পরিবারের সবাই মিলে আমি গেছি পাত্রী দেখতে। সামনে টেবিলে নানা রকম মুখরোচক খাবার, আত্মীয়-স্বজনের হালকা হালকা গুঞ্জন, আর মাঝেমধ্যে আমার দিকে সন্দেহের চোখে তাকানো দুই-তিনজন কাকিমা—যারা বুঝেই ফেলেছেন আমি একটু বেশিই লাজুক।
মা চোখ ইশারা করতেই পাত্রীর মা মেয়েকে আনলেন। শাড়ি পরে, হাতে শরবতের ট্রে নিয়ে পাত্রী এল। মাথা নিচু, ঠোঁটের কোণে হালকা মুচকি হাসি।
কিন্তু…!
যখন মেয়েটির মুখটা স্পষ্ট দেখলাম, আমার হৃদয়ে যেন বাজলো হ্যামলিনের বাঁশি! ও মা! এ তো আমার প্রেমিকা…!
প্রেমের সম্পর্কটা হুট করে শেষ হয়েছিল, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, দুঃখবোধ আর অপূর্ণতা ছিল ভরপুর। আর আজ হঠাৎ সে আমার বিয়ের পাত্রী!
আমি একেবারে থ।
আমার মা তো তখনই বলে ফেললো, “এই মেয়েটিকেই আমার ছেলের বউ চাই।” বাবা তো আরও এক ধাপ এগিয়ে বললেন, “বিয়ের তারিখটা ফাইনাল করে ফেলতে চাই।”
আমার অবস্থা তখন গোঁজামিল দেওয়া প্রেমিকের মতো। চুপচাপ বসে আছি, বুকের ভেতর ঝড় বইছে—কিন্তু মুখে জলতরঙ্গ!
Bengali Best new Romantic Love Story
শাশুড়ি মা (মানে তখনো হবু) বললেন, “ছেলে-মেয়ে একটু কথা বলে নিলে ভালো হয়।”
চোখ তুলে তাকালাম তার দিকে। সেও তাকালো। চোখের ভাষা অনেক কিছু বলে দেয়, কিন্তু কথায় সে কিছুই বললো না। শুধু একটা হালকা হাসি।
পার্ট ২: প্রেমিকের ইন্টারভিউ
আমি আর সে বসলাম এক রুমে। মনে মনে ভেবেছিলাম বলবো— “তুমি কি জানো, তোমার চুলের ঘ্রাণ এখনো আমার বালিশে লেগে আছে?”
কিন্তু মুখে এসে গেল আরেকটা প্রশ্নঃ
—“তা প্রেম করেছেন কয়টা এ পর্যন্ত?”
সে অবাক হয়ে তাকালো। তারপর বললো—
—“আস্তাগফিরুল্লাহ! এসব কী বলেন! আমি ওই রকম মেয়ে না।”
আমার মাথার ভেতর তখন একটাই কথা ঘুরছে— “ওরে বাবা, এতদিনের প্রেমিক আমি, আর এখন বলছে কিছুই হয়নি!”
তারপর কিছু হাসি-ঠাট্টা, কিছু চোখাচোখি, আর দুইজনের সম্মতিতে বিয়েটা পাক্কা হলো।
পার্ট ৩: কবুলের পরের কাণ্ড
বিয়েতে তিনবার কবুল বলেছি ঠিকই, কিন্তু মনে হচ্ছে প্রতিবার কবুল বলার সময় মনে মনে বলেছি— “যা হবার হয়েছে, এখন জ্বালাতনের জন্য প্রস্তুত থাক!”
Bangla Valobasar Golpo 2025
গাড়িতে উঠার সময় বউয়ের কান্না দেখে এক মুহূর্ত মনে হলো, সত্যি ভালোবাসে আমাকে। চোখে জল, ঠোঁট কাঁপছে, বুক জুড়ে অভিমানের ছায়া। অথচ একসময় এই মেয়েটাই আমায় বলেছিল, “তুমি খুব বোরিং।”
বাসায় এসে পৌঁছালাম। বাসর রাত। নার্ভাস লাগছে। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বুক ধড়ফড় করছে। বন্ধু আর দুলাভাইয়ের সব সাহস জড়ো করে দরজা ঠেললাম…
ভেতরে ঢুকে দেখলাম—ঘোমটা তোলা, পা বিছানায় তুলে মোবাইল টিপছে আমার বউ! আমি থ!
