---Advertisement---

Bengali Couple Relationship Story: লিপস্টিকের রঙে ভালোবাসা

Updated On:
Friendship to love story in Bengali Story
---Advertisement---

নীল: “এই, কি কি আনতে হবে লিস্ট দাও তো! হাতে একদম সময় নেই, অফিস থেকে ফেরার সময় একবারেই নিয়ে আসব।”

সিন্থি: “এই নাও লিস্ট, কিন্তু মনে করে সব কিছু আনবে!”

নীল: “কয়েকদিন আগেই তো লিপস্টিক এনে দিলাম! এত তাড়াতাড়ি শেষ করলা?”

সিন্থি: “আমি শেষ করলাম? যা এনেছিলে, সবই তো তোমার পেটেই গেছে!”

নীল: “হুম, তোমারই দোষ! সব সময় লিপস্টিক দাও কেন?”

সিন্থি: “ভালো লাগে তাই দিই! তাই বলে তুমি সব খেয়ে ফেলবে?”

নীল আর সিন্থির গল্পটা খুব সাধারণ, তবুও একদম অন্যরকম। ওরা শুধু স্বামী-স্ত্রী নয়, একে অপরের সবচেয়ে ভালো বন্ধু, শত্রু, আর সবচেয়ে প্রিয় মানুষও। লাভ ম্যারেজ হওয়ায় ওদের সংসারে যেমন ভালোবাসার গভীরতা আছে, তেমনি আছে হাসি-ঠাট্টা, খুনসুটি আর দুষ্টুমি।

ওদের প্রেমের শুরুটা কলেজ লাইফে। এক বেঞ্চে বসা থেকে বন্ধুত্ব, একসঙ্গে পড়া, আড্ডা, তারপর একসময় ভালোবাসা। ভাগ্যের ফেরে একসঙ্গেই ভার্সিটিতে চান্স পাওয়া, তারপর স্বপ্ন দেখা একসঙ্গে থাকার। কিন্তু নীলের একটা অদ্ভুত পছন্দ ছিল—সে চাইত তার প্রেমিকা বা স্ত্রী কখনও লিপস্টিক ব্যবহার করবে না! অথচ সিন্থি পুরো উল্টো। ওর ঠোঁটে সব সময় লিপস্টিক থাকত, তাও আবার গাঢ় রঙের!

নীলের জন্মদিনে ও একবার সিন্থির কাছে চুমুর আবদার করেছিল। সিন্থি রাজিও হয়েছিল, তবে শর্ত দিয়েছিল—লিপস্টিকসহ কিস করতে হবে! নীল তখন রাগে গজগজ করতে করতে ফিরে গিয়েছিল, আর এরপর থেকে আর কখনও এমন আবদার করেনি। কিন্তু বিয়ের পর পরিস্থিতি বদলে গেল।

এখন তো নীলকে সিন্থির লিপস্টিকসহ কিস মেনেই নিতে হয়! প্রথমে বিরক্ত লাগলেও এখন এটা তার কাছে স্বাভাবিক হয়ে গেছে। সিন্থির লিপস্টিক যতই থাকুক, বেশিক্ষণ থাকে না—নীলই তো সব খেয়ে ফেলে!

একদিন…

সিন্থি: “এই তুমি! কি ফ্লেভারের লিপস্টিক এনেছো? এগুলো একদম বাজে গন্ধের! একটাও ভালো না! যাও, ফিরিয়ে দিয়ে আসো!”

নীল: “কই, আমার তো বেশ ভালোই লাগছে! তাই এনেছি!”

সিন্থি: “তোমার ভালো লাগলেই হবে? ব্যবহার তো আমাকেই করতে হবে! আমার যা ভালো লাগে সেটাই আনতে হবে!”

নীল: “তুমি ব্যবহার করবে তো কি হয়েছে? জিনিসটা তো শেষ পর্যন্ত আমার পেটেই যাবে!”

সিন্থি: “মানে?! তোমার পেটে যাবে কিভাবে?”

নীল: “সোজা কথা, লিপস্টিক তো তোমার ঠোঁটে, আর তোমার ঠোঁট তো… থাক, তুমি নিজেই বোঝো!” 😏

সিন্থি: “তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে! সারাদিন শুধু এইসব ভাবো?”

নীল: “তোমার মতো বউ থাকলে না ভাবলেও চলবে না!”

সিন্থি একটু রাগ দেখালেও মনে মনে খুশিই হয়। ওরা দুজন জানে, এই ছোটখাটো খুনসুটিগুলোই ওদের সম্পর্ককে আরও মজবুত করে তুলেছে।

নীল: “আচ্ছা, আমাদের ছেলে-মেয়ের নাম যদি লিপস্টিক রাখি কেমন হয়? ছেলে হলে লাল লিপস্টিক, মেয়ে হলে গোলাপি লিপস্টিক!”

সিন্থি: “তুমি একটা পাঁজি! সারাদিন মাথায় শুধু লিপস্টিক ঘোরে!”

নীল: “তোমার বোঝার কথা না! বিবাহিত স্বামীদের লিপস্টিক নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তা থাকে! তার ওপর আমি তো স্পেশাল কেস—খাদক!”

