---Advertisement---

Bangla romantic golpo 2025: একটা বোকা ছেলের ভালোবাসা

Published On:
Bengali Marriage Romance Love Story
---Advertisement---

কলেজ লাইফে কিছু সম্পর্ক এমন হয়, যা বন্ধুত্ব আর ভালোবাসার মাঝখানে একটা সরু দাগ টেনে দেয়। রিফাত আর নিধির সম্পর্কটা ছিল ঠিক তেমনই—ক্লাস টেস্ট, আড্ডা, ক্যান্টিনের চা আর কিছু অপূর্ণ গল্পের ভাঁজে জড়িয়ে থাকা এক সরল অথচ জটিল সম্পর্ক।

— “হ্যালো রিফাত।”
— “হ্যাঁ বলো।”
— “কই তুই?”
— “বাসায় আছি।”
— “গল্প লিখছিস?”
— “গল্প? কোন গল্প?”
— “তুই ভুলে গেছিস! কালকেই বলেছিলাম, একটা ভালোবাসার গল্প লিখিস।”
— “ওহ, না এখনো লিখিনি।”
— “কাল তো তোকে ফেসবুকেও পাইনি। কী করলি তাহলে?”
— “এসাইনমেন্ট জমা দিচ্ছিলাম…”

নিধি রাগে ঠাস করে ফোন রেখে দেয়। এতদিন ধরে আবদার করে আসছিল একটা ভালোবাসার গল্পের জন্য। অথচ রিফাত, সেই ছেলেটা যে শুধু পথশিশুর গল্প, পোষ্টম্যানের গল্প লিখে, সে ভালোবাসা বোঝে কই?

রিফাত জানতো আজ ক্যাম্পাসে গেলে নিধির মুখোমুখি হতে হবে। সেই চিরচেনা রাগ, অভিমান, অভিযোগ—সব কিছু নিয়ে। কিন্তু আজ কেন জানি একটু বেশিই ভয় করছিল তার। ক্লাসে বসে সে খাতাটা খুললো, কলম হাতে নিলো, গল্প লিখতে চাইল। কিন্তু না… কলমটা ভারী মনে হচ্ছিল, কাগজে শব্দ নামছিল না। শুধু বারবার নিধির অভিমানী মুখটা ভেসে উঠছিল মনে।

এমন সময় ক্লাসে এল নিশু।

— “রিফাত! স্যার তোমাকে ডাকছে।”
— “আসছি… তুমি আগে যাও।”

স্যারের রুমে যাওয়ার আগে একটা ফোন দিতে চাইল নিধিকে। কিন্তু ফোনটা সুইচড অফ। হালকা মন খারাপ নিয়ে স্যারের কাছে গেল। কাজ শেষ করে বের হতেই দেখে… সামনে দাঁড়িয়ে নিধি।

— “একি, কবে এলি?”
— “ঘণ্টাখানেক হলো।”
— “ফোনে চার্জ ছিল না রে, তাই দিতে পারিনি…”
নিধি ধীরে বলল, “নিশু তো তোর সাথে ছিল।”

Bangla Best love story 2025

রিফাত কিছু বলতে গেল, কিন্তু নিধি বলেনি আর কিছু। মুখ ঘুরিয়ে হেঁটে চলে গেল।

রিফাত আবারও চেষ্টা করলো গল্প লিখতে। কিন্তু কিছুতেই পারছিল না। নিধির সেই চোখের চাহনি, সেই অভিমান—সব কিছুই মাথার মধ্যে ঘুরছিল। নিজেই অবাক হচ্ছিল, এত ভাবছে কেন সে নিধিকে নিয়ে?

এক সময় কাগজ-কলম ফেলে বেরিয়ে এলো। হঠাৎ ক্যাম্পাসে আবার দেখতে পেল নিধিকে। কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো—

— “তুই এখানে? খুঁজছিলাম তোকে।”
— “আজ তো খুব ব্যস্ত দেখছি! থাক, গল্প লিখতে হবেনা আর।”
— “লিখবো… আজকেই লিখবো।”
— “লিখা হলে বলিস। আমি যাচ্ছি।”
— “কোথায় যাচ্ছিস? ক্লাস তো তোর ১২টায়!”
— “ফেসবুকিং করবো। ‘নিরব শিশির’ আইডিটার সাথে প্রেম করবো!”

বলেই চলে গেল নিধি।

রিফাত বাসায় ফিরে ফেসবুকে ঢুকলো। খুঁজতে লাগলো ‘নিরব শিশির’ নামের সেই আইডিটা। অবাক হয়ে দেখলো—নিধির ফ্রেন্ডলিস্টে এমন কেউ নেই! তাহলে? এতদিন যে নিরবের লেখার প্রশংসা করতো, তার গল্প, তার স্টাইল…?