আরেক ধাক্কা খেলাম যখন দেখলাম, ফেসবুকে কাপল পিক আপলোড করে দিয়েছে। ক্যাপশনে লিখেছে—
“একটু আগেই আমি আমার বিবাহিত জীবন শুরু করেছি। আমি খুশি হলেও, এ বিয়েতে আমার সাবেক প্রেমিক সারাক্ষণ গম্ভীর মুখে ছিল।”
আমি মাথা নিচু করে বসে পড়লাম। হাসবো, না কাঁদবো, বুঝতে পারছিলাম না।
ক্যাপশনের পরের অংশটা ছিল—
“আমার প্রেমিক থেকে স্বামীতে প্রমোশন পাওয়ায় তিনি মনে হয় কিছুটা বিমর্ষ এবং অসহায় বোধ করছেন! হয়তো এজন্যই কাপল পিকেও গম্ভীর মুখ, এ অসহায়, গম্ভীর ছেলেটির জন্য কয়টা লাইক হবে ফ্রান্স?”
আমি তাকে চেয়ে দেখি। সে নিচু মাথায় বসে, কিন্তু চোখে একটুকরো দুষ্টু হাসি।

পার্ট ৪: প্রেমিকার জ্বালানো, বরের কান্না
বিয়ের কয়েকদিন পরেই বুঝলাম, এই প্রেমিকা এখন স্ত্রী হয়ে আগের চেয়েও ভয়ঙ্কর। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার শেভিং ক্রিম দিয়ে সে পায়ের স্ক্র্যাবিং করছে।
একদিন বললাম, “তোমার রান্না তো দারুণ হয়েছে আজ!”
সে হেসে বললো, “ওটা আমি করিনি, আন্টি পাঠিয়েছেন।”
আরেকদিন আমি রেগে গিয়ে বললাম, “তুমি বদলে গেছো।”
সে উত্তর দিল, “তোমাকে পেয়ে বদলেছি, দোষটা আমার না।”
Bengali Love Story
তবে, সব কষ্টের মাঝেও আছে একরাশ মমতা, খুনসুটি, আর ভালোবাসা। কখনো আমার অফিসের লাঞ্চবক্সে ছোট্ট নোট রেখে দেয়— “তাড়াতাড়ি বাড়ি আসো, নতুন রেসিপি বানিয়েছি!”
কখনো আমার অসুস্থতায় মাথায় হাত বুলিয়ে বলে— “তুমি অসুস্থ হলেই আমার খুব ভয় লাগে।”
এই মেয়েটা, যে কিনা একসময় হুট করে হারিয়ে গিয়েছিল, আজ সারাদিন আমার পাশে থাকে, আমার নাম ধরে ডাকে, আর মাঝরাতে বলে— “তোমার সঙ্গে বিয়ে না হলে বুঝি আবারও প্রেমে পড়তাম।”
শেষ কথা
এই গল্পটা শুধু আমার না। এমন অনেক প্রেম আছে, যেগুলো ভেঙে যায়, আবার জোড়া লাগে অদ্ভুতভাবে। কেউ জানতে পারে না, কেউ বুঝে না। কিন্তু ভালোবাসা যদি সত্যি হয়, তাহলে সে ফিরে আসে… কখনো পাত্রী হয়ে, কখনো স্ত্রী হয়ে, কিন্তু প্রতিবার এক নতুন রূপে।
তোমরা বলো তো, প্রেমিক থেকে বর হওয়ার এই সফরটা কেমন লাগলো?
(এই গল্পটি কপিরাইট BengaliGolpo.com – চন্দন মহাতোর লেখা।)
চাইলে এই গল্পের পরবর্তী অংশেও বাড়িয়ে দেওয়া যাবে, যেমন—নতুন সংসারের মজার দিনগুলি, প্রথম ঝগড়া, হানিমুন কাহিনি ইত্যাদি। বলো যদি চাই!
