---Advertisement---

Bengali cute love story: তোমার জন্য অপেক্ষা

Published On:
Bengali cute love story
---Advertisement---

 মিমি একটু জল দাও তো। 

আজ অনেক গরম তার উপর হেঁটে আসতে আসতে একদম ঘেমে গেছি  রাস্তায় অনেক  জ্যাম,রিক্সায় বসে থাকলে এই টিউশনিটাও মিস হয়ে যেতো।   আমার কথায় মিমি  উঠে দাঁড়ালো। আমি কিছু বলার আগেই মিমি  বললো,

–স্যার আর কিছু লাগবে?
–না মা ,শুধু এক গ্লাস ঠান্ডা জল ।

মিমি  আর দাড়ালো না। জল  আনতে গেলো।

মিমি ।আমার একমাত্র ছাত্রী। অবশ্য ওকে ছাড়াও আরও কয়েকজনকে পড়াই,তবুও কেন যেন ওর প্রতি টান একটু বেশীই । পিচ্চি একটা মেয়ে । ক্লাস থ্রী তে  পড়ে। বিশেষ করে ওর কথাগুলা আমার বেশ ভাল লাগে।

–আপনি জল চেয়েছেন?

রিমার কথায় আমি ওর দিকে তাকালাম । মেয়েটার মুখে বেশ রাগি ভাব লেগে আছে । আসলে জল  চাওয়ার সাথে ওনার রাগের সম্পর্ক আমি বুঝলাম না । রিমা মিমির  বড় বোন।

আমি কিছু বলার আগেই রিমা বেশ জোরে গলায় বললো,
–আমি কি আপনার বউ । ওইটুকু পিচ্চি মেয়েটাকে কি শিখিয়ে দিয়েছেন।

মিমির কথায় আমি কি বলবো ভেবে পেলাম না । আসলে বুঝতেই পারছি না কি হচ্ছে।তাছাড়া আমি তো ওর কাছে জল  চাইনি । চাইছি মিমির  কাছে।

এদিকে মেয়েটা যা ইচ্ছে তাই বলে গেলো।

এতটা অপমান কোনদিনও হইনি । মিমির মা  পর্যন্ত এসে জিজ্ঞেস করলো, কি হয়েছে বাবা । কিন্তু আমি উত্তর দিতে পারলাম না। আসলে হয়েছে টা কি সেটাই তো বুজতে পারছি না। মিমি  কি কিছু বলেছে।

মিমি  গ্লাস হাতে আমার দিকে আসতেই গ্লাসটা নিয়ে টেবিলে রেখে দিলাম । জল না খেয়েই মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করলাম,

–তোমার দিদিকে  কি বলেছো?
মিমি আমার কথায় ফিক করে হেসে দিয়ে বললো,
–আপুকে বলেছি, তোমার বর জল  চাচ্ছে।

এই পিচ্চি ফাজিল মেয়েটার কথায় আমার রাগটা একটু বেড়েই গেলো । মেয়েটা যে এতটা ফাজিল সেটা আগে বুঝিনি। আমি আর কিছু না বলে একটু পড়িয়েই বের হয়ে আসলাম । এই অবস্থায় পড়ানোর কোন ইচ্ছেই আমার নেই । তবে যেটা হয়েছে আমার সাথে সেটা ভাল হয়নি।

রাস্তার আলোতে হাটতে ভালই লাগছে । তবে মনটা সেই আগের মতই খারাপ। আসলে এভাবে যে কোনদিন আমার উপর দিয়ে ঝড় বয়ে যাবে বুঝতেই পারিনি।

রিমা  মেয়েটাকে আমার কাছে বেশ লাগে । মিশুক,সুন্দরী,মনটাও বেশ ভাল । সব মিলিয়ে পারফেক্ট। কিন্তু আজ হঠাৎ এমন করলো কেন।

এইতো কিছুদিন আগেও তো মেয়েটা আমাকে নাস্তা বানিয়ে খাওয়ালো। বেশ কিছুক্ষন গল্পও করলো।ও যে আমাকে পছন্দ করে না, তেমনও না।

