---Advertisement---

Bengali marriage love story: চাঁদের আলোয় ভালোবাসার গল্প

Published On:
Bengali marriage love story
---Advertisement---

আজকের দিনটা আমার জীবনের অন্যতম বিশেষ দিন।
আজ আমার বিয়ে। পরিবারের পছন্দেই হচ্ছে। আমি আবির, আর আমার জীবনের নতুন অধ্যায়ের সঙ্গী মেঘা—আমার বাবার বন্ধুর মেয়ে। মেঘা অসাধারণ সুন্দরী। তার মুখের মায়াবী হাসি যেন সমস্ত ক্লান্তি দূর করে দেয়। আমাদের প্রেমের বয়স তিন বছর। তিনটা বছর! কত স্মৃতি, কত হাসি, কত অভিমান জমে আছে আমাদের মধ্যে।

বিয়েটা বেশ জমকালো হলো। বন্ধু-বান্ধব আর আত্মীয়স্বজনের ভিড়ে সবকিছু যেন স্বপ্নের মতো লাগছিল। আমি খুশি। তবে এই খুশির মাঝেও আমার বন্ধুরা সুযোগ পেলেই মজা নিচ্ছে। বিশেষ করে যখন জানতে পারলো আজ আমার বাসর রাত। তারা আমাকে বেশ ভালোভাবে ‘ট্রল’ করে দিচ্ছে।

রাতে ধীরে ধীরে ঘরে ঢুকলাম। মনটা একটু চিন্তায় ভরা। এই বিশেষ রাতটা কেমন যাবে, সেটাই ভাবছি। ঘরে ঢুকতেই দেখলাম মেঘা আমার দিকে তাকিয়ে হালকা হাসি দিলো। সে একেবারে লক্ষ্মীমন্ত বউয়ের মতো সালাম করলো। কিন্তু তারপরই আমার ঠোঁট ফসকে বেরিয়ে গেল একটা কথা—

“বেঁচে থাকো বউ, বেঁচে থাকো। তুমি যেন হাজার সন্তানের মা হও।”

ব্যস, বিপদ শুরু! মেঘার মুখের হাসি মুহূর্তে উধাও। চোখ রাগে জ্বলজ্বল করছে।
“তোমার সাহস তো কম না! দাঁড়াও, তোমাকে শাস্তি দেখাচ্ছি!”

আমি সঙ্গে সঙ্গে মাফ চাইলাম। “বউ, সরি! ভুল হয়ে গেছে। আর হবে না। সত্যি বলছি।”

“ঠিক আছে। এবার মাফ করলাম। তবে সাবধান! ভুলে গিয়েও আর এমন কিছু বলবে না।”

আমি একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম। তখনই ফোনটা বাজলো। দেখলাম ফারিহা ফোন করেছে। আমার পুরোনো বন্ধু। মেঘা জানে ফারিহা আমার বন্ধু, তবুও ওর ব্যাপারে সে একটু বেশি রেগে থাকে। মনে হয়, হয়তো ও মনে করে ফারিহার সঙ্গে আমার কিছু একটা আছে।

Bangla Valobasar Golpo 2025

ফোন রিসিভ করলাম, আর ভয়ে ভয়ে বললাম, “হ্যালো।”
ওপাশ থেকে ফারিহা বলল, “কিরে, তোর গলা কাপছে কেন? কিছু হয়েছে নাকি?”
আমি হেসে বললাম, “না রে। বউকে জড়িয়ে ধরে আদর করছিলাম, তাই…”

কথাটা শেষ করার আগেই মেঘা ফোনটা কেড়ে নিয়ে ফারিহার নাম দেখে আরও ক্ষেপে গেল।
“এই ডাইনির সঙ্গে তোমার কী সম্পর্ক?”

আমি যতই বোঝাতে চেষ্টা করি, মেঘা কিছুতেই শুনতে চায় না।
“আজ তোমার ঘরে জায়গা নেই। বাইরে গিয়ে থাকো!”

বন্ধুরা একের পর এক ফোন দিয়ে জানতে চাইছে বাসর রাত কেমন কাটছে। আর আমি বাইরে দাঁড়িয়ে চাঁদের দিকে তাকিয়ে মন খারাপ করে বসে আছি। মেঘার রাগ আমি জানি। কিন্তু এমন দিনেও এতটা রাগ করবে, তা ভাবিনি। চাঁদের আলোয় মেঘার প্রথম দেখার দিনের কথা মনে পড়ল।

প্রথম দেখার দিনটা ছিল খুব স্পেশাল।
আমি নিজের ঘরে গিটার বাজাচ্ছিলাম। কখন যে মেঘা পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল, খেয়াল করিনি। হঠাৎ তাকিয়ে দেখি, একটা মিষ্টি মেয়ে আমার পাশে। অবাক হয়ে ভাবছিলাম, আমি স্বপ্ন দেখছি নাকি। ভেবে মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরেছিলাম। আর তখনই সে চিৎকার করে পুরো বাসা মাথায় তুলল। সবাই দৌড়ে এলো। আম্মু আমাকে চিন্তিত মুখে জিজ্ঞেস করলেন, “এটা কী করলি?”