সিন্থি: “হুম, তুমি তো আসলেই একটা খাদক! কিন্তু ভালোবাসার খাদক!” ❤️

এভাবেই কাটে নীল আর সিন্থির দিনগুলো—প্রেম, খুনসুটি, ঝগড়া আর ভালোবাসায় মাখানো এক অদ্ভুত সুন্দর জীবন! 😊💞

নীল আর সিন্থির সংসার কেবল হাসি-ঠাট্টা আর খুনসুটিতেই সীমাবদ্ধ নয়, ভালোবাসার গভীরতাও দিন দিন বাড়ছে। প্রতিদিনই নতুন কিছু নিয়ে ঝগড়া হয়, আবার সেই ঝগড়া ভালোবাসার মোড়কে মিশে যায়।

নীল অফিস থেকে ফিরেই দেখল, সিন্থি চুপচাপ বসে আছে। মুখটা গম্ভীর, ঠোঁটে কোনো লিপস্টিক নেই!

নীল: “কি হলো? তোমার ঠোঁট এত ফ্যাকাশে কেন? মনে হচ্ছে লিপস্টিকের অভাবে ঠোঁট শুকিয়ে গেছে!”

সিন্থি: (কোনো উত্তর নেই)

নীল একটু অবাক হয়ে গেল। সাধারণত ও বাসায় ঢুকলেই সিন্থি ঝগড়া করা শুরু করে দেয়, আর আজ একেবারে চুপচাপ!

নীল: “বলো তো, কি হয়েছে? আমি কিছু করলাম?”

সিন্থি: (মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বলল) “তোমার কিছু করার দরকার নেই! তুমি তো এখন অন্য কাউকে নিয়ে ভাবো!”

নীল: (হতভম্ব হয়ে) “মানে?”

সিন্থি: “সকালবেলা তুমি বললে, ‘ওকে’ লিপস্টিক দিয়ে দেবে! কে ওই ‘ও’? আমি জানতে চাই!”

নীল মনে মনে হাসল। এই মেয়েটার রাগও কেমন মিষ্টি!

নীল: “ওই ‘ও’ যে কে, আমিও জানি না! তোমার সঙ্গে কথা বলতে গিয়েই তো সব বর্ণমালা নিষিদ্ধ হয়ে গেছে!”

সিন্থি: “তুমি আমার সাথে মজা করছো?” (গাল ফুলিয়ে বসে রইল)

নীল এবার কাছে গিয়ে সিন্থির কপালে হাত রাখল।

নীল: “আরে আমার বউ রাগ করে থাকলে আমার ভালো লাগে না তো! আচ্ছা বলো, কিভাবে機লে機রাগ ভাঙবে?”

সিন্থি: (গম্ভীর গলায়) “একটা শর্ত আছে!”

নীল: “আহা! আবার শর্ত! বলো শুনি?”

সিন্থি: “তুমি আমাকে নিজে লিপস্টিক পরিয়ে দেবে!” 😏

নীল কিছুক্ষণ চুপ করে থাকল। এই কাজ তো তার জীবনে কখনও করা হয়নি!

নীল: “আরে এটা আবার কি শর্ত? তুমি তো এতদিন নিজেই দিতেই!”

সিন্থি: “আজ থেকে তুমি দিবে! আর না দিলে, তোমার জন্য একটা বড় শাস্তি আছে!”

নীল: “কি শাস্তি?”

সিন্থি: “এক মাস তোমাকে কিস নিষিদ্ধ!” 😏

নীল চোখ বড় বড় করে তাকাল! এটা তো একদম অন্যায়!

নীল: “আরে! এত বড় শাস্তি! ঠিক আছে, আমি দিচ্ছি!”

সিন্থি খুশি হয়ে লিপস্টিকটা নীলের হাতে দিল। নীল ধীরে ধীরে লিপস্টিক খুলল, তারপর হাতে নিয়ে সিন্থির ঠোঁটের দিকে তাকাল।

নীল: “আচ্ছা, আমি যদি সুন্দর করে না দিতে পারি?”

সিন্থি: “তাহলে শাস্তি বাড়বে!”

নীল কাঁপা কাঁপা হাতে সিন্থির ঠোঁটে লিপস্টিক দিতে লাগল। কিন্তু প্রথমবারেই ভুল করে ঠোঁটের বাইরে চলে গেল!

সিন্থি: “এই! তুমি কি করছো! এটা লিপস্টিক না পেইন্টিং করছো?”

নীল: “আরে এটাই তো আমার শিল্পকলা!”

সিন্থি: “বাহ্! তাহলে এখন থেকে সব সময় তুমিই পরিয়ে দেবে!”

নীল কিছু বলতে যাবে, এমন সময় সিন্থি ওকে জড়িয়ে ধরে বলল—

সিন্থি: “তুমি জানো? তোমার সঙ্গে এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলোই আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে! ঝগড়া করি, মজা করি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তুমি-ই আমার সবচেয়ে আপন!”

নীল হেসে বলল—

নীল: “এইসব বলে আবার কেঁদে ফেলো না! এক কাজ করি, চলো একটা সেলফি তুলি! প্রথমবার আমি লিপস্টিক পরালাম, এটা ইতিহাস হয়ে থাকবে!”

সিন্থি লজ্জা পেয়ে বলল, “উফফ! যাও তো! সারাদিন পাগলামো করো!”

কিন্তু নীল জানত, এই পাগলামোগুলোই তাদের সম্পর্ককে সবচেয়ে মিষ্টি করে তুলেছে।

শেষ নয়… আরো অনেক গল্প বাকি আছে! 💖

Payel Mahato

I am Payel Mahato, a passionate storyteller who loves weaving emotions into words and crafting tales that touch hearts. As a Bengali love story writer, I specialize in creating narratives filled with romance, drama, and human connections that resonate deeply with readers.

---Advertisement---

Related Post

Leave a Comment