একটা বিয়ে হয় কাগজে-কলমে। আরেকটা বিয়ে হয় মনের মধ্যে। কাগজের বিয়েটা কবুল বলার দিনেই সেরে ফেলেছিলাম। আর মনের বিয়েটা শুরু হলো বাসর রাতের পরে। যদিও স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও সে এখনও আমার প্রেমিকাকে হার মানায় — কখনো ভালোবাসায়, কখনো দুষ্টুমিতে।
তাই আজ বলছি—
Bengali arranged marriage story 2025
প্রেমিক থেকে বর: পার্ট ২ – “স্ত্রীর প্রেমে দ্বিতীয়বার পড়া”
রাত সাড়ে তিনটা। আমি ঘুমিয়ে ছিলাম ঘুমঘোরে। হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখি পাশের মানুষটা নেই। বিছানা ঠান্ডা, ঘরে নিঃস্তব্ধতা। ভেবেছিলাম হয়তো টয়লেটে গেছে। কিন্তু দশ মিনিট পেরিয়ে গেলেও ফেরে না।
আমি হালকা দুশ্চিন্তায় উঠে পড়লাম। দেখি, বারান্দায় বসে সে কাঁধে একটা চাদর জড়িয়ে মোবাইল ঘাঁটছে।
— “এই, এখানে কী করছো? ঠান্ডা লেগে যাবে তো!”
সে চমকে তাকালো। তারপর হালকা হেসে বলল—
— “তোমার নাক ডাকার আওয়াজ শুনে ঘুম ভেঙে গেল। ভাবলাম একটু হাওয়া খাই।”
আমি একটু লজ্জা পেলাম। কিন্তু মুখে বললাম—
— “তুমি জানো, বিয়ের পর আমার ঘুম আর আগের মতো নেই। কারণ এখন আমি জানি, পাশে তুমি আছো। আর তোমার একটু না থাকলেও বুকের মধ্যে কেমন খালি খালি লাগে।”
সে কিছু বললো না। শুধু চোখের কোণটা ভিজে গেল।
সেই রাতেই আমি বুঝলাম, আমি আবার প্রেমে পড়েছি। একই মেয়ের, নতুন রূপে। এইবার সে শুধু প্রেমিকা নয়, সে আমার ঘরের সাথি, আমার চায়ের কাপের ভাগীদার, আমার লজেন্স চুরি করে খাওয়া পার্টনার।
দুই দিন পর…
ছুটির দিন। আমি আলসে ভঙ্গিতে ঘুমিয়ে আছি। হঠাৎ গালে ঠান্ডা কিছু একটা লাগলো। চোখ মেলে দেখি আমার স্ত্রী আমার গালে বরফের টুকরো চেপে ধরে আছে।
— “ঘুম থেকে উঠো। আমি চা বানিয়েছি, আর আজ আমি তোমার জন্য পরোটা আর ডিম ভাজা করবো।”
আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম—
— “আজ হঠাৎ এত প্রেম কেন?”
সে হাসলো, তারপর মুচকি হেসে বলল—
— “তোমার প্রেমিকা বউ হয়ে গিয়েছে তো, এখন প্রেমটা গোপনে করতে হয়।”
চোখের চাহনি দিয়ে আমি তার হাতে ধরা বরফের টুকরোটা নামিয়ে দিলাম, আর বললাম—
— “তুমি জানো, তুমি প্রতিদিন আমার মধ্যে নতুন এক ভালোবাসার জন্ম দাও।”
পার্ট ৩: প্রথম ঝগড়া, প্রথম মান অভিমান
বিয়ের এক মাস পরই শুরু হলো আমাদের প্রথম সিরিয়াস ঝগড়া। আমি একটা প্রজেক্টে এত ব্যস্ত হয়ে গিয়েছিলাম যে দুদিন ধরে ওর মেসেজের রিপ্লাই দিতে পারিনি।
তৃতীয় দিন এসে দেখি, সে মুখ ফুলিয়ে বসে আছে। গাল দুটো গোল হয়ে গেছে। কপালে একটা টিপ, ঠোঁটে লিপস্টিক—পুরো রেগে থাকা প্রেমিকা ভার্সন!
— “তুমি কি আর আমাকে ভালোবাসো না?”
আমি অবাক!
New Bengali Love story 2025
— “কেন বলো তো এমন?”
সে চোখে জল নিয়ে বলল—
— “আগে তো প্রতিদিন বলতে, এখন বলো না। আগে সকালবেলা গুড মর্নিং দিতে, এখন ঘুম থেকে উঠেই ল্যাপটপ খোলো।”
আমি চুপ করে গেলাম। তারপর কাছে গিয়ে হাত ধরলাম। বললাম—
— “তুমি বউ হয়ে যাওয়ার পর ভালোবাসাটা আর মুখে বলা হয়নি বটে, কিন্তু হৃদয় থেকে কমেনি। বরং আরও গভীর হয়েছে। তুমি চাইলে আমি রোজ সকালে গুড মর্নিং না বলে, চুমু দিয়ে ঘুম ভাঙাবো!”
