আজ আমি আপনাদের আদি আর ইশার ভালোবাসার গল্প শোনাতে যাচ্ছি। গল্পটা মন দিয়ে শুনবে কথা দিচ্ছি তোমাদের অবশই ভালো লাগবে।
–সবে মাত্র সাত দিন হলো বিয়ে করেছি। বিয়ে যে করেছি নিজের কাছে মনে হচ্ছে না। মনে হচ্ছে বিবাহিত ব্যাচেলার। এখনো নিজের কাজ নিজে করি, আর না হয় মা করে দেয়। বিয়ে করেছি কিন্তু বউয়ের স্পর্শ এখনো পাইনি,পাবোই বা কিভাবে বউ যে পালিয়ে পালিয়ে বেড়ায়।
কী ভাবছেন আপনারা,আমি কালো,কিংবা বউ পেটাই, আসলে সেটা না,আমার বউয়ের অনেক লজ্জা। আহা কথাটা শুনলেই আমারও কেমন জানি লজ্জা পাই। যেই মেয়ে বিয়ের পরেও স্বামীর কাছে যেতে লজ্জা পাই,তাকে আর কী বলবো। অনেক কিছুই তো শুনলেন,আরো বলবো অফিস থেকে ঘুরে আসি—
-মা,ওমা, কোথায় তুমি?-মা এখানে নেই।
– কোথায় গেছে?
– কাজে আছে,তাই আমাকে পাঠালো।কিছু দরকার কী?
– মা কে গিয়ে বলো আমার অফিসের ফাইল টা পাচ্ছি না।
– ফাইল টা ড্রয়ারে রাখা আছে।
– কে রেখেছে ওখানে?
– আমি রেখেছি।
কথাটা বলেই ইশা দ্রুত পায়ে হেটে চলে গেলো,ও আপনাদের তো বলাই হয়নি ইশাই আমার বউ।যদিও বউ বলতে কেমন জানি লাগছে। আর আমি আদি ,একটা বেসরকারি কম্পানিতে চাকরি করি।সব কিছু গুছিয়ে বের হলাম অফিসের দিকে।
অফিসে ঢুকতেই আমার কলিগ বলতে লাগল-
– আরে আদি সাহেব,আপনি অফিসে?
– কেনো অফিসে আসা নিষেধ আছে নাকি আমার?
– না সেটা বলিনি,আপনি তো বিয়ে করছেন?
– বিয়ে তো আপনিও করছেন,তাতে সম্যসা কী?
– সম্যসা টা হলো আমি অনেক আগে বিয়ে করছি,আর আপনি সবে মাত্র কিছুদিন হলো।
– তা সম্যসা টা কোথায়?
– সম্যসা হলো আপনার ছুটি দশদিন আর আপনি সাত দিনের মাথায় অফিসে।বউয়ের সাথে কী ঝগড়া করে আসছেন নাকি?
Bangla Golpo
এই সেরেছে আমার নিজেরই তো মনে নেই দশ দিনের ছুটিতে ছিলাম,কিভাবে মনে থাকবে,বউয়ের সাথে একটু ভাব ভালবাসা তৈরি হলে না হয় অফিসের কথা ভুলেই যেতাম।কী লজ্জার বিষয়।
– কী আদি সাহেব কী ভাবছেন?
– না,না,তেমন কিছু না।আসলে ভুলে গেছিলাম। আচ্ছা ঠিক আছে । আমি বাড়ী যায়।
যাক গে তেমন কেউ দেখেনি,না হলে যে কী হতো। অল্পেতে বেচে গেছি। লজ্জা তে মরে যাই,মরে যাই।বউয়ের মত লজ্জা যেনো না আসে আবার।
কী আর করার শেষমেষ বাড়িতে ফিরে এলাম।
বাড়িতে এসেই বা কী করব,না পারবো বউয়ের সাথে রোমান্স করতে না পারবো অন্য কিছু করতে। এতো লজ্জা যে কোথায় রাখে। এই লজ্জাটাই দেখছি আমার জীবনটার তেরোটা বাজাবে।
– কী ব্যাপার বাড়িতে ফিরে আসলেন যে?[পিছনে তাকিয়ে দেখি বউ মানে ইশা লাজুক কন্ঠে জানতে চাইছে]
– আমিও হাসি হাসি মুখে বললাম
– কী করব,খুব লজ্জা লাগছিলো যে।
– ধূর কী যে বলেন না,লজ্জা তো মেয়েদের থাকে,ছেলেদের আবার লজ্জা থাকে নাকি।[ইশার কথা শেষ না হতেই জড়িয়ে ধরে একটা চুমু দিলাম কপালে,বউ তো একবার আমার দিকে তাকায় আবার নিচের দিকে তাকায়]
Love Story in Bangla
– এই কী করলেন এসব,লজ্জা সরম নেই বুঝি? [ ইশা]
– তুমিই না এই মাত্র বললে ছেলেদের নাকি লজ্জা সরম নেই।
– ধূরর আপনি একটা অসভ্য।
– বউ কে চুমু দেয়া যদি অসভ্য হয় তাহলে কাল থেকে সভ্য কাজ করবো।
– কী করবেন শুনি?
– বাইরের মেয়েদের কে চুমু দিবো।
– এই দেখেন মোটেও এমন করবেন না। অন্য কোন মেয়ের দিকে নজর দিবেন না। শুধু আমার দিকে নজর দিবেন।
– নজর দিয়ে কী করব। যদি চুমু দিতে না পারি।
– ঠিকআছে প্রতিদিন একটা করে চুমু দিবেন। তবে একটাই কিন্তু..কথাটা বলেই বউ লাজুক মুখখান নিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে চলে গেলো।
হয়তো এখন মায়ের আচল তলে মুখ লুকাবে। তবে মেয়ে যাই হোক নিজের স্বামীর ভাগ অন্য কাউকে দিবে না। সুযোগ তো পাইছি,একটা একটা একটা করে এভাবে চুমুর সংখ্যা বাড়িয়ে যাবো।
পরের দিন বিকেল বেলা…
– মা আমি একটু বাইরে গেলাম..
