---Advertisement---

Bangla valobasar golpo 2025: অরুণিমার শেষ ঠিকানা

Published On:
Bangla valobasar golpo
---Advertisement---

এই ছেলে…….একটু শোনো !
কিছুটা অবাক …….!! হলাম রাত ২টা বাজে এমন সময়ে মেয়ের ডাক আসা করি নি।

ঘুরে তাকাতেই দেখলাম হলুদ কামিজ আর সবুজ সালোয়ার পরে আছে , তার কাছে এগিয়ে যেতে কিছুটা ভয় পাওয়া স্বাভাবিক একে রাত তার উপর কমলাপুর রেলস্টেশনের আশে পাশে আর কাউকে দেখা যাচ্ছেনা ।

তবে যে সব ধারণা মনে আসছিল তা সত্যি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ । তার পোশাক আশাকে আর যাই হোক সে রকম কিছু মনে হবেনা।

তো এগিয়ে গেলাম-

“জী আমাকে বলছেন?” সে একটা এদিকক ওদিক তাকিয়ে ঝামটি দিয়ে বলল –

–আর কেউ কি আছে এই প্লাটফর্মে ? আমি তো কাউকে দেখছি না, আপনি দেখেছেন কি?

আজব মেয়ে তো !! একে ডেকেছে হুকুম করে, আবার ঝাড়ি মেরে কথা ! কিছুটা অবাক

হলেও ধৈর্য্য ধরে বললাম –

জী বলুন-কি সাহায্য করতে পারি?

–“হুম!!! আমাকে এই ঠিকানায়ে একটু পৌঁছে দিতে হবে? আমি ঢাকা ঠিক মত চিনিনা এর

আগে একা একা ঢাকা আসিনি।

[Bengali Romantic love story ]

মনে মনে ভাবলাম ব্যস এইবার একটু শোধ নেওয়ার পালা,

— ওহ! তা আপনি বুঝলেন কি করে আমি সাহায্যকারী, খারাপ কেউ না? আমি তো আপনার ক্ষতিও করতে পারি তাইনা ???

— হুম আসুন একবার হিল পিটে পিঠের চামড়া ছাড়াতে যদি না পারি তখন বলবেন ”

অবাকের উপর অবাক !! যাকে বোধহয় বলে হতবাক । হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছি, বলে কি এই মেয়ে !! তার কথা শুনে হেসে ফেললাম,

.বললাম –

হুম, মোহাম্মদপুর! কিন্তু এখন তো কোন বাস পাবেননা, রাত ২টা পেরিয়ে গেছে অপেক্ষা করুন

ওয়েটিং রুমে কাল সকালে বাসে উঠিয়ে দেবো ,চলে যাবেন।

সে জেদ ধরে বসল, নাহ তার এখনি যেতে হবে যে করেই হোক!

নিজের কপালকে নিজে দুষলাম

‘আচ্ছা মুশকিলে পড়া গেলো তো এতো রাতে কি করবো এখন।

তও কিছু পাওয়ার আসা করে তাকে নিয়ে বাইরে বেরুলাম, কিন্তু চারিদিক ফাঁকা কিচ্ছু

নেই কোথাও অবশেষে একটা সিএনজি পেলেও সে মোহাম্মদপুর যাবেনা।

উপায় কিছু না পেয়ে ১ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে ভদ্র মেয়ের মত এসে বসে পড়লো। আমি বসে ফেইসবুকে গুঁতোগুঁতি করছি দেখি সে ঢুলছে,

জিজ্ঞাসা করলাম –

–ঘুম পাচ্ছে ?? পেলে ঘুমিয়ে পড়তে বললাম।

কিন্তু সে নারাজ সে ঘুমাবেনা, যাই হোক তো তাকে বললাম,

–চা খাবেন? খেলে নিয়ে আসি, একটু বসেন।

এইবার সে রাজি হলো। দু’কাপ চা এনে দেখি সে তার কাঁধের ব্যাগটার উপর মাথা রেখে কাত হয়ে ঘুমিয়ে গেছে।

ওয়েটিং রুমের মৃদু আলো আর বাইরের প্লাটফর্মে জ্বলা টিউব লাইটগুলোর আবছা আলো

এসে তার মুখের উপর পড়ছে, হালকা শ্যামলা রঙ, টানা টানাচোখ, দেখতে কিন্তু মন্দ না। চুলগুলো তার মুখের উপর ছড়িয়ে আছে, আর নিশ্বাসের সাথে একটু একটু করে নড়ছে।

সেপ্টেম্বর মাস। শেষ রাতের দিকে শীতের প্রকোপ কিছুটা বোঝা যায়। একবার ভাবলাম ডেকে তুলে চায়ের কাপটা ধরিয়ে দিই। কিন্তু কাছে যেতেই ঘুমের ঘোরে সে বিড় বিড় করে বলা শুরু করলো

শুভ তোমাকে আমি খুব ভালোবাসি, প্লিজ

আমাকে এভাবে কষ্ট দিওনা! আমি সইতে পারবোনা। প্লিজ, শুভ !”