মিমিকে  পড়ানোর সময় বিভিন্ন বাহানায়  রুমে এসে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে চলে যায়। কিন্তু আজ। ভাবতেই কেমন যেন লাগছে তার মুখে গালি খেয়ে এলাম ।

এই যে মিস্টার।

সিড়ি দিয়ে উপরে উঠতেই কেও একজন পেছন থেকে ডাক দিল। এমনিতেই মন মেজাজ ভাল নেই।এখন আবার কে । ভেবেছিলাম কারও সাথে কোন কথা না বলে ,রুমে  গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ঘুম দেবো । কিন্তু এখন আবার কে ডাকে। ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও আমি পেছনে ঘুরতেই দেখি সীমা দাঁড়িয়ে।

এসময় সীমাকে  দেখে আমি একটু বিরক্তই হলাম। এই মেয়েটা একবার কথা বলতে শুরু করলে আর কোনদিকে খেয়াল থাকে না।

আমি সীমার দিকে তাকিয়ে বললাম,

–কিছু বলবে?
–টিউশনি থেকে আসলে?
–হ্যা।
–কাল কিন্তু কলেজ শেষে তোমার জন্যে অপেক্ষা করবো।আসবে তো?
–দেখা যাক।

Bengali cute romantic story
Bengali cute romantic story

কথাটা বলে আর আমি দাড়ালাম না। সিড়ি দিয়ে  উপরের দিকে গেলাম।

সীমা আমাদের পাশের বাড়ীতে থাকে।নতুন এসেছে। মেয়েটা দেখতে সুন্দরী হলেও  কেমন যেন ওর প্রতি ফিলিংস কাজ করে না। আসলে এত সুন্দরী মেয়ে আমার প্রেমে কিভাবে পড়লো সেটাই বুঝিনা। তবে এত ভালতে আমার চোখ নেই। আমার চোখটা রিমার উপরেই আটকে গেছে।

Bengali romantic love story 2025

আজ কলেজ শেষে যখন বাড়ী  আসছিলাম তখনি সীমার সাথে দেখা। কলেজ ড্রেসে দাঁড়িয়ে আছে রিক্সার জন্যে।আমাকে দেখেই মেয়েটা একটু জোরেই ডাক দিল। আমি ওর দিকে তাকিয়ে রিক্সাটা থামানোর সাথে সাথেই মেয়েটা একদম রিক্সায় উঠে আমার দিকে চেপে বসলো। আসলে সিটটা একটু চাপা তাই হয়তো এমন মনে হচ্ছিলো।

আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই মেয়েটা বললো,

–রিক্সা পাচ্ছিলাম না। এখন ভালই হলো। আপনার সাথে যেতে পারবো।

সীমার  কথায় আমি মুখে হাসি ভাব আনার চেষ্টা করলাম। ইচ্ছে না থাকা সত্বেও মুখে হাসি ভাব রেখেই ওকে নিয়েই যেতে হচ্ছে। তবে ব্যপারটা ছিল একদম মনের বিরুদ্ধে।

খিদে ছিল না তাই রাতে না খেয়েই ঘুমিয়েছিলাম। ঘুমটা ভাঙলোও রিমার  ফোনে।এই সকাল বেলা রিমার  ফোন পেয়ে আমি একটুও অবাক হতাম না যদি না কালকের ঘটনাটা ঘটতো।আমি ফোনটা ধরতেই রিমা একটু নরম শুরেই বললো,

–একটু দেখা করতে পারবেন?
–কেন,আরও কিছুক্ষন বকবেন নাকি?
–সেটা দেখা করলেই বুঝতে পারবেন।

রিমার কথায় আমি সম্মতি জানালাম। ফোনটা কেটে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে রিমার  বলা জায়গাটার দিকে রওনা দিলাম।

অবশ্য এর আগে এখানে কখনও আসা হয়নি। আসলে এখানে যারা আসে তারা হয় বউ নিয়ে আসে নয়তো গার্লফ্রেন্ড। আর আমার যেহেতু এই দুটোর কোনটাই নেই সেহেতু আসাও হয়নি।