– কোথায় যাচ্ছেন (বউ মানে ইশা)
– খুব চুমু খেতে ইচ্ছা করছে, তাই বাইরে গিয়ে দেখি যদি কোন মেয়ে পাই।
– কী,সকালে না আমাকে দিলেন,আবার কেনো?
– একটা তে মন ভরছে না।
– ঠিকআছে,তাহলে আমাকে করেন।তবুও অন্য মেয়ে না।
কী আর করা বউ নিরুপায় হয়ে আবার ইয়ে করতে দিলো।
– আবার কোথায় যাচ্ছেন? ( ইশা)
– বাইরে থেকে ঘুরে আসি। (আমি)
– বাইরে যাচ্ছেন তাহলে আমিও যাবো।
– কানে কী ভুল শুনলাম
-কী বললে আবার বলো?
– আমিও যাবো ঘুরতে আপনার সাথে।
– কেনো তোমার লজ্জা করবে না?
– করবে,তবুও যাবো।
– ঠিকআছে রেডি হয়ে এসো।
মনে লাড্ডু ফটাশ। বউ আমার, লজ্জা ভেঙে আমার সাথে যাবে ঘুরতে,তার মানে সামথিং সামথিং। কী যে খুশী লাগছে।
আমি আর ইশা রিক্সায় বসে আছি। শপিংমল যাচ্ছি , হয় তো আজ একটু পকেট ফাকা হবে আর কী।
– এই যে এতো সরে আসছেন কেনো আমার দিকে।
– কেন আসতে পারি না?
– জানি না,তবে আমার লজ্জা লাগছে কিন্তু। শরীর ঘেষে না বসে একটু ফাকা রাখেন।
কী আর করব,যা একটু অনুভূতি অনুভব করছি তাও আর হলো না। রিক্সাওয়ালাও যেনো কেমন করে তাকিয়ে ছিলো,হয় তো এটা আমার বউ নাকি সন্দেহ করছিলো।
Bengali Love Story
শপিংমল যে লেডিসমল হয়ে গেছে। চারিদিকে কত রকমের পরী,কোনটা থুয়ে কোনটার দিকে তাকাবো ভেবেই পাচ্ছি না।
– এইই এই এইই, ( ইশা)
– কী হইছে বলো?
– অন্য মেয়েদের দিকে তাকাচ্ছেন কেনো?
– দেখছো না নাল,নীল,হলুম,সাদা,বেগুনী,কতরকমের পরী।
– তাই বলে তাকাতে হবে?
– না তাকিয়ে কী করব,বউ তো আমার সাথে থাকে না।
– ঐ চুপ,চুপ,বাড়িতে চলেন চোখ একদম তুলে নিবো।ওমা বউ কী বলে ,লজ্জাবতী বউ হঠাৎ করে রাগী বউ হইলো কিভাবে।
শপিংমল থেকে সামান্য কিছু কেনাকাটা করে,একটু ঘোরাঘুরি করে,রাতের কিছু খাবার কিনে বাড়িতে আসলাম। ইশা তো লজ্জার কারনে বাইরে খেতেও চাইলো না। রিক্সা থেকে নেমে ইশার হাতে একটা পায়েল গুজে দিলাম।ইশা অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে,হয়তো বুঝতে পারেনি কখন কিনেছি এটা।
রাতের খাবার খেয়ে আজ একটু তাড়াতিড়িই শুয়ে পড়লাম। খুব ক্লান্ত শরীর আজকে। কিছুক্ষন পরেই দরজার ঠক ঠক শব্দ পেয়ে দরজাটা খুললাম। দরজা খুলেই দেখি ইশা দাড়িয়ে আছে। আমি অভদ্রের হাসি দিয়ে বললাম
– আরে এত রাতে তুমি এখানে?
ইশার চোখে-মুখে আনন্দ দেখতে পাচ্ছি। চোখে সামান্যভয় সামান্য আনন্দ। পিছনে হাতে পায়েল টা ধরে রেখেছে। রুমের দরজা বন্ধ করছে ইশা ! আমার চোখ আকাশে উঠল। যে মেয়ে আমার সামনেই আসেনা সে মেয়ে আজকে আমি রুমে থাকতেই দরজা বন্ধ করছে! বললাম – দরজা বন্ধ করছ কেন?
ইশা আমার সামনে এসে বলল
-পায়েল টা পরিয়ে দিন। আমি তাড়াতাড়ি বললাম
– আমি পায়েল পরাতে পারি না। ইশা বলল
-সেইজন্যই তো দরজা বন্ধ করলাম।আমি অবাক হয়ে বললাম
-‘মানে?’
ইশা হাতে পায়েল ধরিয়ে দিয়ে বলল
– আপনি নিজের হাতে পায়েল না পরালে আমি পায়েল পরব না।এরপর ইশা আলতো করে তার পা থেকে শাড়ী উপরে তুলল,আর আমি পায়েল টা পরিয়ে দিয়ে দাড়িয়ে থাকলাম। ইশা আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,আমার বুকে মুখ লুকালো।হয়তো লজ্জা পাচ্ছে। আর আমি চেঁচিয়ে বললাম আমার কিন্তু খুব লজ্জা করছে। বাকিটা ইতিহাস…