.

আমাকে দেয়া ঠিকানার কাগজটা দেখলাম, শুভদীপ

হোসাইন ,শুভ , বাড়ী নং ৪৬/৩, ২ নং কাজী নজরুল ইসলাম রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।

বুঝলাম ঘর ছাড়া পাখি নতুন নীড়ের আশায় উড়াল দিয়েছে, যদিও জানেনা সে পাখি কি তার গন্তব্য কি হবে তার মঞ্জিল?

হটাৎ চোখ পড়লো তার হাতের উপর, সেপ্টেম্বরের হালকা হিমেল বাতাসের দাপটে তার রোমগুলো দাঁড়িয়ে গেছে। বুঝলাম শীতে কষ্ট পাচ্ছে, তাই ব্যাগ থেকে আমার চাদরটা বের করে তার গায়ের

উপর দিয়ে দিলাম। আরও একবার তার মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হলো মেয়েটা সুন্দর আর মায়াবী দেখতে , একদম এমন মেয়েই আমি আমার নিজের জন্য খুঁজেছিলাম, তবে ভাগ্য অন্যভাবেই তাকে আমার সামনে এনে ধরা দিলো।

সেখান থেকে উঠে এলাম, আর কিছুক্ষণ থাকলে হয়তো তার প্রেমে পড়ে যেতাম।

সকালে ঘুম থেকে উঠেই সে অবাক হলো আমার চাদর তার গায়ে দেখে, জিজ্ঞাসা করলো আমিইদিয়েছি কিনা?

বললাম,

.–আশে পাশে আমি ছাড়া তো কেউ ছিলোনা, তাই মনে হয় আমিই দিয়েছি।

সে ছোট্টকরে একটা ধন্যবাদ দিলো।

তারপর বললাম –

চলুন তবে যাওয়া যাক।” সকালের নাস্তা স্টেশন থেকে বেরিয়ে সামনের এক হোটেলে সেরে সিএনজি নিলাম সেই ঠিকানায়।

জ্যাম আর লাগেজের মাঝে সিএনজিতে বসে থাকা একটু কষ্টকর যাই হোক বেলা ১১টার দিকে সেই বাড়ী খুঁজে পেয়ে তাকে যেতে বললাম

কেন জানিনা আমাকে ফিরে আসতে ইচ্ছা করছিল না কিন্তু আমাকে যেতেই হবে, সবার জীবনে সব স্বপ্ন পূরণ হয়না।

রিকসা ঠিক করতে যেইনা হাত বাড়িয়েছি সেই … কে যেন পিছন থেকে আমার কাঁধে হাত রাখলো।আমি পিছে ফিরে তাকাতেই দেখি সে তার চোখ দুটোতে অশ্রু!

জিজ্ঞাসা করলাম,

কি ব্যাপার কি হলো?”

সে উত্তর দিলো,

এ বাড়িতে শুভ নামে কেউ থাকেনা।

আমাকে অভিযোগ করলো আমি নাকি তাকে ভুল ঠিকানায় এনেছি। মহা ঝামেলারে তো বাবা! তার সাথে ফিরে গেলাম, গিয়ে বাড়িওয়ালাকে প্রশ্ন করলাম

.[Bengali new Romantic love story ]

— ভাই এটাই তো বাসা নং ৪৬/৩, ২নং কাজী নজরুল ইসলাম রোড, মোহাম্মদপুর” ,

সে বলল,

— জী ভাই এটাই।”…

–তা এখানে শুভ নামে কেউ একজন এই ঠিকানা দিয়েছেন এই মেয়েটাকে, সে অনেক দূরথেকে আসছে। আপনি কি কোন সাহায্য করতে পারবেন?”

.সে তো মহা খ্যাপা!