আমি আসতেই দেখি রিমা এসে হাজির। ছোট্ট একটা বেঞ্চে বাচ্চা মেয়েদের মত গুটিসুটি মেরে বসে আছে। আমি রিমার  সামনে এসে দাড়াতেই মেয়েটা উঠে দাড়ালো। আমার দিকে ঠিক মতো চোখ তুলে তাকাতেও পারছে না মেয়েটা।হয়তো লজ্জায়। আমি কিছু বলার আগেই রিমা  বললো,

-সরি। আসলে মিমির  মিথ্যে বলাটা আমি বুঝতে পারিনি। তাছাড়া আমার রাগটা সেখানে ছিল না।

রিমার  কথায় আমি ওর দিকে আবারও তাকালাম। মেয়েটা ঠিক আগের মতই মাথা নিচু করে আছে।আমি আগেই বুঝেছিলাম যে আমার প্রতি ওর রাগটা জল চাওয়াতে হয়নি। এতে অন্য কোন ব্যপার আছে।

আমি রিমির  দিকে তাকিয়ে বললাম,

–রাগের কারনটা জানতে পারি?
–আসলে কাল বাড়ী  যাওয়ার সময় আপনার সাথে একটা মেয়েকে দেখেছিলাম, রিক্সায় বসে যাচ্ছেন।
–এতে রাগের কি হলো?
–আপনার পাশে অন্য কোন মেয়েকে আমার সহ্য হয় না।

কথাটি বলে রিমা ওর মাথাটা আরও একটু নিচু করলো। তারমানে কালকে সীমার  সাথে ও আমাকে দেখে ফেলেছিল।আর সেই রাগটাই সন্ধায় আমার উপর খাটিয়েছে।

সীমার সম্পর্খে রিমাকে  সবকিছু বলে ফোনটা বের করে ওর দিকে এগিয়ে দিয়ে বললাম,

–দেখোতো এই মেয়েটাকে সহ্য হয় কিনা।

আমার কথায় রিমা আমার দিকে তাকিয়ে ফোনটা হাতে নিল। পিকটা দেখে কি বুঝলো আমি নিজেও বুঝলাম না। মেয়েটা এসে আমার পাশে দাঁড়িয়ে একটা সেলফি তুলে বললো,

–এরকম ঘোলা পিক মানায় না, এখন থেকে এইটা স্ক্রিনে রাখবেন ।
রিমার  কথায় আমি মুচকি হেসে বললাম,
–আচ্ছা রাখবো।
–কিন্তু তুমি আমার এই পিক কখন তুলছো?
–অনেক দিন আগেই। আমাকে তখন নাস্তা দিচ্ছিলে।
–লুকিয়ে কারও পিক তোলা ঠিক না।
–এখন তো জানলে।
–হুম।
–ভালবাসো?

Bengali cute love story

আমার কথায় রিমা মুচকি হেসে আমার হাতটা শক্ত করে ধরে বললো,
–হুম বাসি,অনেক ভালবাসি।
আমি এবার রিমার কানের কাছে মুখ নিয়ে বললাম,
–ওদিকে সীমা  অপেক্ষা করছে।যেতে হবে।
–কি বললে তুমি। ওই ফাজিল মেয়েটার কাছে যাবে।পা একদম ভেঙে ফেলবো।

পা ভাঙার কথা শুনে আমার মুখ থেকে হাঁসি বেরিয়ে  গেলো।
আমি রিমাকে  আর কিছু না বলে ওর হাতটা শক্ত করে ধরলাম। 

রিমা আর আমি হাঁটছিলাম ধীরে ধীরে। একটা ছোট পুকুরের পাশে এসে বসলাম। রিমা একটু দূরে তাকিয়ে ছিল, কিন্তু আমি অনুভব করছিলাম ওর মনের ভেতরে অনেক কথা জমে আছে।

আমি রিমার দিকে তাকিয়ে হাসিমুখে বললাম,
“তুমি এমন রাগ করলে, আমি কিন্তু সত্যি সত্যি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।”

রিমা হেসে বলল,
“তুমি বুঝতে পারো না, তোমার প্রতি আমার একটু বেশিই অধিকার। তাই অন্য মেয়েকে দেখলে গা জ্বলে যায়।”

আমি মজা করে বললাম,
“তাহলে কী করব? আমার ক্লাস ফাইভের ছাত্রীকেও পড়ানো বন্ধ করে দেব?”

