিছু একসাথে হতো আমাদের সব দিন দেখাও হতো তাই নিজের অজান্তেই ভালোবেসে ফেলেছিলাম। ওর বেপার তা তখন বুজতে পারিনি ও আমাকে ভালোবাসতো কি না কিন্তু আমার মনে হতো সেও আমার কাছ থেকে কিছু চাইতো। কিন্তু আমিও বলতে ভয় পেতাম যদি বন্ধুত্ব টা নষ্ট হয়ে যায়।
দেখতে দেখতে আমরা ক্লাস ৯ এ উঠলাম ,আমার বন্ধু রাও হালকা হালকা বুজতে পারতো যে আমি ওকে লাইক করি কিন্তু বলতে পারছি না। তাই একদিন আমার আর দিয়ার বন্ধুরা মিলে প্লেন করে যে আমরা দুজন কে একসাথে মেলাবে তারা সেটা আবার আমরা দুজন কে না জানিয়ে।
অন্য দিন টিফিন এর পর সবাই ক্লাস থেকে বের হয় কিন্তু সেদিন কেও বেরহয়নি তারপর সবাই আমরাকে চারপাশ থেকে ঘিরে নিয়ে বলে আমরা জানি তোরা দুজনেই দুজন কে ভালোবাসিস কিন্তু তোরা বলতে লজ্জা পাশ তাই এখন তোরা একে অপরকে i love you বল না হলে আমরা এখন ছাড়বো না।
তখন কী বলবো ভেবে উঠতে পারি নি আর ওরও আমার মতোই অবস্থা এদিকে বুজতে পারলাম না বললে এরাও ছাড়বে না ,তাই বলেই ফেলাম সেও বললো। দিয়াও আমাকে ভালোবাসতো কিন্তু এভাবে বলতে হবে বলে আশাকরে নি ,যায় হোক তার পর তারা আমাকে আর দিয়া কে একই ঘরে দরজা বন্ধ করে সবাই বেরিয়ে গেলো ,তখন কি কথা বলবো বুজে উঠতে পারি নি তাই দিয়া এই বোললো
দিয়া:-তুই কি আমাকে ভালোবাসিস নাকি এদের কথা শুনে বল্লিস,আমি:- না আমার তোকে আগের থেকেই ভালো লাগতো ,দিয়া:- তাহলে আগে তুই বলিস নি কেন ,আমি:- ভেবেছিলাম বললে যদি বন্ধুত্ব টা যদি নষ্ট হয়ে যাই ,আর তুই …?দিয়া:- আমিও তোকে পছন্দ করতাম ,আর তোকে তা বুজাতেও চেয়েছিলি কিন্তু তুই বুজতেই পারিস নি।
তারপর সবাই দরজা খুলে চলে এলো হারামী গুলা সবাই লুকিয়ে লুকিয়ে শুনছিলো আমরা কি গল্প করছি ; এসে বলে ভালোবাসা হয়ে থাকলে ,এবার নিজের জায়গায় গিয়ে বস সবাই ক্লাস হবে এখন। ক্লাস ছুটির সময় আমরা একসাথে বেরালাম আর কথা হলো বিকালে মাঠে দেখা হবে।
তখন আমাদের কাছে ফোন ছিল না,আর ফোন এর প্রয়োজন ও হতো না কারণ সবসময় ওকে দেখতে পেতাম টিউশন ,স্কুল ,মাঠে। ..ভালোই চলছিল আমাদের ভালোবাসা। এভাবেই আমরা মাধ্যমিক দিলাম একসাথে ভালোবাসতে কোনো সময় জগড়া হতো আবার ঠিক হয়ে যেতো। এর পর আমাদের ওই স্কুল এ সাইন্স না থাকার কারণে আমাকে বাইরের স্কুল এ ভর্তি হতে হলো
আর আমি বাড়ি ও বেশি আস্তে পারতাম না মাঝে মাঝে আসতাম কিন্তু বেশি দিন থাকতাম না এই জন্য দেখা করাও সম্ভব হতো না ,আর ওর ফোন না থাকার কারণে কথা হতো না আমাদের
তারপর মোটামোটি একবছর পর আমি পরীক্ষা দিয়ে যখন বাড়ি আসি তখন ওর বান্ধবীর কাছে শুনলাম ও নাকি অন্য ছেলেকে ভালোবাসে এখন ,প্রথমে বিশ্বাস হয়ে ছিল না তার পর একদিন দেখলাম ও সেই ছেলেটার সাথে ঘুরছে তাকে কিছু বলতে পারি নি মনে মনে বলেছিলাম সুখে থাকিস।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছু বদলে যায়। এক সময় যে সম্পর্ক এতটা গভীর ছিল, সেই সম্পর্ক কখন যেন হারিয়ে যায় স্মৃতির পাতায়। আমি দিয়ার কথা ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু কিছু অনুভূতি ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। তবে বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে নিজের জীবনে এগিয়ে চলার চেষ্টা করছিলাম।