আমাকে ঝাড়ি দিয়ে বের করে দিলেন, বললেন, এইসব নিয়ে যেন আর তাকে বিরক্ত

না করি। উফ!! বিশাল ঝামেলায় পড়লাম, এদিকে আমাকে ২টার ভিতরে অফিসে যেতে হবে,

ফিরে এসে তাকে বললাম

— আপনার কাছে ফোন নং আছে ? থাকলে ফোন করুন,

সে ভাঙ্গা গলায় বললো নম্বর আছে কিন্তু ফোন নেই , আমি আমার টা দিলাম।

সে ফোন করলো, কিছুক্ষণ পর হতাশ মুখে ফিরে এসে বলল –

— ফোন বন্ধ।

আর তার চোখ দিয়ে পানি পড়ছেই অনবরত।” কি করবো এদিকে ১২টা বেজে গেছ

তাকে বললাম –

— আসুন আমার সাথে। আপনাকে বাসে উঠিয়ে দিয়ে আসি আপনি যেখান থেকে এসেছেন সেখানেই ফিরে যান।” তখন সে উচ্চস্বরে কেঁদে উঠলো আর

বলল –‘তার পক্ষে বাড়ি ফিরে যাওয়া সম্ভব না। সে তার

বাড়ী থেকে পালিয়ে এসেছে শুধুমাত্র তার ভালোবাসার জন্য। এখন বাড়ি ফিরে গেলে তার বাবা-মা তাকে বের করে দিবে আর তার ভাইরা তাকে মেরে ফেলবে। কারণ সে এক হিন্দু পরিবারের মেয়ে আর যে ছেলেটাকে ভালোবেসে সে ইসলাম গ্রহণ করছে আর এটা জানার পরই তার পরিবার তাকে ত্যাজ্য করেছে। তার এখন যাওয়ার কোন যায়গা নেই।’

.[Bengali best Romantic love story ]

কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে শেষ করে আমাকে বলল –

–আমাকে একদিনের থাকার ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন? আমি কাল চলে যাবো আমার এক বন্ধু আছে তার কাছে। তার কথা শুনে আমি কিছুটা … হতবাক বললেও বোঝানো যাবেনা, আমি পুরো পুরি Shocked !!

তার কাছে এক মিনিট সময় চেয়ে নিয়ে ফোন করলাম শ্রেয়াকে।

শ্রেয়া আমার পরিচিত… কলেজের ছোট বোন। ওর বাড়িও মোহাম্মদপুরে। ওকে আসতে বলে অপেক্ষা করতে লাগলাম সংসদ ভবনের সামনে। লাগেজ নিয়ে সংসদের সামনে বসে আছি, সবাই আড়চোখে দেখছে। কেমন জানি অস্বস্তি লাগছে। তো আধঘণ্টার ভিতর

শ্রেয়া এলে ওকে সববুঝিয়ে বললাম, একদিন যেভাবে হোক ম্যানেজ করে নিতে। সেও কোন রকম রাজি হয়ে গেলো,

কারণ, সে ভেবেছে এই মেয়ে আমার কেউ, মানে আমার পছন্দের মানুষ। কোন রকম তাকে শ্রেয়ার হাতে তুলে দিয়ে আমি অফিসের দিকে পা বাড়ালাম।

.

অফিস শেষে বাড়ী এসে সন্ধ্যার দিকে একবার ফোন করে খোঁজ নিলাম। কেন জানিনা তারপর সারা রাত ঘুমাতে পারলাম না। কাল সকালে অফিস আছে, তাকে পৌঁছেও দিতে হবে কেন জানিনা তাকে ছাড়তে মন চাই ছিলো না। সারারাত ধরে একটা কথাই চিন্তা করলাম, তাকে আমার ভালোই লাগে, কি এমন ক্ষতি হবে সে যদি আমার জীবনে আসে। আমার আপন বলতেও কেউ নেই, এক মামা ছিলেন কোলে পিঠে করে মানুষ করেছিলেন তিনিও এক বছর হলো গত হয়েছেন, একা মানুষ আমি, একটাই আমার জগৎ। কি এমন আসবে যাবে যদি তাকে এই রাজ্যের রানী করি!!

তারপরেই মনে হলো সম্ভব না সে তো অন্য কাওকে ভালোবাসে এটা কি ঠিক হবে? এই সব আবোল তাবোল ভাবতে ভাবতে কখন যে রাত কেটে ভোর হলো টেরই পেলামনা।

সকাল সকাল বের হলাম, আজিমপুর থেকে মোহাম্মদপুর এর জন্য। মোহাম্মদপুরে গিয়ে তাকে

নিয়ে করে সিএনজি তে কমলাপুর পৌছুলাম ১০টার দিকে। কোথাকার টিকেট নিবে প্রশ্ন করতেই বলল,

–এক জায়গা হলেই হয়।”

— মানে?” অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম!!

