---Advertisement---

Couple Bengali love story: ঢাকায় প্রেম

Updated On:
Couple Bengali love story
---Advertisement---

…তুমি আমার মনের খবর কী জানলে?”

ঈশিতা একটু দুষ্টু হাসি দিয়ে বলল, “জানতে চেয়েছিলাম তুমি এখনো আমাকে মনে রাখো কিনা। কিন্তু এখন তো দেখছি, তুমি তো আমার জন্যই পাগল!”

শাহেদ একটু মুচকি হেসে বলল, “তুমি কি জানো, এই তিন বছরে আমি কতবার তোমাকে খুঁজেছি? তোমার নাম, তোমার সেই চুলের বিনুনি, আর তোমার মুখের হাসি—সবকিছু প্রতিটা মুহূর্তে আমার মাথায় ছিল।”

ঈশিতা হেসে বলল, “আমি জানি। আর আমিও… আমিও তোমাকে ভুলতে পারিনি। কিন্তু কীভাবে বলতাম? সবসময় ভয় হতো, তুমি যদি আমাকে ভুলে গিয়ে থাকো!”

“ভুলে যাওয়া? আমি তো ভুলেই থাকতে চাইনি। তোমার সেই শেষ চিঠিটা যে আমার কাছে আসেনি, তার জন্য কত রাত ঘুমাতে পারিনি।”

ঈশিতা এবার একটু নরম গলায় বলল, “আমিও ভেবেছিলাম তুমি আর আমাকে চাইবে না। কিন্তু তুমি তো ঠিকই আমাকে খুঁজে বের করলে!”

শাহেদ হেসে বলল, “তুমি কি জানো, তোমার নিশিতা হয়ে অভিনয় করাটা খুব একটা পারফেক্ট হয়নি? আমি প্রথম দিন থেকেই বুঝেছিলাম তুমি আর কেউ না, আমার ঈশিতা।”

ঈশিতা লজ্জা পেয়ে বলল, “কী করব বলো? আমি চাইছিলাম তুমি নিজেই প্রমাণ করো, আমার প্রতি তোমার অনুভূতি এখনো সত্যি কিনা। আর সত্যিই তুমি সেটা করেছ।”

শাহেদ এবার সিরিয়াস হয়ে বলল, “তাহলে এবার সরাসরি বলো, ঈশিতা, তুমি কি আমাকে আবার তোমার জীবনে জায়গা দেবে?”

ঈশিতা একটু থেমে বলল, “তুমি তো আমার জীবনে সবসময়ই ছিলে, শাহেদ। হয়তো দূর থেকে, হয়তো নীরবে, কিন্তু আমার মনের কোণে সবসময় তুমি ছিলে। আর এখন থেকে—আমরা একসঙ্গে।”

শাহেদের মুখে চওড়া হাসি ফুটল। সে বলল, “তাহলে আর দেরি কেন? কাল থেকেই শুরু করি একসঙ্গে আমাদের নতুন গল্প।”

ঈশিতা মিষ্টি হেসে বলল, “একটা শর্ত আছে।”

“শর্ত?”

“তুমি আমাকে আর কখনো ভুল বোঝার সুযোগ দেবে না, ঠিক আছে?”

শাহেদ মাথা নাড়িয়ে বলল, “তোমার এই শর্ত আমি আজীবন মেনে চলব।”

ঈশিতা হেসে বলল, “তাহলে আমাদের গল্পটা শুরু হোক। কিন্তু এবার আর শেষ হবে না!”

শাহেদের মনে তখন দোলাচল। ঈশিতার সব কথার মাঝে একটা চিরন্তন সত্য লুকিয়ে ছিল—ভালোবাসা কখনো হারায় না, শুধু সময়ের সঙ্গে বদলে যায়। ফোনের ওপাশে ঈশিতার কণ্ঠে লজ্জা আর হাসির মিশ্রণ শুনে ওর মুখে একটা অজান্তা হাসি ফুটে উঠল। কিন্তু এবার ও চাইল পুরনো অনুভূতিগুলো শুধু কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকুক।

ফোনের ওপাশ থেকে ঈশিতা বলল,
“তাহলে কি, এবার আর চিঠি লিখে বলতে হবে না তো? মুখোমুখি বলার সাহস আছে?”

শাহেদ একটু থমকাল। ঈশিতার এই প্রশ্নের পেছনে লুকিয়ে থাকা চ্যালেঞ্জ বুঝতে পারল। বলল,
“তোমার সামনে দাঁড়ানোর সাহস আছে। শুধু বলো, কবে এবং কোথায়।”

ঈশিতা একটু মুচকি হেসে বলল,
“আগামী শনিবার বিকেলে ধানমন্ডি লেক। তুমি আসবে তো?”

শাহেদ আর কিছু বলল না, শুধু হাসি দিয়ে বিদায় নিল। ওর মনে একটা শিহরণ। তিন বছর আগের যে অধ্যায় অসমাপ্ত রয়ে গিয়েছিল, সেটার সমাপ্তি কি এবার হবে?