তখনই মা পরিচয় করিয়ে দিলেন, “এ হলো মেঘা। তোর বাবার বন্ধুর মেয়ে।”

New Bengali romantic love story 2025

তারপর থেকেই মেঘার প্রতি একটা টান অনুভব করতাম। তার শেয়ারিং-কেরিং আমাকে মুগ্ধ করেছিল। ধীরে ধীরে আমি মেঘার প্রেমে পড়ে গেলাম। তবে সে খুব রাগী। আমি যদি কোনো মেয়ের সঙ্গে কথা বলতাম, তো সে রাগ করে আগুন হয়ে যেত।

হঠাৎ অনুভব করলাম কারো মিষ্টি স্পর্শ।
ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি মেঘা। সে ধীরে ধীরে কাছে এসে বলল,
“বাবুটার রাগ হয়েছে?”

আমি চুপ করে আছি। মেঘা আরও বলল,
“কে বাবুটাকে বকেছে? আমি?”

আমার গাল টেনে বলল, “এই রাগ কি আমার জন্য? আচ্ছা, সরি! আমার বাবুটা রাগ করিস না। এবার ঘরে চল।”

মেঘা আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল ঘরের ভেতর। আমার অভিমান পুরো ভেঙে গেল। তারপর সে খাটের ওপর ধাক্কা দিয়ে আমাকে শুইয়ে দিল। তার চোখে যেন ভালোবাসার সমুদ্র।

সেই রাতে শুধু একটি কথাই মনে হলো—
“মেঘা আমার জীবন, আর আমি তার চিরদিনের ভালোবাসা।”

রাতটা ছিল এক অন্যরকম অনুভূতির, যেখানে অভিমান আর ভালোবাসা একসঙ্গে মিশে ছিল। সকালে ঘুম থেকে উঠতে গিয়ে দেখি মেঘা পাশে নেই। বিছানায় তার ঘুমের ছাপ আর বালিশে তার চুলের কয়েকটা গোছা পড়ে আছে। মেঘার ঘ্রাণ যেন এখনো বিছানায় লেগে আছে। এটাই তো আমার নতুন জীবনের শুরু।

ঘর থেকে বের হয়ে দেখি, রান্নাঘরে মেঘা ব্যস্ত। মাথায় আঁচলটা ঠিক করে নেওয়ার চেষ্টা করছে, আর মাঝে মাঝে কপালের ঘাম মুছছে। আমি দরজার পাশে দাঁড়িয়ে চুপচাপ তাকে দেখছি। সে আমাকে দেখেনি, কিন্তু তার ছোটখাটো কাজগুলো দেখেও আমার ভেতর অদ্ভুত একটা ভালোলাগা তৈরি হলো।

মেঘা রান্না করতে করতেই বলল, “তুমি কি গোয়েন্দাগিরি করছো? এইভাবে দাঁড়িয়ে দেখছো কেন?”
আমি একটু অপ্রস্তুত হয়ে বললাম, “তোমাকে দেখতে ভালো লাগছে।”
সে হেসে বলল, “তুমি তো কথা বলার ওস্তাদ। এবার যাও, হাত-মুখ ধুয়ে এসে ব্রেকফাস্ট করো।”

Bengali marriage love story

প্রথম দিনের ছোটখাটো ঝামেলা:
ব্রেকফাস্টের টেবিলে বসে আছি। মেঘা আমার সামনে গরম লুচি আর আলুর দম এনে রাখল। আমি খেতে শুরু করতেই সে বলল, “শুনো, আজ আমার বাবার বাড়ি যেতে হবে। মা-বাবা তোমার সঙ্গে দেখা করতে চায়।”
আমি একটু হাসি চাপার চেষ্টা করে বললাম, “তুমি কি আমাকে ভয় দেখাতে চাইছো? শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার কথা শুনলেই কেমন যেন অস্বস্তি লাগে।”
মেঘা চোখ বড় করে বলল, “আচ্ছা! তুমি কি ভেবেছিলে, বিয়ের পর এমনিই তোমার দাসী হয়ে থাকব? আমাকে নিয়ে একটু ‘শো-অফ’ করো না!”