প্রায় পাঁচ বছর পর, একদিন হঠাৎ করে আমাদের ছোট শহরে ফিরে এলাম। কাজের ব্যস্ততায় শহরের বাইরে থাকতে হয়েছিল এতদিন। সেদিন সন্ধ্যায়, পুরোনো মাঠের পাশ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মনে হচ্ছিল, যেন শৈশব আর কৈশোরের সমস্ত স্মৃতি ফিরে এসেছে। সেই মাঠ, সেই গাছ, সেই পরিচিত রাস্তাগুলো… মনে করিয়ে দিল দিয়ার সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো।

হঠাৎ দেখলাম, কেউ একজন মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটি আমাকে দেখামাত্রই পিছনে ফিরে যেতে চাইল। কিন্তু আমি তাকে চিনতে ভুল করিনি। ও ছিল দিয়া।
আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কী বলব ভেবে পাচ্ছিলাম না। দিয়াই এগিয়ে এসে বলল,
“কেমন আছিস?”
আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, “তুই এখানে? এতদিন পর দেখা… ভাবতেও পারিনি।”
দিয়া হেসে বলল, “শহর ছেড়ে তোকে চলে যেতে হয়েছিল। তোর খবরও পেলাম না। জানিস, মাঝে কতবার তোকে মনে পড়েছে।”
আমি একটু থেমে বললাম, “তুই তো তখন অন্য কারো সঙ্গে… সুখে তো ছিলি, তাই না?”
দিয়ার হাসি ম্লান হয়ে গেল। সে নিচের দিকে তাকিয়ে বলল, “না রে। যাকে ভালোবাসার চেষ্টা করেছিলাম, সে আমাকে সত্যিকারের ভালোবাসতে পারেনি। একটা সময় বুঝতে পেরেছিলাম, ভালোবাসা তো জোর করে হয় না। আর তুই… তোকে তো আর কখনো পাইনি।”
তার কথা শুনে আমার ভেতর যেন পুরোনো ক্ষতগুলো আবার জেগে উঠল। কিছু সময় নীরব থেকে বললাম,
“কেন? তুই তো আমার জীবনের সব কিছু ছিলি। কিন্তু তুই নিজেই দূরে চলে গেলি। তখন তো কিছু বলিসও না।”
দিয়া চোখের কোণে জল নিয়ে বলল, “তোর থেকে দূরে যাইনি রে। পরিস্থিতি আমাকে বাধ্য করেছিল। আমাদের জীবনে হয়তো সব গল্পের শেষ এক হয় না।”
আমি নরম গলায় বললাম, “তাহলে এখন তুই কী চাস?”
দিয়া এক পা এগিয়ে এসে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
“এখন চাই, বাকি জীবনটুকু যদি তোকে আবার পাই, তাহলে আর কিছু চাইব না।”
ওর কথাগুলো যেন আমার মনের সমস্ত জমে থাকা বরফ গলিয়ে দিল। আমি বললাম,
“তুই কি জানিস, তোকে ছাড়া এই পাঁচটা বছর আমার কীভাবে কেটেছে? আমি তো আজও তোকে ভুলতে পারিনি।”
সেদিন আমাদের কথাগুলো যেন শৈশবের সেই বন্ধুত্ব আর কৈশোরের ভালোবাসার স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছিল। আমরা দুজনেই বুঝলাম, অনেক দেরি হয়ে গেলেও আমাদের ভালোবাসা এখনো জীবন্ত।
সেদিন চাঁদের আলোয় মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, এবার থেকে আর কেউ আমাদের আলাদা করতে পারবে না।