---Advertisement---

Bengali couple love story: নিরব-নিশির প্রেমকাহিনি

Updated On:
Bengali couple love story
---Advertisement---

নিশি একটু সংকোচ ভরে বলল, “এই যে, এদিকে…”

নিরব অবাক হয়ে তাকাল, “আমাকে বলছেন?”

“জ্বী! আপনার নাম নিরব না?”

নিরব হালকা হাসি দিয়ে জবাব দিল, “হ্যাঁ, কিন্তু আপনি কীভাবে জানেন?”

নিশির চোখে একটু দুষ্টুমির ঝিলিক, “আমি আপনাকে দেখেই চিনেছি! আমি নিশি।”

নিরবের মুখে আবার সেই অবাক হাসি, “চমৎকার নাম, কিন্তু আপনাকে তো আমি চিনি না!”

নিশি খানিকটা বিরক্ত হয়ে বলল, “ফাজলামি করছেন? আমি আদ্রিতা নিশি!”

নিরব মৃদু হেসে বলল, “ওহ, দারুণ নাম! কিন্তু… সত্যি বলছি, আপনাকে মনে পড়ছে না।”

নিশি গম্ভীর হয়ে গেল, “দেখুন, মজা করবেন না। নাহলে চলে যাবো!”

নিরবও এবার হাসি চাপতে না পেরে জিজ্ঞাসা করল, “ঠিক আছে, আগে বলুন, খাবার অর্ডার দিয়েছেন?”

“দিয়েছি! এবার বলেন, আপনি কি নীলাভ্র নিরব, মানে শাহরিয়ার নিরব?”

“হ্যাঁ, আপনি একদম ঠিক ধরেছেন!”

নিশি এবার রাগের ভান করে বলল, “তাহলে এতক্ষণ মজা করছিলেন কেন?”

নিরব হালকা হেসে জবাব দিল, “দেখছিলাম, আপনার আত্মবিশ্বাস কতটা!”

“দেখা হয়ে গেছে?”

“একদম!”

“চলেন, এখন পালাই!”

নিরব হেসে বলল, “পালাবো? কোথায়?”

নিশি দুষ্টুমির ছলে জবাব দিল, “যেখানে আমাদের কেউ খুঁজে পাবে না!”

“বাসায় জানে?”

“পাগল নাকি? বাসা থেকে তো আমাকে জোর করে এক খ্যাত লোকের সাথে বিয়ে দিতে চাইছিল!”

“কোন খ্যাত লোক?”

“সাব্বির না কী যেন নাম… ফেসবুকে বলেছিলাম না?”

নিরব মজা করে বলল, “সাব্বিরের সমস্যা কী?”

নিশি হাসতে হাসতে জবাব দিল, “দেখিনি ওকে, কিন্তু নাম শুনেই বিরক্ত লাগে!”

নিরব হেসে বলল, “তাহলে নজরুলের ডাকনাম ‘দুখু মিয়া’ শুনলে কী বলবে?”

নিশি এবার হেসে লুটিয়ে পড়ল, “আপনি তো একদম পাগল! এইসব উদাহরণ দেন কেন?”

ওরা খেতে বসল। নিশি নিরবের দিকে তাকিয়ে বলল, “আচ্ছা, আপনি কিন্তু আসবেন না ভেবে আমি রিস্ক নিয়েছিলাম!”

নিরবের চোখে এক নরম আলোর ছোঁয়া, “আপনার সাহসের জন্যই তো এসেছি!”

নিশি হালকা মুচকি হেসে বলল, “আপনি কি জানেন, আমি যখন প্রথম আপনার ছবি দেখেছিলাম, মনে হয়েছিল এই মানুষটার সাথে কিছু একটা বিশেষ হবে!”

নিরব মৃদু হাসল, “তাহলে আজকের দিনটা সেই বিশেষ কিছু?”

নিশির গাল লাল হয়ে গেল। সে ধীরে ধীরে জবাব দিল, “হয়তো!”

ঠিক সেই মুহূর্তে নিশির ফোন বেজে উঠল।

“উফফ! সাব্বিরের ফোন!” নিশি বিরক্তি নিয়ে বলল।

নিরব মুচকি হেসে ফোনটা হাতে নিল, “আসলে সাব্বির আমিই!”

নিশি অবাক হয়ে চিৎকার করল, “কী?! আপনি-ই সাব্বির?”

নিরব হেসে বলল, “হ্যাঁ, আমার আম্মু তোমার ছবি দেখে পছন্দ করেছে আর তোমার বাবার কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে!”

নিশি হেসে কাঁদতে শুরু করল, “বাহ, এতদিন ধরে যা খুঁজছিলাম, সেটা তো সামনেই ছিল!”