সেদিন বিকেলে শাহেদ নিজের পোশাকের উপর বিশেষ নজর দিল। নতুন সাদা শার্ট আর কালো জিন্স পরে নিজেকে আয়নার সামনে দাঁড় করিয়ে দেখল। নিজের অস্বস্তি চাপা দিয়ে লেকে পৌঁছাল ঠিক সময়ে। চারপাশে মানুষজনের কোলাহল থাকলেও শাহেদের দৃষ্টি শুধু একজনের খোঁজে।

কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর সে দেখতে পেল ঈশিতা ধীরে ধীরে ওর দিকে আসছে। মাথায় খোলা চুল, পরনে সাদা সালওয়ার-কামিজ। সূর্যের শেষ আলো গাছের পাতার ফাঁক গলে ঈশিতার মুখে পড়ে যেন পুরো দৃশ্যটাই ছবির মতো লাগছিল।

ঈশিতা কাছে এসে হেসে বলল,
“অনেকদিন পর দেখা, তাই না?”

শাহেদ একটু হেসে উত্তর দিল,
“হ্যাঁ, কিন্তু মনে হচ্ছে এই কদিন আগেই তোমাকে দেখেছিলাম।”

দুজনেই একটা বেঞ্চে বসে পড়ল। প্রথমে দুজনেই চুপচাপ ছিল, যেন কে আগে কথা বলবে তা নিয়ে অদৃশ্য প্রতিযোগিতা চলছিল। অবশেষে ঈশিতা বলল,
“তুমি জানো, সেদিন তোমার চিঠিটা হাতে পেলেই আমি কী করতাম?”

শাহেদ জিজ্ঞেস করল,
“কি করতে?”

ঈশিতা একটু মুচকি হেসে বলল,
“সোজা তোমার সামনে গিয়ে বলতাম, ‘হ্যাঁ।’ কিন্তু তুমি কেন মাহাদীর মতো ভুল মানুষকে চিঠি দিলে?”

শাহেদ হেসে বলল,
“এখন বুঝেছি, আমি তখন বেশ বড় ভুল করেছিলাম। কিন্তু জানো, একটা সময় ভেবেছিলাম, হয়তো তুমি আমাকে ভালোবাসোই না।”

ঈশিতা তাকিয়ে বলল,
“ভালোবাসা কখনো মুখে বলে হয় না। ওটা অনুভব করতে হয়। আর আমি চাইছিলাম তুমি নিজের ইচ্ছেতেই আমাকে খুঁজে নাও।”

কথায় কথায় সময় কেটে গেল। পুরনো স্মৃতিগুলো নতুন করে ওদের মাঝে ফিরে এল। বেঞ্চে বসে থাকা দুজন যেন মুহূর্তের জন্য পৃথিবীর সবকিছু ভুলে গেল।

ঈশিতা হঠাৎ বলে উঠল,
“তুমি কি সত্যি এখনো আমাকে ভুলতে পারোনি?”

শাহেদ সরাসরি ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,
“তোমাকে ভোলা তো সম্ভব নয়। তুমি কি আমাকে ভুলতে পেরেছ?”

ঈশিতা একটু চুপ করে থাকল। তারপর ধীরে ধীরে বলল,
“আমি চেষ্টা করিনি। কারণ আমি জানতাম, আমাদের গল্পটা অসমাপ্ত।”

শাহেদ ওর হাতটা ধরে বলল,
“তাহলে এবার আমাদের গল্পটা সম্পূর্ণ করার সময় হয়েছে। আমি আর কোনো ভুল করতে চাই না। এবার থেকে সবকিছু সঠিকভাবে শুরু হবে।”

ঈশিতা একটু মুচকি হেসে বলল,
“সঠিকভাবে শুরু হলে আর ভুল পথে যাবে না তো?”

শাহেদ দৃঢ় কণ্ঠে বলল,
“যত কিছুর মধ্য দিয়েই যাই, তোমার হাত ছাড়ব না।”

সেদিন ধানমন্ডি লেকের সূর্যাস্তের সাক্ষী হল দুজন মানুষের নতুন করে শুরু হওয়া গল্প। ঈশিতা আর শাহেদ বুঝতে পারল, ভালোবাসা পুরনো হতে পারে, কিন্তু সেটাকে নতুন করে গড়ে তোলা যায়।

গল্পটা শুরু হয়েছিল ভুল বোঝাবুঝি দিয়ে। কিন্তু শেষটা হল একটা নতুন পথের শুরুতে, যেখানে প্রতিটা পদক্ষেপ হবে একসাথে। 🌸

Payel Mahato

I am Payel Mahato, a passionate storyteller who loves weaving emotions into words and crafting tales that touch hearts. As a Bengali love story writer, I specialize in creating narratives filled with romance, drama, and human connections that resonate deeply with readers.

---Advertisement---

Related Post

Leave a Comment