New Romantic love Story 2025

একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো সে। নিধিকে ফোন করলো।

— “এইমাত্র ফোন অন করলি?”
— “না মানে… গল্প লিখছিলাম।”
— “ওহ! নিরবের মতো হল?”
— “তোর নিরবের মত মেধা কই আমার?”
— “গল্প লিখতে মেধা না, মন দরকার।”
— “তাহলে ঠিক আছে, গল্প লিখেছি।”
— “সত্যি?”
— “হ্যাঁ, আর সাথে একটা চিঠিও আছে, কাল পড়ে শোনাবো।”

পরদিন সকাল থেকেই রিফাতের মন বিক্ষিপ্ত। কবে আসবে নিধি? কখন সে গল্পটা পড়বে?

অবশেষে এল নিধি।

— “কই তোমার গল্পটা?”
— “এই নাও, আগে চিঠিটা পড়ে দেখো।”
— “চিঠি?”
— “হ্যাঁ, তুই পড়, আমি একটু আসছি।”

নিধি একা বসে কাগজ খুলে চিঠি পড়তে শুরু করলো—

**“জানি অবাক হবে চিঠিটা পড়ে।
তোকে ‘তুই’ করে বলছিনা আজ, জানিস কেন?
কারণ তোকে নিয়ে আজকের অনুভূতিটা যেন একটু আলাদা।
স্কুল পিকনিকে তুই আমাকে ফেলে চলে গিয়েছিলি…
সেদিন ফুটবল খেলিনি আমি। মনে হচ্ছিল,
গোল খেলেও কেউ বলবে না ‘এই হালি হালি গোল খায়!’

কলেজে যখন সৌমিক তোকে বললো ‘পরীর মত লাগছে’,
খুন করে ফেলতে মন চেয়েছিল ওকে।
কিন্তু বুঝেছিলাম, ভালোবাসা মানে শুধু প্রিয়তা নয়,
একটু ঈর্ষাও, একটু অভিমানও।”

“আজ যখন গল্প লিখতে বসি, বারবার তোর মুখটা মনে পড়ে।
এই চিঠিটা লেখা হয়েছে শুধু তোকে বলার জন্য—
আমি তোর জন্যই গল্প লিখতে চাই।
কারণ তুই আমার গল্পের নায়িকা।
তুই বুঝিস কি, আমি তোকে শুধু বন্ধু হিসেবে নয়,
বহুদিন ধরে ভালোবেসে ফেলেছি নিধি…”

নিধির চোখে তখন জল। হাতে রিফাতের দেওয়া সেই চিঠিটা, যেটা পড়ে তার হৃদয়ের ভেতরটা কেমন করে যেন মোচড় দিয়ে উঠছে। এতদিনের বন্ধুত্ব, যত্ন, অভিমান – সব কিছু যেন আজ নতুন করে অর্থ পাচ্ছে।

চিঠিটা পড়ার পর নিধির মনে হচ্ছিল, সে যেন একসাথে অতীত, বর্তমান আর ভবিষ্যতের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে।

সে ধীরে ধীরে রুম থেকে বের হলো। ক্যাম্পাসের করিডোর ধরে হাঁটতে হাঁটতে নিধির চোখ শুধু খুঁজছে রিফাতকে। মনে মনে সে ভাবছে—

“এতদিন বুঝিনি, ও এতটা গভীরভাবে ভালোবাসে আমাকে? আমি তাহলে কেন ওকে বোঝার চেষ্টা করিনি? কেন শুধু নিজের ইগো নিয়ে পড়ে ছিলাম?”

হঠাৎ করেই ডিপার্টমেন্টের সামনের বেঞ্চে রিফাতকে দেখা গেল। মাথা নিচু করে বসে আছে। নিধিকে দেখেও উঠলো না। ও জানেই না, চিঠিটা নিধিকে কতটা নাড়া দিয়েছে।

নিধি ধীরে ধীরে গিয়ে দাঁড়ালো ওর সামনে।
চুপচাপ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বললো,
– “তুই যদি গল্পটা শুরু করিস, তাহলে আমিও একটা চিঠি লিখবো।”

রিফাত ধাক্কা খেলো যেন। মাথা তুলে তাকিয়ে বললো,
– “তুই… পড়ে ফেলেছিস চিঠিটা?”
– “হ্যাঁ, আর আমি জানি না, আমি কাঁদবো, না তোকে জড়িয়ে ধরবো।”

রিফাত একটু হেসে বললো,
– “তুই তো বরাবরই এমন, এক মুহূর্তে রেগে যাবি, আরেক মুহূর্তে ভালোবাসবি।”
– “তুই ভালোবাসতে শিখলি কখন রে?”