সে একটুও হাসলো না। বরং বলল—
— “না না! চুমু দিলে আবার মুখের মেকআপ নষ্ট হবে!”
আমরা দুজনেই হেসে উঠলাম। আর সেই দিনই শিখলাম—প্রেমিকের সঙ্গে ঝগড়া হয় রাগে, আর স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয় অভিমানে। আর সেই অভিমান ভাঙানোটা হল প্রেমের নতুন ভাষা।
পার্ট ৪: হানিমুন না, হাউজ মুন!
বিয়ের পর হানিমুন যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমার কাজ আর তার নতুন সংসার সামলানোর কারণে হানিমুন হয়নি। তবে আমরা নিজেদের মতো একটা ‘হাউজ মুন’ উদযাপন করলাম।
সেদিন সন্ধ্যায় সে সেজেগুজে বলল—
— “আজ আমাদের ছোট্ট হানিমুন। আমি রান্না করেছি, তুমি গিটার বাজাও।”
আমি অবাক হয়ে বললাম—
— “তুমি রান্না করলে তো হানিমুন না, হেল-ইমার্জেন্সি হবে।”
সে মুখ ফুলিয়ে বলল—
— “তাই বলছো? ভালো করে খেয়ে দ্যাখো আগে।”
রাতে খাবার খেলাম—তরকারিতে নুন বেশি, ভাজিতে মসলা কম, কিন্তু তার হাতের ছোঁয়ায় যেন এক চিমটি ভালোবাসার স্বাদ।
খাওয়া শেষে আমি বললাম—
— “তুমি একদিন সত্যি খুব ভালো রান্না করতে শিখবে।”
সে হেসে বলল—
— “আর তুমি একদিন আমাকে ছাড়া এক কাপ চাও বানাতে পারবে না!”
আমরা একে অন্যকে দেখে হেসে উঠলাম।
শেষ কথা
তাকে দেখে আমি প্রতিদিন বুঝি—ভালোবাসা বিয়ের পরও থাকে, বরং আরও গভীর হয়। ঝগড়া, অভিমান, হাসি, কান্না, একসাথে রাত জেগে সিনেমা দেখা, ছুটির দিনে একসাথে বাসন মাজা—এসব মিলেই তো গড়ে ওঠে এক প্রেমিক বর আর স্ত্রী প্রেমিকার নতুন করে প্রেমে পড়ার গল্প।
তোমরা বলো, এমন ভালোবাসা কি বারবার সম্ভব?
(এই গল্পটি কপিরাইট BengaliGolpo.com – চন্দন মহাতোর লেখা।)
👉 চাইলে এই গল্পের পার্ট ৩-এ হানিমুন ট্যুর, প্রেগনেন্সি কাহিনি, বাবা-মায়ের প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি যুক্ত করে আরও আবেগী ও মজারভাবে বাড়ানো যায়। তুমি বললেই আমি লিখে দেবো পরের অংশ!
Bengali arranged marriage Golpo
প্রেমিক থেকে বর: পার্ট ৩ – “স্বপ্নের হানিমুন ও নতুন জীবনের শুরু”
বিয়ের তিন মাস কেটে গেছে।
প্রথম দিকে সংসার মানে ছিল বাজার করা, ইলেকট্রিক বিল দেওয়া আর বালতির নিচে সাবান খোঁজা। এখন সংসার মানে হয়ে গেছে—ভোরবেলা তার চোখে ঘুমের ছায়া খুঁজে নেওয়া, রাতে একসাথে হাঁটতে বেরিয়ে আইসক্রিমে কামড় দিয়ে ঠোঁট ঠান্ডা হয়ে যাওয়া।
এই তিন মাসে কত ঝগড়া, কত অভিমান, আর তার থেকেও বেশি আদর জমেছে আমাদের চারপাশে। কিন্তু একটা জিনিস বাকি ছিল—হানিমুন।
তাই একদিন আমি হঠাৎ বললাম—
— “এই উইকেন্ডে ব্যাগ গুছিয়ে রাখো, আমরা হানিমুনে যাচ্ছি।”
সে চোখ গোল করে বলল—
— “সত্যি?! কোথায় যাচ্ছি?”
আমি চোখ টিপে বললাম—
— “সারপ্রাইজ!”