নিরব তার হাতে আলতো করে স্পর্শ করে বলল, “তাহলে এবার তোমার ‘না’ বলার কোনো কারণ নেই, তাই তো?”

নিশি নিরবের দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসল, “আমি রাজি!”

নিরব হেসে বলল, “তোমার রান্না পারা না পারা নিয়ে কোনো চিন্তা নেই। আমার শখই একজন রান্না না পারা মেয়েকে বিয়ে করা!”

নিশি হেসে গালে হাত রাখল, “সত্যি? তাহলে তো আমরা একদম পারফেক্ট!”

আর ওদের ভালোবাসার গল্প এখানেই শেষ হয় না… বরং এখান থেকেই শুরু।

বিয়ের পর নিশি ও নিরবের জীবনে এক নতুন অধ্যায় শুরু হলো। নিশির পায়ে আলতা লেগে থাকা সেই লাজুক লাল রং যেন প্রতিদিন তাদের সম্পর্কের গভীরতা বাড়িয়ে দিত। নিরবের প্রাণচঞ্চলতা আর নিশির সরলতা মিলিয়ে তাদের সংসার যেন এক রঙিন ক্যানভাস হয়ে উঠল।

একদিন বিকেলে, বারান্দায় বসে চা খাচ্ছিল নিশি। নিরব চুপিচুপি পেছন থেকে গিয়ে তার কানে ফিসফিস করে বলল, “শুনছো? আমি স্বপ্নে দেখেছি তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছো!”

নিশি ভ্রু কুঁচকে তাকাল, “কী বলছো এসব? তোমার দোষ, রাতে দেরি করে খাওয়া! হজম হয়নি তাই এমন দুঃস্বপ্ন!”

নিরব হেসে নিশির গাল টেনে বলল, “আচ্ছা, যদি সত্যি চলে যেতে বলি?”

নিশি গম্ভীর মুখে বলল, “তোমাকে ছাড়া তো গিয়েই মরব!”

নিরব হেসে উঠল, কিন্তু নিশির চোখে এক মুহূর্তের জন্য জ্বলে উঠল এক অজানা আতঙ্কের ছোঁয়া।

কয়েকদিন পর নিশি লক্ষ্য করল, নিরবের আচরণে অদ্ভুত পরিবর্তন এসেছে। নিরব যেন কিছু লুকাচ্ছে। ফোনে চুপিচুপি কথা বলে, রাতে দেরি করে বাড়ি ফেরা—সবই নিশির মনকে বিষণ্ন করে তুলছিল।

একদিন নিশি নিরবের ফোনে একটি অচেনা নাম দেখল—”অর্পিতা”। নিশির বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠল। নানা সন্দেহের ঝড় বয়ে গেল মনে।

কিন্তু নিশি কিছু বলল না। শুধুই দেখল নিরবের মুখ, যেখানে সে একসময় তার সব সুখ খুঁজে পেত।

শেষমেশ, একদিন নিশি নিরবের সামনে দাঁড়িয়ে বলল, “তুমি কি কিছু লুকাচ্ছো?”

নিরবের মুখটা মুহূর্তে ফ্যাকাশে হয়ে গেল। তারপর এক গভীর নিঃশ্বাস নিয়ে বলল, “হ্যাঁ, লুকাচ্ছি। কারণ আমি জানি তুমি চিন্তিত হয়ে পড়বে।”

নিশির চোখে পানি জমল, “বলো না, প্লিজ।”

নিরব হাত ধরে বসিয়ে বলল, “অর্পিতা আমার অফিসের একজন কলিগ। ওর ক্যান্সার ধরা পড়েছে। আমি ওকে সাহস দিচ্ছি, ওর চিকিৎসার জন্য সাহায্য করছি।”

নিশির চোখ থেকে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল—লজ্জা আর ভালোবাসায়।

নিশি আস্তে করে নিরবের গলা জড়িয়ে বলল, “তুমি জানো, আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি?”

নিরব মুচকি হেসে বলল, “জানি। তাই তো তোমার জন্য আজীবন বেঁচে থাকতে চাই!”

সেই দিন থেকে নিশি আর নিরবের মধ্যে কোনো দূরত্ব থাকল না। তাদের গল্প আরও রঙিন হয়ে উঠল—ভালোবাসা, বিশ্বাস, আর একটুখানি আবেগের ছোঁয়ায়।

আর এভাবেই চলতে থাকল নিশি-নিরবের অপূর্ণ থেকে পূর্ণ হওয়া প্রেমের গল্প।

Payel Mahato

I am Payel Mahato, a passionate storyteller who loves weaving emotions into words and crafting tales that touch hearts. As a Bengali love story writer, I specialize in creating narratives filled with romance, drama, and human connections that resonate deeply with readers.

---Advertisement---

Related Post

Leave a Comment