রিফাত একটু ইতস্তত করে বললো,
– “যেদিন তুই বললি ‘নিরব শিশির’-এর মতো কেউ ভালো লিখে, সেদিন বুঝলাম, তোকে হারানোর ভয়টা কেমন লাগে।”
– “উফ! নিরব শিশির! ওটাই ছিল আমার নাটক। তোর জ্বালাতন করার জন্য বানিয়েছিলাম। ও নামে কেউ ছিলই না আমার ফ্রেন্ডলিস্টে।”

রিফাত তখন হেসে ফেললো।
– “মানে আমি এই কয়দিন এক ফেক ছেলেকে নিয়েই হিংসে করলাম?”
– “হ্যাঁ! আর আমি মজা নিচ্ছিলাম দেখে তুই কেমন করে কষ্ট পাচ্ছিস!”

এই কথা শুনে দুজনেই হেসে উঠলো, এক অদ্ভুত হালকা হাওয়া যেন বইলো তাদের চারপাশে।

নিধি তখন বললো,
– “চল, ক্যান্টিনে যাই। আজ তোর treat চাই।”
– “Treat কেন?”
– “তুই আমার প্রথম গল্পের নায়ক হবি, এই জন্য।”

চায়ের কাপ হাতে নিধি বললো,
– “তুই জানিস? গল্পের শেষে নায়িকার চোখে জল থাকলেও, পাঠকের মুখে হাসি চাই।”
– “তাহলে আমার গল্পে যদি নায়িকা তুই থাকিস, পাঠক হাসবে তো?”
– “তুই যদি লেখ, তাহলে হাসবে, কাঁদবেও… ভালোবাসবেও।”

রিফাত হালকা হেসে বললো,
– “তাহলে শুরু করি আমার গল্পের নতুন অধ্যায়—”
– “তোর গল্প নয়, আমাদের গল্প।”

এই বলে নিধি ধীরে ধীরে রিফাতের হাত ধরলো। রিফাত প্রথমে একটু থমকে গেলেও, তারপর মুঠোটা শক্ত করে ধরলো।

পরদিন সকালে রিফাত ক্লাসে এসে দেখে, তার টেবিলে একটা খাম পড়ে আছে। খুলে দেখে নিধির হাতের লেখা—

**”প্রিয় রিফাত,
তোর চিঠিটা আমার হৃদয়ের সব গোপন দরজা খুলে দিয়েছে। আমি জানতাম না, তুই এতখানি ভালোবাসিস। জানিস, অনেকদিন ধরে আমিও তোকে অন্য চোখে দেখতে শুরু করেছিলাম, কিন্তু কখনো সাহস হয়নি বলা।

তুই যখন গল্প লিখে আমাকে দিলি, সেটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় উপহার।

তোর সঙ্গে কাটানো স্কুল, কলেজ, ভার্সিটির প্রতিটা মুহূর্ত আজ আমার চোখের সামনে সিনেমার মতো ভেসে উঠছে।
তুই পোষ্টম্যানের গল্প লিখিস, পথশিশুর গল্প লিখিস, জানিস? আমি বরাবরই চাইতাম, তোর একটা গল্পে আমি থাকি—তোর গল্পের ভালোবাসা হয়ে।

আর আজ আমি সেই গল্পের পাতায় এসেছি।

তুই বলেছিলি, তোর গল্পে তুই ভালোবাসার অঙ্কে কাঁচা।
আজ থেকে চল, আমি শেখাই তোকে সেই অঙ্ক কষতে।

ভালোবাসি,
তোর
নিধি।”**

রিফাত চিঠিটা পড়ার পর চোখ বন্ধ করে হাসলো।
আজ তার কলম আর ভারী লাগছে না।
গল্পের শুরুও হয়েছে, এবং সে জানে—এটা আর থেমে যাবে না।

“ভালোবাসা কি শুধু গল্পে থাকে? নাকি জীবনের প্রতিটা মুহূর্তেই তার একেকটা অধ্যায় খোলা থাকে?”

