---Advertisement---

Bengali Emotional love story: ব্যাচেলারের প্রেম

Published On:
Bengali Emotional love story
---Advertisement---

ফোনটা একটার পর একটা বেজে যাচ্ছে…
স্ক্রিনে বারবার ভেসে উঠছে একটা নাম—“নীলা জান ❤️”
রিসিভ করার মতো শক্তিটুকুও নেই। শরীরে জ্বর, মাথা ঝিমঝিম করছে। চোখ বন্ধ করলে মনে হয়, চারপাশ অন্ধকার হয়ে আসছে।

অবশেষে কষ্ট করে ফোনটা হাতে তুলে নিলাম। ঠোঁট শুকিয়ে কাঠ। গলায় কাঁপুনির রেশ—
আমি: “হ্যালো…”
নীলা: “কোথায় ছিলে তুমি? আমি কতক্ষণ ধরে ফোন দিচ্ছি! খুব চিন্তা হচ্ছিল আমার…”
আমি: “না কিছু হয়নি…”
নীলা: “তুমি এমন কণ্ঠে কথা বলছো কেন? অসুস্থ লাগছে শুনতে।”
আমি: “না না… কিছু না। রাত জেগেছিলাম… তাই হয়তো…”
নীলা: “আবার রাত জেগেছো? আমি কতবার বলেছি রাতজাগা তোমার শরীরের জন্য ঠিক না!”
আমি: “সরি জান। আসলে একটু অ্যাসাইনমেন্ট ছিল…”
নীলা: “তা ঠিক আছে। এখন অনেক বেলা হয়েছে, খেয়ে নিও তাড়াতাড়ি।”
আমি: “তুমি খেয়েছো?”
নীলা: “তুমি না খেলে আমি খাই কী করে? জানো তো, তোমার ওপর আমার কতো টেনশন থাকে…”
আমি: “সরি… তুমি খেয়ে নাও। আমি একটু পরে…”
নীলা: “বাই…”
আমি: “বাই…”

[ আসসালামুআলাইকুম। আমি নীল। পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য একজন ব্যাচেলর। আর যে মেয়েটা আমার জীবনে রং ছড়িয়ে দিয়েছে, তার নাম নীলা। দুই বছরের সম্পর্ক। রাগ-ভালোবাসা-অভিমান—সব কিছুতেই ভরা ওর হৃদয়টা। ]

শরীরটা খুব খারাপ, কিন্তু জানাতে মন চায় না। ওর সামনে নিজেকে দুর্বল দেখাতে চাই না। তাছাড়া সামনে ওর পরীক্ষা, এখন ওর মন খারাপ হলে ঠিকমতো পড়তেও পারবে না।
পকেট ফাঁকা, মাস শেষ… ঢাকায় থাকা ব্যাচেলর জীবনের যন্ত্রণাগুলো যেন আজ বেশি করে কামড়াচ্ছে।
বুয়ার দেখা নেই, ভাত-ডালও মেলে না। পানি খেয়েই কাটিয়ে দিচ্ছি।

তখনই আবার ফোন—নীলা।
আমি: “হ্যালো…”
নীলা: “নিচে আসো।”
আমি: “কেন?”
নীলা: “আসতে বলছি তো।”

কোনো উপায় না দেখে নিচে নামলাম। দেখি রিকশার পাশে দাঁড়িয়ে আছে আমার সেই রাগী পরী—রাগে তার মুখটা লাল হয়ে গেছে।
আমি: “জান, তুমি এসেছো!”
নীলা: “রিকশায় ওঠো, কথা বলো না বেশি।”
আমি: “পার্কে যাচ্ছি বুঝি?”
নীলা: “চুপ করে বসে থাকো!”