রিমা আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
“পড়াবে, তবে তোমার একমাত্র ছাত্রী আমিই হব। আর কারও জন্য মিষ্টি কথা থাকবে না।”

ওর কথায় আমরা দু’জনেই হেসে উঠলাম। হঠাৎ রিমা একটু গম্ভীর হয়ে বলল,
“তুমি কি জানো, আমি তোমাকে কবে থেকে পছন্দ করি?”

আমি অবাক হয়ে বললাম,
“তুমি আমাকে পছন্দ করো? এটা আমি জানতাম না!”

রিমা রাগ দেখিয়ে বলল,
“নাটক করতে হবে না। আমি জানি তুমি সব বুঝো।”

আমি আবারও মজা করে বললাম,
“ঠিক আছে, বলো তো, কখন থেকে শুরু হলো এই পছন্দের গল্প?”

রিমা মিষ্টি হেসে বলল,
“সেদিন, যেদিন মিমিকে পড়াতে এসেছিলে। তুমি প্রথম দিনেই মিমিকে এত যত্ন নিয়ে পড়াচ্ছিলে, দেখে আমার মনে হয়েছিল তুমি শুধু ভালো শিক্ষকই নয়, ভালো মনের মানুষও।”

আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম,
“তাহলে আমি কি এখন তোমার কাছেও শিক্ষক?”

রিমা হেসে বলল,
“তুমি আমার সবকিছু।”

এই কথায় আমি কিছুক্ষণ চুপ হয়ে গেলাম। কী বলব, বুঝতে পারছিলাম না। রিমার এই অকপট ভালোবাসা আমাকে একেবারে নাড়িয়ে দিয়েছিল। আমি ওর হাতটা ধরে বললাম,
“তুমি জানো, আমি তেমন কিছুই নই। আমার খুব বেশি কিছু দেওয়ার মতো ক্ষমতা নেই। তবুও তুমি যদি পাশে থাকো, আমি সবকিছু করতে পারব।”

রিমা আমার হাতটা আরও শক্ত করে ধরে বলল,
“আমাকে কিছু দিতে হবে না। আমি শুধু তোমার ভালোবাসাটুকু চাই।”

আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি, সন্ধ্যা নেমে এসেছে। চারপাশে নরম আলো। এই আলোয় রিমাকে আরও সুন্দর লাগছিল। আমি ওকে বললাম,
“তুমি জানো, রিমা, আমি জীবনে অনেক বড় স্বপ্ন দেখেছি। কিন্তু কখনো ভাবিনি, তুমি এর মধ্যে এসে এমন জায়গা করে নেবে।”

রিমা হাসিমুখে বলল,
“তাহলে আজ থেকে আমরা একসঙ্গে স্বপ্ন দেখব। আর একসঙ্গে সেই স্বপ্ন পূরণ করব।”

আমি মাথা নাড়লাম। ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম,
“তাহলে আজ থেকে শুরু হোক আমাদের নতুন গল্প। একটা গল্প, যা ভালোবাসার, বিশ্বাসের, আর নতুন জীবনের।”

সেদিনের সেই সন্ধ্যা আর আমাদের প্রথম ভালোবাসার প্রকাশের মুহূর্তটা আমি কখনো ভুলতে পারব না। এটা ছিল আমাদের গল্পের নতুন শুরু।

Payel Mahato

I am Payel Mahato, a passionate storyteller who loves weaving emotions into words and crafting tales that touch hearts. As a Bengali love story writer, I specialize in creating narratives filled with romance, drama, and human connections that resonate deeply with readers.

---Advertisement---

Related Post

Leave a Comment