এই প্রশ্নটাই ঘুরপাক খাচ্ছিল রিফাত আর নিধির মাথায়, যেদিন তারা জীবনের প্রথম হাতে-ধরাধরি করে ক্যাম্পাসের ঘাসে বসেছিল।
দিনটা ছিল শুক্রবার। ক্লাস নেই, তবুও দুজনেই এসেছিল — শুধু একে অপরকে সময় দেবে বলে।

স্থান: ক্যাম্পাসের পেছনের বটগাছটা
ছায়ায় বসে নিধি বই খুলে বসেছে, আর রিফাত তার গল্পের খাতা।

– “তুই আবার গল্প লিখছিস?”
– “হ্যাঁ। এই গল্পটা তোর জন্যই। শিরোনাম ‘আমার পাতার নীচে বসা মেয়ে’।”

নিধি হেসে বলে,
– “পত্রলেখা লাগবে নামটা?”
– “না, তুই তুই-ই থাক, নিধি। তোর নামটাই কবিতা।”

নিধি একটু লজ্জা পেয়ে বলে,
– “তুই আগে এমন রোমান্টিক ছিলি না…”
– “তুই তো আগেই বলতিস, আমি অনুভব করতে জানি না। এখন শিখছি। তোর প্রেমে পড়েই।”

রিফাত তার খাতায় লিখে চলেছে। নিধি মাঝে মাঝে তাকিয়ে দেখছে তার লেখা।

“সে মেয়েটা সেদিন বলেছিল, ‘চিঠির উত্তর আমি গল্প দিয়ে দেবো’,
আর আমি সেই গল্পের প্রথম লাইনে লিখেছিলাম –
‘আমি এক বোকা ছেলে, যে ভালোবাসার অঙ্ক করতে জানে না।’
কিন্তু আজ আমি জানি, তার হাসির প্রতিটি রেখার মানে কী।
তার রাগের পেছনের ভালোবাসা, আর তার চুপ থাকা মানে কত গভীর!”

নিধি পড়ে ফেলে হঠাৎ বলে উঠলো,
– “তোর লেখা পড়ে মনে হয়, আমি তোকে ভালোবেসে ঠিকই করেছি!”

রিফাত লাজুক হেসে বললো,
– “এবার তুই লিখ।”

– “আমি? কী লিখবো?”
– “আমার জন্য একটা গল্প লিখ। অথবা একটা ছোট্ট কবিতা।”

নিধি একটু ভেবে বললো,
– “ঠিক আছে, লিখছি।”
সে পকেট থেকে একটা পেজ বের করলো, কলম হাতে নিলো আর লিখলো—

Love Story Bengali Golpo

“তোর ভালোবাসা,
একটা পুরোনো চিঠির মতো,
যেটা আমি হারিয়ে ফেলেছিলাম
নিজের ইগোর নিচে।
আজ সেই চিঠিটা আবার পেয়েছি,
আর আমি চাই—
তুই আমার প্রতিটা পাতায় থাকিস,
একটা লাল গোলাপের মতো।”

পরের দিন দুজনেই মিলে একটা প্ল্যান করলো—
“আমাদের গল্পটা ছবিতে তুলে রাখবো।”

তারা একসাথে ছবি তুলতে গেলো। বটগাছ, ক্যান্টিন, লাইব্রেরি, ক্লাসরুম – এমনকি সেই বেঞ্চটাও যেখানে প্রথম ঝগড়াটা হয়েছিল।

রিফাত হঠাৎ বললো,
– “এই ছবিগুলো দিয়ে একটা ব্লগ বানাবো?”
– “হ্যাঁ! ব্লগের নাম রাখবো— একটা বোকা ছেলের ভালোবাসা।”

আর তারা মিলে খুললো এক নতুন ব্লগ – যেখানে প্রতিটা ছবি, প্রতিটা লেখা, ছিল তাদের গল্পের খণ্ডচিত্র।
নিধি লিখতো অনুভব দিয়ে,
আর রিফাত লিখতো শব্দ দিয়ে।

একদিন নিধি বললো,
– “ভালোবাসা কি সবসময় রঙিন থাকে?”
রিফাত বললো,
– “না, কখনো ধূসরও হয়। তবে তুই থাকলে, আমার প্রতিটা ধূসর দিনেও একটা রংধনু থাকে।”

নিধি হেসে জড়িয়ে ধরলো রিফাতকে।
আর রিফাত মনে মনে ঠিক করে ফেললো—
“এই মেয়েটাকে আমি শুধু গল্পে নয়, জীবনের প্রতিটা পাতায় রাখতে চাই।”

Payel Mahato

I am Payel Mahato, a passionate storyteller who loves weaving emotions into words and crafting tales that touch hearts. As a Bengali love story writer, I specialize in creating narratives filled with romance, drama, and human connections that resonate deeply with readers.

---Advertisement---

Related Post

Leave a Comment