–কিছুনা, আচ্ছা চট্টগ্রামের টিকেট করুন।

তার জন্যে টিকেট কেটে এনে দিলাম, ট্রেন১০.৩০ মিনিটে। আর তখন ১০.১৫ বাজে, বেঞ্চে বসে আছি পাশাপাশি। একবার মনে হচ্ছে বলেই ফেলি, তোমার সাথে একদিন ঘুরে জানিনা কেনো তোমাকে খুব ভালো লেগেছে ইচ্ছে করে তোমার হাত টা ধরে আমার বাড়ী নিয়ে যাই।

আবার মনে হচ্ছে ঠিক হবেনা, এই অবস্থায় যখন দুলছি তখনই সে উঠে পড়লো,বলল,

–আসি, অনেক উপকার করছেন। আজকের দিনে এতো ভালো মানুষ পাওয়া যায়না। আমার ভাগ্য সব সময় খারাপ হলেও এই একটা ব্যাপারে ভালো ছিলো। আসি… ভালো থাকবেন।”

আমি তাকে বললাম,

–আচ্ছা, ঠিক আছে যাচ্ছেন যান, তা ফোন নংটা রেখে দিন। যদি কোন সাহায্য লাগে আর ঢাকা এলে জানাবেন আশা করি আপনার সব কষ্ট দূর হয়ে যাবে।

তা আপনার নাম কিন্তু বলেননি, যাবার আগে নামটা তো অন্তত বলে যান।” সে হেসে বলল,

— আমার নাম অরুণিমা, অরুণিমা সেন অরণী। নাহ, আর আপনাকে জ্বালাতে চাইনা, আপনি আমার জন্য যা করেছেন তা কখনো শোধ করতে পারবোনা। তাই আর আপনার ঝামেলা হতে চাইনা। আসি, দোয়া করবেন।” কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই সে ট্রেনে উঠে বসলো।

আমিও উল্টো ঘুরে বাহিরের দিকে পা বাড়ালাম, হুইসলের শব্দ… … কেন জানি মনে হচ্ছে ভুল করছি, কোথাও একটা ভুল হচ্ছে!! তারপর পিছে ফিরে দৌড়াতে লাগলাম, ছুটে গিয়ে উঠলাম ট্রেনে,

তার পাশের সিটে গিয়ে বসলাম, দেখি সে কাঁদছে। রুমাল দিয়ে তার চোখের জলটুকু মুছে দিতেই সে পাশ ফিরে চেয়ে অবাক হয়ে বলল,

— আপনি?”

কিছু না বলে শুধু বললাম,

–মিসেস

উপাধি নিতে আপত্তি আছে?” সে শুধুই অবাক দৃষ্টি মেলে চেয়েছিলো । পরের স্টেশনে নেমে পড়লাম

দুজনে… আজ থেকে এই পথচলা দুজনের ।

.

আমার হাতে তার হাত, আমার কাঁধে মাথা রেখে হাঁটছে। নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী-মানুষ মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে আমার জীবনে আজ নতুন দিনের সূচনা, নতুন পৃথিবী কেবল তার আর আমার।

নতুন জীবনের পথচলা শুরু হলেও, বাস্তবতা কখনো মসৃণ হয় না।

স্টেশন থেকে নেমে অরুণিমা কিছুটা দ্বিধায় বলল,
— “শুভ্র, তুমি কি নিশ্চিত? আমার জন্য তোমার জীবনটা এত বড় সিদ্ধান্ত নিতে চাও? আমি জানি না, আমি তোমার জন্য যথেষ্ট কি না।”

আমি তার হাত শক্ত করে ধরলাম।
— “অরুণিমা, আমার কাছে তোমার সুখটাই সবচেয়ে বড়। এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কারণ তুমি ছাড়া আমার জীবন অসম্পূর্ণ। আমরা একসঙ্গে থাকলে সব ঠিক হয়ে যাবে।”

তার চোখে জল জমল, কিন্তু মুখে হালকা হাসি।

আমি আর অরুণিমা একটা ছোট গেস্টহাউসে রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নিলাম। গেস্টহাউসের ছোট্ট ঘরে, মৃদু বাতাসে জানালার পর্দা নড়ছে। অরুণিমা ঘরের এক কোণে চুপচাপ বসে ছিল।

আমি কাছে গিয়ে বললাম,
— “এত ভাবছো কেন? কিছুদিন পর আমাদের সব ঠিক হয়ে যাবে।”
সে তাকিয়ে বলল,
— “আমার ভয় হচ্ছে। আমার পরিবার, সমাজ… আমাদের স্বপ্ন কি বাস্তব হবে?”

