---Advertisement---

Bangla new best sad love story: জ্যোৎস্না রাতের প্রতিশ্রুতি

Published On:
Bangla new best sad love story
---Advertisement---

আমার একটা প্রেমিকা ছিল। সে একটু পাগলাটে ছিল, কিন্তু সেই পাগলামিতেই ছিল অদ্ভুত মায়া। গভীর রাতে হঠাৎ ফোন দিয়ে বলত,
“তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। একটু আসবে বাসার সামনে?”

আমি কি আর না করতে পারতাম! পাগলামি প্রশ্রয় দিয়ে ছুটে যেতাম তার কাছে। ওদের বাসার প্রথম গেটের দেয়াল টপকালেই কেঁচি গেট। নিজের বাসা বলেই ও খুব সহজেই দ্বিতীয় চাবিটা নিজের করে নিয়েছিল।

দেয়াল টপকে ভেতরে যেতাম, আর প্রায়ই দেখতাম কেঁচি গেট খুলে সে বাইরে দাঁড়িয়ে। আমাকে দেখেই দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরত। জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলত,
“তুমি জানো, আমি বেশিদিন বাঁচব না। তবুও তুমি কেন আমাকে এত ভালোবাসো? একদিন এই ভালোবাসা তোমাকে কাঁদাবে।”

ওর চোখের জলে আমার শার্ট ভিজে যেত। কিন্তু আমি কখনো রাগ করতাম না, বরং ওর পাগলামি আমার ভালো লাগত। জ্যোৎস্না রাতে ওর আউলা চুলগুলো খুব সুন্দর লাগত। চুল এলোমেলো করে কোনোমতে পেছনে বাঁধা, আর কয়েকটা চুল গালের পাশে ঝুলে থাকত। ওকে এমন দেখার জন্যই বোধহয় আমি বারবার ছুটে যেতাম।

Bengali sad love story

সেদিনও রাতটা ছিল জ্যোৎস্নায় ভরা। কিন্তু বাসায় কেউ জেগে থাকায় ও নিচে আসতে পারেনি। বারান্দায় দাঁড়িয়ে কাঁদছিল। আমি দূর থেকে ওর অশ্রুভেজা মুখ দেখে চুপচাপ চলে এলাম। সেদিন ও আমাকে বলেছিল,
“আমি যদি আর ফিরে না আসি, রাগ করো না। আমাকে ছাড়া ভালো থাকতে শিখে নিও।”

দুই দিন পর ওকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলো। সাহস করে একবার দেখতে গিয়েছিলাম। ও তখন ঘুমিয়ে ছিল। চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে গেছে, চেহারার উজ্জ্বলতা ম্লান হয়ে গেছে। আমি এক মুহূর্তের জন্য তাকিয়ে থাকতে পারছিলাম না। মায়ায় ভরে গিয়েছিল মন।

সোমবার দিন ও মারা গেল। জানাজার পর বাসায় ফিরছিলাম, কিন্তু বুকের ভেতর কী যেন অদ্ভুত ব্যথা হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, হাঁটা অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে। প্রিয় মুখটা শেষবারের মতো দেখতে পারলাম না। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে বারবার ভাবছিলাম, কেউ কি কোনোদিন জানবে আমাদের সম্পর্কের গভীরতা? জানবে না।

সন্ধ্যার পর ছাদে গিয়ে শুয়ে চাঁদের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। হঠাৎ মনে হলো, কেউ আর কোনোদিন ফোন দিয়ে বলবে না,
“তুমি একটু আসবে? তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছা করছে।”

কেউ আর কেঁচি গেট খুলে দাঁড়িয়ে থাকবে না। কেউ আর বুকে মাথা রেখে কাঁদবে না।

আজও আকাশে বিশাল চাঁদ। চার বছর হয়ে গেল। ফোনে অনেক কল আসে, কিন্তু সেই কথাগুলো কেউ বলে না। আমি ছাদে শুয়ে চাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকি। মনের ভেতর শুধু একটাই প্রশ্ন:
তুমি তো আর ফিরবে না, তবুও কেন তোমাকে এত ভালোবাসি? কেন তোমায় ভুলতে পারি না?

পরের জন্মে যখন দেখা হবে, প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর কিন্তু তোমাকে দিতে হবে। মনে রেখো।

চার বছর কেটে গেছে। সময় থেমে থাকেনি, কিন্তু আমার মন যেন আটকে আছে সেই জ্যোৎস্না রাতগুলোতে। তোমার স্মৃতি আজও আমার দিনগুলোকে ঘিরে রাখে। একবারও ভুলতে পারিনি তোমাকে।

সেদিন রাতে, ছাদে শুয়ে যখন তোমাকে মনে করছিলাম, হঠাৎ মনে হলো, যেন কেউ আমার নাম ধরে ডাকছে। চারদিক একেবারে নিস্তব্ধ, শুধু চাঁদের আলোয় ঝলমল করছে পৃথিবী। কিন্তু আমার মনের ভেতর অস্থিরতা বাড়ছে।

