---Advertisement---

Heart touching Bangla romantic story: শুধু তোমার পাগল

Published On:
Heart touching Bangla romantic story
---Advertisement---

রোজা না রাখার যে কী প্যারা হতে পারে, সেটা আজ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। মাত্র একটা রোজা মিস করেছি, আর মনে হচ্ছে, পুরো দুনিয়া আমার বিপক্ষে চলে গেছে। বাসায় শান্তি নেই, বাইরেও নেই, এমনকি ফেসবুকেও না। গার্লফ্রেন্ড তাসফির ঝাড়ি এমনভাবে ঝাড়ছে, মনে হচ্ছে রোজা না রেখে আমি বুঝি কাউকে খুন করে ফেলেছি!

তাই শেষমেশ মিথ্যা বলে দিলাম—“হ্যাঁ, রোজা আছি।” অথচ বাস্তবে আমি এখন এক রেস্টুরেন্টে বসে বিরিয়ানি খাচ্ছি, মজা করে। ভাবছিলাম, অনেক পরিশ্রম করি তো—একটা রোজা না রাখলেই বা কী এমন মহাভারত অশুদ্ধ হবে! খেতে খেতে নিজের বিবেক আমাকে গালি দিচ্ছে, আর আমি চামচে করে মুখে বিরিয়ানি তুলছি।

ঠিক তখনই পিছন থেকে একটা কণ্ঠ—
– “এই যে মিস্টার!”
আমি ভাবলাম, কোনো ওয়েটার হবে, বিরক্ত হয়ে বললাম,
– “ভাই, একটু ডিস্টার্ব করবেন না তো? খাচ্ছি না দেখছেন?”

পরক্ষণেই শার্টের কলার টেনে আমার মুখ ঘুরিয়ে দিলো একজনে। চোখাচোখি হতেই হৃৎপিণ্ড প্রায় গলার কাছ দিয়ে বেরিয়ে এলো।
– “তুই কি বললি? আমি তোর ভাই নাকি? এই তোর রোজা?”

তাসফি!
আমার সেই “ভয়ংকর রোমান্টিক” প্রেয়সী। চোখে অগ্নি! যদি দৃষ্টিতেই মানুষ ছাই হয়ে যেত, আমি হয়তো এ মুহূর্তেই বিলীন হয়ে যেতাম।

আমি বলার চেষ্টা করলাম, – “দেখো, আসলে রোজা ছি…”
সে থামিয়ে দিলো, – “চুপ! একটাও কথা না। আজ থেকে আমি তোর কেউ না… তুইও আমার কেউ না! ব্রেকআপ!”

তারপর হনহন করে চলে গেল।
আমি এক চামচ বিরিয়ানি মুখে দিয়ে থেকে গেলাম নিথর।

রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে পড়লাম। রোদের তাপে শরীর পুড়ছে, আর মাথায় একটাই চিন্তা—”তাসফির রাগ কীভাবে ভাঙাবো?”
তাসফি সহজে রাগে না, কিন্তু রাগলে পুরো পৃথিবী থেমে যায় ওর চোখে। নামাজ-রোজার ব্যাপারে ওর আলাদা আবেগ।
নিজেই আমাকে প্রপোজ করেছিল, অথচ এখন আমাকেই শাসন করছে নিয়মের জন্য।

আমি হাঁটতে হাঁটতে ভাবছি, ফোন করলে হয়তো রিসিভই করবে না। তবু কল দিলাম…
যা ভেবেছিলাম—ফোন সুইচ অফ!

ভাবি হচ্ছে তাসফির মামাতো বোন। ভাবিকে ধরলেই কাজ হতে পারে। গেলাম ভাবির কাছে। কিন্তু সে এমনভাবে ব্যস্ততা দেখাচ্ছে, মনে হচ্ছে আমিই যেন দেশের সবচেয়ে অপ্রয়োজনীয় মানুষ।

– “ভাবি, প্লিজ… একটু তাসফির রাগ ভাঙাও না।”
– “নিজের সমস্যার সমাধান নিজে করো।”
– “প্লিজ! উম্মাহ্, লাভ ইউ ভাবি!”
– “ছিঃ ভাগ, পাগল কোথাকার।”
– “হিহি।”

ভাবি শেষমেশ রাজি হলো। মনে একটু আশার আলো জ্বললো।

আসরের আজান হলো। ভাবলাম, নামাজটা পড়ে নিই। হয়তো আল্লাহ আমার কান্না শুনবেন।
চল্লিশ বার মোনাজাতে বললাম—“প্লিজ আল্লাহ, তাসফির রাগটা ভাঙিয়ে দাও।”

এতক্ষণে আল্লাহ্ হয়তো আমার প্রার্থনা শুনেছেন।
ফোন বেজে উঠলো—“তাসফি কলিং…”

– “হ্যালো?”
– “বাসায় আসো। এখনই।”
– “এখন? সবাই কী ভাববে?”
– “আমি কিছু শুনতে চাই না। বললাম না, এখনই আসো!”

বাসায় গেলাম। তাসফির ছোট বোন দরজা খুলে দিলো। মনে হচ্ছে আগেই জানতো আমি আসবো।
তাসফি টেনে আমাকে ছাদে নিয়ে এলো।

– “তুমি কেন মিথ্যে বললে?”
– “কারণ আমি চাইনি তুমি কষ্ট পাও। তুমিই তো বলো, ভালোবাসলে কষ্ট দিও না।”

তাসফি কিছু বললো না।
হঠাৎ করে সে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করলো।
এই কান্নার প্রতিটি ফোঁটায় একটা অসম্ভব মায়া লুকানো—একটা অন্ধ ভালবাসা।

আমি সাহস করে জিজ্ঞেস করলাম,
– “তুমি কাঁদছো কেন?”
– “কারণ আমি তোমাকে ভালোবাসি। শুধু দুনিয়ার জন্য না, আখিরাতের জন্যও।”

আমি স্তব্ধ।
সে বললো,
– “তুমি জানো আমি কেন চাই তোমার নামাজ পড়া, রোজা রাখা? কারণ মৃত্যুর পরও আমি চাই তুমি আমার স্বামী হও, জান্নাতবাসী হও। আমি চাই না আমার ভালোবাসা জাহান্নামে যাক…”

ওর চোখ থেকে চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে বললাম,
– “আর কখনো মিথ্যে বলবো না। তোমার জন্য, আমার জন্য, আমাদের জন্য ঠিক হয়ে যাবো।”

ও হেসে বললো,
– “পাগল একটা।”
– “শুধু তোমার পাগল।”
– “ভালবাসি…”
– “আমি আরও বেশি ভালবাসি।”

Payel Mahato

I am Payel Mahato, a passionate storyteller who loves weaving emotions into words and crafting tales that touch hearts. As a Bengali love story writer, I specialize in creating narratives filled with romance, drama, and human connections that resonate deeply with readers.

---Advertisement---

Related Post

Leave a Comment