আমি তার কাঁধে হাত রেখে বললাম,
— “স্বপ্ন বাস্তব হয় ভালোবাসার জোরে। আমাদের ভালোবাসাই আমাদের শক্তি।”

সে হঠাৎ আমাকে জড়িয়ে ধরল। তার কান্না আমার শার্ট ভিজিয়ে দিল। আমি তাকে শান্ত করলাম। সেদিন রাতের আকাশে চাঁদের আলোয় মনে হলো, আমরা দু’জন নতুন এক জীবনের পথে পা বাড়িয়েছি।

পরদিন সকালে, আমরা একটা ছোট বাসা খুঁজে পেলাম। আমাদের সামান্য সঞ্চয় দিয়ে ঘর সাজালাম। অরুণিমা বলল,
— “এই ঘরটাই আমার জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর জায়গা। শুভ্র, তুমি আছো বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।”

তবে সহজ ছিল না। আমি একটা অফিসে চাকরি নিলাম। অরুণিমা বাড়ি থেকে পালিয়ে আসায় তার পড়াশোনা মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমি তার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে বললাম।

সে বলল,
— “তোমার এত দায়িত্বের মধ্যে আমি কি পড়াশোনা করব?”
আমি হেসে বললাম,
— “তোমার স্বপ্নও আমার স্বপ্ন, অরুণিমা।”

তবে সমাজ সহজে মেনে নেয় না। আশেপাশের লোকজন আমাদের সম্পর্ক নিয়ে কটু কথা বলত। একদিন বাজারে গিয়ে এক বৃদ্ধা মহিলার কথায় অরুণিমার চোখে জল চলে এলো। সে ঘরে ফিরে আমাকে বলল,
— “সবাই এত ঘৃণা কেন করে? আমি কি অপরাধ করেছি?”

আমি তার হাত ধরে বললাম,
— “তুমি কেবল ভালোবাসার অপরাধ করেছো। কিন্তু ভালোবাসাই সবচেয়ে বড় সত্য। সময়ের সঙ্গে সব মেনে নেবে।”

ধীরে ধীরে আমাদের জীবনে সুখের মুহূর্ত আসতে লাগল। এক সন্ধ্যায়, আমি অফিস থেকে ফিরে দেখি, অরুণিমা রান্নাঘরে নতুন একটা রেসিপি চেষ্টা করছে। গন্ধটা এত চমৎকার ছিল যে আমি মজা করে বললাম,
— “এই খাবার খেয়েই কিন্তু আমি তোমার প্রেমে পড়েছি।”
সে হাসল, বলল,
— “তাহলে রোজ তোমার জন্য এমন খাবার বানাব।”

কঠিন সময়ে আমরা একে অপরকে আগলে রেখেছিলাম। একদিন, বৃষ্টির রাতে আমি তাকে বললাম,
— “জানো, অরুণিমা, তোমার মতো কাউকে খুঁজতে খুঁজতেই আমার জীবন কেটে যেত। তুমি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ।”
সে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
— “তুমিই আমার একমাত্র আশ্রয়।”

কয়েক মাস পর, অরুণিমা তার পড়াশোনা শেষ করে চাকরি পেল। আমাদের জীবন নতুন করে সাজতে লাগল। ছোট ছোট স্বপ্নগুলো একে একে পূরণ হতে লাগল।

যদিও আমাদের জীবনে অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল, আমরা একে অপরকে ভালোবাসা আর বিশ্বাস দিয়ে সবকিছু পার করে গিয়েছিলাম।

এই গল্পের শেষ হয়নি। ভালোবাসার গল্প তো কখনো শেষ হয় না। শুভ্র আর অরুণিমার নতুন জীবন নতুন গল্পের জন্ম দিচ্ছে প্রতিদিন।

শেষে বলি, সত্যিকারের ভালোবাসা সবসময়ই বাধা কাটিয়ে বিজয়ী হয়।

Payel Mahato

I am Payel Mahato, a passionate storyteller who loves weaving emotions into words and crafting tales that touch hearts. As a Bengali love story writer, I specialize in creating narratives filled with romance, drama, and human connections that resonate deeply with readers.

---Advertisement---

Related Post

Leave a Comment