সে তো আর স্থির থাকতে পারে না! পরের তিন দিন ধরে সে প্রতি রাতে একটা নতুন জামা পরে আয়নার সামনে দাঁড়ায় আর আমাকে জিজ্ঞেস করে—
— “এইটা পরলে কেমন লাগবে?”
আমি প্রতিবার একই উত্তর দিই—
— “তুমি যে-কোনো জামায়ই আমার হৃদয়ের তানপুরা বাজিয়ে দাও।”
সে একবার রাগ করে, একবার হাসে। আর আমি? আমি প্রতিদিন নতুন করে প্রেমে পড়ি।
হানিমুন ডায়রি: দার্জিলিংয়ের চায়ের কাপ আর ঠান্ডা প্রেম
গন্তব্য ছিল দার্জিলিং। ট্রেন থেকে নেমেই সে আমায় বলল—
— “এই জায়গায় আমার ছোটবেলার প্রেম ছিল। এক কাপ চায়ের মতো, হালকা আর গরম।”
আমি হেসে বললাম—
— “তোমার বরের প্রেম কফির মতো—গাঢ়, তীব্র, আর ঘুম কেড়ে নেয়।”
আমরা ঘুরলাম টাইগার হিলে, হাতে হাত রেখে মেঘে ভাসলাম। সন্ধ্যায় সে আমার পাশে বসে বলল—
— “বিয়ে একটা নতুন শুরু, কিন্তু তাতে প্রেমটা পুরনো প্রেমিকের মতোই থাকুক, প্লিজ।”
আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম—
Valobasar golpo
— “আমি প্রতিদিন নতুন করে প্রেমিক হতে রাজি, যদি তুমি প্রতিদিন নতুন করে প্রেমে পড়ো।”
হানিমুনের শেষ দিন রাতে আমি হালকা গলায় গান ধরেছিলাম—
“তোমায় হৃদ মাঝারে রাখবো, ছায়া হয়ে তুমি পাশে থাকবে…”
সে আমার কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছিল।
নতুন জীবনের নতুন গল্প – “সে মা হতে চলেছে”
হানিমুনের ঠিক এক মাস পর, আমি অফিস থেকে ফিরেই দেখলাম সে রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে আছে, হাতে একটা রিপোর্ট।
— “এইটা দেখে বলো তো কী বোঝো?” — তার চোখে জল, মুখে হাসি।
আমি দেখলাম—”প্রেগনেন্সি পজিটিভ।”
আমার বুকটা কেমন যেন মোচড় দিয়ে উঠল। আমি কোনো কথা বলিনি। শুধু গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরলাম।
সে বলল—
— “তুমি শুধু আমার প্রেমিক বা বর না, এবার তুমি আমার সন্তানের বাবা!”
আমি চোখ বন্ধ করে বললাম—
— “তাহলে আজ থেকে তুমি শুধু আমার বউ না, আমার সন্তানের মা। আমি দু’জনকে ভালোবাসবো সমান করে, কথা দিলাম।”
প্রেমিক থেকে বর, আর এবার বাবার পথে
Love story in Bangla
এই ক’মাসে কতকিছু বদলে গেছে।
তারা এখন আর শুধু প্রেমিক-প্রেমিকা নয়। তারা এখন একে অপরের ঘর, আশ্রয়, ভবিষ্যতের প্রহর।
প্রতিদিন রাতে সে পেটের ওপর হাত রেখে আমার দিকে তাকিয়ে বলে—
— “তুমি জানো, ও নড়ছে!”
আমি হাত রাখি। অনুভব করি—একটা ছোট্ট প্রাণ, আমাদের ভালোবাসার চিহ্ন, আমাদের জীবনের গল্পের নতুন অধ্যায়।
আর আমি প্রতিদিন মনে মনে বলি—
“তুমি ছিলে আমার প্রেমিকা, হয়েছো আমার স্ত্রী, এখন হচ্ছো আমার সন্তানের মা।
এভাবেই আমি তোমার প্রেমে পড়বো, জীবনের প্রতিটি পর্বে, আবার… আবার…”
শেষ কথা:
জীবনের প্রতিটা ধাপে প্রেমের রং পাল্টায়। কিন্তু যদি মনটা ঠিক থাকে, তাহলে প্রেমিক থেকে বর, আর বর থেকে বাবা—সব ভূমিকাতেই ভালোবাসা থাকে অটুট।
এটাই আমাদের গল্প।
এটাই হয়তো তোমার গল্পও হতে পারে।