আমি চুপ।
রিকশার ঝাঁকুনিতে একটু মাথা ঘুরে গেল।
নীলা: “তুমি অসুস্থ ছিলে, আমাকে বলোনি কেন? কিভাবে পারো এভাবে কষ্ট পেতে?”
আমি: “টাকা ছিল না। আর তোমায় চিন্তায় ফেলতে চাইনি।”
নীলা: “তোমার কাছে টাকা নেই, তাই বলে না খেয়ে থাকবে? ঔষধ খাবেনা? আমি কে তোমার? শুধুই একটা নাম?”
আমি: “তুই আমার সব। আই লাভ ইউ।”

(একটা ছোট্ট চুমু ওর কপালে দিলাম।)
রিকশাচালক হা করে তাকিয়ে আছে!
আমি (হাসতে হাসতে): “কিরে ভাই, আগে প্রেম দেখোনি?”
নীলা (হেসে): “আই লাভ ইউ টু, পাগলটা আমার।”

আমরা পৌঁছালাম হাসপাতালে। ডাক্তার চেক-আপ করলো, কিছু টেস্ট দিলো।
নীলা আমার হাত ধরে বসে রইলো পুরো সময়, যেন আমি ওর পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ।
ঔষধগুলোও কিনে দিলো।

নীলা: “দয়া করে এবার নিয়ম করে ঔষধ খাবে।”
আমি: “তুই থাকলে সব নিয়ম মেনে চলতে ইচ্ছা করে।”

চোখে জল নিয়ে বললো—
নীলা: “তুই বলিস না, আমার কিছু করার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু করতে পারলাম না। খুব কষ্ট হয় রে…”
আমি ওর চোখের জল মুছে দিলাম।

আমি: “তুই আমার জন্য যা করিস, সেটা কোনো দামী উপহার থেকেও বড়।”
নীলা: “চলো কিছু খেয়ে নিই। আমি তো এখনো খাইনি।”
আমি: “তুইও খাসনি?”
নীলা: “তুই না খেয়ে থাকলে আমি কিভাবে খাই বলো?”

(ওই দিন, ও নিজের হাতে আমায় খাইয়ে দিলো। একেকটা লোকমায় যেন ভালোবাসার ছোঁয়া মাখানো ছিল।)

ফিরে আসার সময় ওর চোখে আবারও জল।
নীলা: “তুই কষ্ট পেলেই আমার প্রাণ কেঁদে উঠে।”
আমি: “দুইদিন পরেই ঠিক হয়ে যাবো জান। কাঁদিস না।”
নীলা: “ভালোবাসলে মানুষ এমন পাগলই হয় জানিস?”

আমি ওকে জড়িয়ে ধরলাম।
আকাশে তখন সন্ধ্যার আলো…
আর আমার জীবনে ঠিক তেমন এক আলো—নীলা।

ভালোবাসা মানে শুধু প্রেমের কথা নয়,
ভালোবাসা মানে পাশে থাকা, যত্ন নেওয়া,
আর নীরবে চোখের জলে ভালোবাসার কবিতা লেখা।

জ্বরটা একটু কমেছে। শরীরে এখনো দুর্বলতা। কিন্তু মনের ভিতরে একটা আলাদা শান্তি—নীলা পাশে ছিল, আছে, থাকবে।
রাতে বারবার ফোন করে দেখেছে আমি ওষুধ খেলাম কি না।
হোয়াটসঅ্যাপে রিমাইন্ডার:
👉 “ঔষধ খেয়ে নিও, না খেলে কপালে প্যাঁদান!”
👉 “ঘুমাও এখন, মুভি দেখা বন্ধ করো।”
👉 “ভালো থাকলে তবেই ভালোবাসা বাঁচে… মনে রেখো 💙”

তবে গল্প এখানেই থেমে থাকে না।

পরদিন সকালে হঠাৎ ফোন—
নীলা: “আজ দুপুরে ফ্রি তো?”
আমি: “হ্যাঁ জান। তোকে দেখার জন্যই তো ফ্রি আছি।”
নীলা: “তাহলে রেডি হয়ে থাকো, একটা সারপ্রাইজ আছে।”

তাড়াতাড়ি গাট্টাগোট্টা জামা পড়ে, চুলে হাত দিয়ে নিচে নেমে এলাম।
রিকশা না—আজ গাড়ি!