ঠিক তখনই ফোনটা বেজে উঠল। আমি ঘড়ির দিকে তাকালাম—রাত তিনটা। এত রাতে ফোন? অবাক হয়ে কলটা ধরলাম। ওপাশ থেকে কেউ কোনো কথা বলল না, শুধু এক অদ্ভুত শীতল নীরবতা।
“কে?” বললাম আমি। কিন্তু কোনো উত্তর নেই।

New Bangla sad love story

কল কেটে গেল। আমি ঘরের ভেতর ঢুকে বসে রইলাম। হঠাৎ মনে পড়ল, তোমার ঠিক একই সময় ফোন দেওয়ার অভ্যাস ছিল। কিন্তু এটা তো অসম্ভব—তুমি তো আর নেই।

পরদিন সকালে অফিসের কাজে বের হলাম। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে মনে হলো কেউ যেন পিছু নিচ্ছে। ফিরে তাকালাম, কিন্তু কেউ নেই। মনে হয়, নিজের মনের ভুল।

বিকেলে একটা পুরনো ক্যাফেতে ঢুকলাম, যেখানে আমরা একসঙ্গে সময় কাটাতাম। চেয়ারে বসে তোমার মুখটা যেন স্পষ্ট দেখতে পেলাম। তোমার সেই মিষ্টি হাসি, তোমার ছোট্ট আউলা চুল। আমার চোখে জল চলে এল। এককাপ কফি নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে রইলাম।

সেদিন রাতে আবার ফোন এলো। এবারও নীরবতা। কিন্তু এবার আমি বুঝতে পারলাম, এটা তুমি হতে পার। আমার মন বলল, তুমি কোথাও আছো, আমার খুব কাছেই।

এরপর থেকে প্রায় প্রতি রাতেই ফোন আসে। কোনো কথা হয় না, শুধু নীরবতা। আর প্রতি বারই মনে হয়, তুমি আমাকে মনে করছো।

একদিন, ঠিক ভোরবেলায়, ঘুম থেকে উঠে দেখি দরজার নিচ দিয়ে একটা চিঠি ঢোকানো। হাতে তুলে নিয়ে দেখলাম, চিঠিতে শুধু একটা লাইন লেখা:
“আমি এখনো তোমার পাশে আছি। আরেকটা জ্যোৎস্না রাতে দেখা হবে।”

চিঠিটা পড়ে আমার শিরদাঁড়া দিয়ে শীতল স্রোত বয়ে গেল। এটা কি সত্যি তুমি? না কি আমার মনের ভুল?

পরের কয়েকদিন আমি অস্থির হয়ে ছিলাম। চিঠির অর্থ খুঁজে পাচ্ছিলাম না। এরই মাঝে একটা আশ্চর্য ঘটনা ঘটল।

সেই সোমবার দিন, চার বছর আগের মতো, আকাশে আবার বড় একটা চাঁদ। আমার ফোনে আবার একটা কল এলো। এবার আমি ফোন ধরে বললাম,
“তুমি কি সত্যিই আছো? তুমি কি আমায় দেখতে চাও?”

Bangla new best sad love story
Bangla new best sad love story

অপাশ থেকে ধীরে ধীরে একটা মেয়ের গলা শোনা গেল। সেই চেনা কণ্ঠস্বর।
“চাঁদের আলোয় ছাদে এসো।”

আমি দেরি না করে ছাদে উঠে গেলাম। আকাশটা ছিল আগের মতোই, চাঁদের আলোয় ঝলমল। আর ঠিক তখনই, এক মুহূর্তের জন্য, তোমাকে দেখতে পেলাম। তুমি দাঁড়িয়ে ছিলে, সেই পুরনো হাসি নিয়ে।

Bengali sad love story 2025

তুমি বললে,
“তোমাকে কোনোদিন ছেড়ে যাইনি। তোমার ভালোবাসাই আমাকে এখানে বেঁধে রেখেছে। তোমার প্রতিটি চোখের জল আমি অনুভব করি। কিন্তু আর কেঁদো না। তুমি ভালো থাকলে, আমিও ভালো থাকব।”

তোমার কথাগুলো শুনে আমি জিজ্ঞেস করলাম,
“তুমি কি ফিরে আসবে?”

তুমি মাথা নেড়ে হাসলে।
“না, কিন্তু প্রতিটা জ্যোৎস্না রাতে আমি তোমার খুব কাছেই থাকব।”

তারপর তুমি ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেলে। আমি তোমার দিকে হাত বাড়ালাম, কিন্তু ছুঁতে পারলাম না।

সেই রাত থেকে আমি জানি, তুমি আমার সঙ্গেই আছো। তোমার স্মৃতি শুধু নয়, তোমার আত্মাও আমাকে ঘিরে আছে। এখন আর জ্যোৎস্না রাতে আমি একা নই। আমি জানি, তুমি আসবে।

পরের জন্মে দেখা হলে এই রাতগুলোর গল্প তোমাকে শোনাব। তখন কিন্তু আমার প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর তোমাকে দিতে হবে। মনে রেখো।

Payel Mahato

I am Payel Mahato, a passionate storyteller who loves weaving emotions into words and crafting tales that touch hearts. As a Bengali love story writer, I specialize in creating narratives filled with romance, drama, and human connections that resonate deeply with readers.

---Advertisement---

Related Post

Leave a Comment