আমি কিছু বলার আগেই সে আবার রেগে গেল, “আর শোনো, আজকে তুমি ফারিহার ফোন ধরবে না। আমি তোমার সব কল লিস্ট চেক করব।”
আমি হাসতে হাসতে বললাম, “বউ, তুমি তো পুরো সিআইডি অফিসার হয়ে গেছো।”
সে গাল ফুলিয়ে বলল, “যদি বেশি কথা বলো, তাহলে আজ রাতে আবার বাইরে ঘুমাতে হবে!”

মেঘার বাবার বাড়ি:
মেঘার বাবার বাড়ি যেতে যেতে সে রাস্তার পাশের ছোট ছোট দোকানগুলোতে থেমে থেমে কিছু না কিছু কিনতে লাগল। প্রথমে লাচ্ছা, তারপর সন্দেশ। আমি বললাম, “বউ, তুমি কি পুরো বাজারটা কিনে নেবে?”
সে বলল, “তোমার শ্বশুর-শাশুড়ির জন্য কিছু কিনতে পারো না?”
আমি মজা করে বললাম, “তোমার বাবার বাড়ি যাচ্ছি বলে এত আয়োজন? এক কাজ করো, আমাকে একটা মালা পরে নাও। আমি যেন বলি, ‘মেঘার আসল জামাই আমিই!’”

সে গাল টিপে বলল, “তুমি কি সারাক্ষণ মজা করতেই থাকবে? একটু সিরিয়াস হও!”

শ্বশুরবাড়ির ঘটনা:
বাড়ি পৌঁছাতেই মেঘার বাবা-মা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের অভ্যর্থনা জানালেন। শ্বশুরমশাই বেশ মজার মানুষ। আমাকে দেখে বললেন, “আবির, তোমার মনে হচ্ছে খুব ভালো ছেলে। কিন্তু মেঘা বলেছে, তুমি নাকি একটু বেশি মজা করো!”
আমি বললাম, “জীবনে আনন্দ ছাড়া কি চলে?”
তখন শাশুড়ি হেসে বললেন, “ঠিকই বলেছো। তবে মেঘাকে সামলাতে পারলে বাঁচবে। ওকে রাগালে কিন্তু তোমার খবর আছে!”

মেঘা পাশ থেকে বলল, “মা, ওকে এত ভয় দেখাচ্ছো কেন?”
শ্বশুরমশাই বললেন, “ওকে ভয় দেখানোর দরকার নেই। তুমি একাই যথেষ্ট!”

শ্বশুরবাড়িতে মেঘার সঙ্গে কাটানো সময়টা ছিল অন্যরকম। মেঘা তার পরিবারের সঙ্গে হাসিখুশি গল্প করছিল। মাঝে মাঝে আমাকে দেখিয়ে বলছিল, “দেখো, তোমাদের জামাই কিন্তু খুব পাকা। আমার কথার অবাধ্য হলে একদিন ঠিক তার খবর নেব।”

Best Bangla romantic love story 2025

রাতের ফিরে আসা:
ফিরে আসার পথে গাড়িতে আমরা দুজন চুপ ছিলাম। হঠাৎ মেঘা আমার কাঁধে মাথা রেখে বলল, “তোমার সঙ্গে জীবনটা যে এত সুন্দর হবে, সেটা আমি কখনো ভাবিনি। কিন্তু তুমি যেন কোনোদিন আমাকে আঘাত দিও না।”
আমি তার মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম, “তুমি তো আমার জীবন, তোমাকে আঘাত করার কথা ভাবতেই পারি না।”

রাতে আমরা দুজন বিছানায় বসে গল্প করছিলাম। গল্পের মাঝেই সে আবার ফারিহার প্রসঙ্গ তুলল।
“তুমি আজ ফারিহার কথা একবারও বলোনি। কী ব্যাপার?”
আমি বললাম, “তোমার সঙ্গে সময় কাটাতে এত মগ্ন ছিলাম যে ফারিহার কথা মনে পড়েনি।”

মেঘা হেসে বলল, “তাহলে ঠিক আছে। তোমাকে আমি ‘পাস মার্কস’ দিলাম।”
আমি বললাম, “পাস মার্কস কেন? পুরোপুরি ফার্স্ট ক্লাস পাওয়ার যোগ্য।”
সে মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল, “তুমি আমার ফার্স্ট ক্লাস স্বামী!”

এভাবেই শুরু হলো আমাদের জীবনের নতুন অধ্যায়।
প্রথম দিনের ছোট ছোট ঘটনা, রাগ-অভিমান আর ভালোবাসা নিয়ে আমাদের সংসার ধীরে ধীরে জমে উঠছে।

Payel Mahato

I am Payel Mahato, a passionate storyteller who loves weaving emotions into words and crafting tales that touch hearts. As a Bengali love story writer, I specialize in creating narratives filled with romance, drama, and human connections that resonate deeply with readers.

---Advertisement---

Related Post

Leave a Comment