আমি অবাক—
আমি: “এই গাড়ি কোথা থেকে এলো?”
নীলা (হাসতে হাসতে): “বাবার গাড়ি। বলেছি একজন স্পেশাল মানুষকে একটু দেখা করাতে হবে।”

আমার বুকের ধুকপুকানিটা তখন আকাশ ছুঁয়েছে।
আমি: “কার সঙ্গে দেখা করাবি?”
নীলা: “চুপচাপ বসো। ওখানে গেলে বুঝবে।”

গাড়ি গিয়ে থামলো গুলশানের এক রেস্তোরাঁর সামনে। ভেতরে ঢুকে দেখি—একজন ভদ্রলোক বসে আছেন।
নীলা: “বাবা, উনি নীল।”
আমি (ভেতরে কাঁপুনি): “আসসালামু আলাইকুম, স্যার।”
নীলার বাবা: “ওয়ালাইকুম আসসালাম। শুনেছি, তুমি আমার মেয়েকে ভালোবাসো।”
আমি: “জ্বি স্যার, খুব বেশি। শুধু ভালোবাসা না, ওকে একদিন নিজের জীবনসঙ্গী করতে চাই।”

এক মুহূর্তের জন্য চারপাশটা থেমে গেল।
ভদ্রলোক হেসে বললেন—
“বুঝে শুনে ভালোবাসা মানে দায়িত্ব বুঝতে পারা। চাকরি খোঁজো। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করো। তারপর আমার মেয়ে তোমার হবে।”

নীলা তখন আমার পাশে চুপচাপ বসে। আমি ওর হাত চেপে ধরলাম।
ও কিছু বলল না, শুধু চোখ দিয়ে বললো—“আমি আছি, সব সময়।”

জীবন যেন নতুন গতি পেল।
দিন রাত মিলে চাকরি খোঁজার যুদ্ধ।
সিভি বানানো, ইন্টারভিউ, না বলা রিজেকশন…
তবু একটা কথাই মনে পড়ে—“তুই যদি থাকিস, সব পারবো জান।”

নীলা প্রতিদিন সকালে বলতো—
📩 “আজ নতুন শুরু করো। আজ হয়তো তোমার দিন।”
📩 “হেরে গেলে আমিও হেরে যাবো। জয় যেন আমাদের হয় জান।”

ইমেইলে একটা মেইল—
“Congratulations! You are selected for the Software Engineer position at Jobcode.”
চোখে পানি চলে এল। আমি নীলাকে ফোন করলাম—
আমি: “জান! আমি চাকরি পেয়ে গেছি!”
নীলা (আত্মার ভেতর থেকে): “আমি জানতাম, তুই পারবি। আজ থেকে তুই শুধু ব্যাচেলর প্রেমিক না… আমার হবু বর।”

একটা ছোট্ট হলে, সাদামাটা সাজে, খুব কাছের কিছু মানুষের উপস্থিতিতে…
নীলা আমার হয়ে গেল।

আমি ওর কপালে সিঁদুর পরিয়ে বললাম—
“আজকের দিনটা আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর দিন। কারণ আজ আমার ভালোবাসা শুধু অনুভব না… আমার হয়ে গেল চিরতরে।”

নীলা ফিসফিস করে বলল—
“যদি আবার জ্বর হয়, আমি ঠিক ওষুধ খাওয়াবো… তবে একটু চুমু দিয়ে।”
আমি হেসে বললাম—
**”তোর চুমুতে সব রোগ ভালো হয়ে যায় জান।”

ভালোবাসা মানে শুধু সিনেমার মতো রোমান্স নয়।
ভালোবাসা মানে দাঁড়িয়ে থাকা, যখন সবাই ছেঁড়ে যায়।
ভালোবাসা মানে একে অপরের জন্য যুদ্ধ করা।

আমরা ব্যাচেলরদের প্রেম হয়তো সস্তা বলে কেউ কেউ হাসে,
কিন্তু জানেনা…
এই প্রেমেই লুকিয়ে থাকে সবচেয়ে নিখাদ ভালোবাসার গল্প।

Payel Mahato

I am Payel Mahato, a passionate storyteller who loves weaving emotions into words and crafting tales that touch hearts. As a Bengali love story writer, I specialize in creating narratives filled with romance, drama, and human connections that resonate deeply with readers.

---Advertisement---

Related Post

Leave a Comment