---Advertisement---

Bengali new romantic Love story: আমাদের ছোট্ট পৃথিবী

Updated On:
Bengali new romantic Love story
---Advertisement---

আজ অনেক দ্বিধাদ্বন্দ্ব নিয়ে শ্বশুরমশাইকে ফোন দিলাম। বুকের ভেতর কেমন যেন ধকধক করছে।

📞 “আব্বা, নিশিকে আর পড়াতে পারবো না। বাসায় ঝামেলা হচ্ছে, সংসারটা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।”

শ্বশুরমশাই গম্ভীর স্বরে কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন। তারপর আস্তে বললেন,
💬 “বাবা, মেয়েকে তোমার হাতে দিয়েছি, তার সব ভালো-মন্দ দেখার দায়িত্ব তোমার। তুমি যেটা ভালো মনে করো, সেটাই করো।”

ফোন রেখে আমার বুকের মাঝে যেন এক অদ্ভুত শূন্যতা নেমে এলো। এটা আমি কি করলাম! বিয়ের দিন শ্বশুরমশাই নিশিকে আমার হাতে দিয়ে বলেছিলেন—
🗣️ “বাবা, নিশির লেখাপড়ার খুব শখ, পারলে একটু ব্যবস্থা করো।”

আমি সেদিন কথা দিয়েছিলাম। আজ আমি নিজেই সেই কথা ভেঙে দিলাম!

তখনই পিছন থেকে দুটো নরম হাত জড়িয়ে ধরল আমাকে। কোমল একটা কণ্ঠস্বর কানের পাশে ধরা দিলো—
🥺 “সরি! ভুল হয়ে গেছে। প্লিজ, মাফ করে দাও।”

নিশির গলায় সেই চিরচেনা মিষ্টি সুর। রাগ ধরে রাখা কঠিন! কিন্তু নিজের মান বজায় রাখার জন্য বললাম,
😠 “এতক্ষণ ঝগড়া করলি, এখন আর কোনো ‘সরি’ শুনতে চাই না।”

নিশির চোখ ভিজে উঠল। ওর কাঁপা কণ্ঠস্বর শুনেই বুকের ভেতর কেমন যেন মোচড় দিয়ে উঠল।
🥹 “তোমার সাথে আর ঝগড়া করব না, শুধু বলো তুমি কি আমাকে আর ভালোবাসো না?”

আমি চুপ। নিশি সামনে এসে আমার শার্টের কলার চেপে ধরে বলল,
🗣️ “কথা বলো না কেন? ভালোবাসো না আমাকে?”

আমি নিশির থুতনিটা ধরে মুখটা একটু ওপরের দিকে তুললাম। মেয়েটার গাল জলে ভিজে গেছে, চোখগুলো টলমল করছে।
❤️ “ইশশ রে! আমার লক্ষ্মী বউটা তো কাঁদতে কাঁদতে পুরো দু’গাল ভিজিয়ে ফেলেছে!”

নিশি ঠোঁট ফুলিয়ে বলল,
😡 “তুমি যে আমাকে না জানিয়ে আব্বাকে ফোন দিয়েছ, এটা কি ঠিক হয়েছে?”

আমি কিছু বলতে যাব, এমন সময় নিশি চোখ গোল গোল করে বলল,
😡 “আর একটাও কথা বললে কিন্তু আমি সত্যি বাবার বাড়ি চলে যাব!”

আমি হেসে ওকে জড়িয়ে ধরে বললাম,
😍 “তাহলে যাও, কিন্তু যাওয়ার আগে আমাকে একটু চুমু খেয়ে যেও!”

নিশি রাগ দেখিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিল, কিন্তু আমি ওকে আরো জোরে টেনে নিলাম বুকের মাঝে। নিশি আমার বুকে মাথা গুঁজে থাকল।

এই মেয়েটা যেন আমার পৃথিবী।

নিশির এই ছেলেমানুষিটা সবসময় আমাকে অবাক করে। যেমন সেদিন…

আমি সকালবেলা কলেজে যাব বলে চশমাটা খুঁজছি। হঠাৎ দেখি নিশি মিটিমিটি হাসছে। বুঝতে পারলাম, নিশ্চয়ই ও-ই লুকিয়েছে!
🧐 “নিশি, চশমাটা কোথায়?”
😂 “এখন থেকে তোমাকে চশমা ছাড়া কলেজ যেতে হবে!”

আমি অবাক! 😲
😠 “চশমা ছাড়া ক্লাস নেব কীভাবে?”
😏 “চশমা পড়লে তোমাকে স্মার্ট লাগে, কলেজের মেয়েরা তোমার প্রেমে পড়ে যাবে। সো, নো চশমা!”

ওর কথায় যতটা না রাগ লাগল, তার চেয়েও বেশি হাসি পেল! 😆

নিশির প্রতি মায়া যেন প্রতিদিন আরও বেড়ে যায়।

নিশির রান্না নিয়ে যত অভিযোগই করি, ওর হাতের খাবার আমার কাছে সবচেয়ে সুস্বাদু লাগে।
একদিন ওকে রান্নাঘরে পেয়াজ কাটতে দেখে দেখি চোখে পানি চলে এসেছে। আমি দৌড়ে গিয়ে ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম।
🤗 “কি হয়েছে? কাঁদছো কেন?”
😠 “আমার রান্না খেতে ভালো লাগে না, তাই বলো!”
😅 “আরে না, তোমার রান্নাই আমার সবচেয়ে প্রিয়!”

নিশি চোখ মুছে বলল,
😒 “অফিস থেকে ফিরে আজ যদি রান্নায় কোনো অভিযোগ করো, তাহলে বাবার বাড়ি চলে যাব!”
😆 “ওকে, রান্না যেমনই হোক, আমি পুরো প্লেট শেষ করব!”

নিশিকে বাংলা পড়ানোর সময় তো রীতিমতো মহাযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়!
একদিন ওকে পড়াচ্ছিলাম—
📖 “ঢাকা শহর জ্যামের শহর…”
😠 “ঢাকা শহর জ্যামের শহর…”
📖 “রিকশা-ই জ্যামের মূল কারণ…”
😅 “রিস্কা-ই জ্যামের মূল কারণ…”

আমি অবাক হয়ে তাকালাম।
😤 “নিশি, এটা রিকশা, রিস্কা না!”
😂 “হুমম… রিস্কা!”
😠 “রিকশা!”
😏 “ফাজিল মাস্টার!”

তারপরেই ঝগড়া, খুনসুটি শুরু!

একদিন ক্লাসের মধ্যে নিশির ফোন।
📞 “হ্যালো?”
😍 “এই, মুরগির ডিম কয়দিনে ফুটে বাচ্চা হয়?”
😳 “কী?! নিশি, পরে বলছি, এখন অফিসে আছি!”
😡 “না, এখনই বলো!”

আমার কলিগরা শুনে হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাচ্ছে! 😆
আমার চেহারাটা তখন লজ্জায় লাল! 😳

অফিস থেকে বেরিয়ে বাসায় আসতেই দরজায় ধুমধাম করে নক করলাম।
🚪 “নিশি! দরজা খোল! আজ একটা বিহিত করতেই হবে!”

নিশি দরজা খুলে বলল,
🤭 “কি হয়েছে জান্টুস?”
😠 “সময়ে অসময়ে এত ফোন দিস কেন?”
🥺 “তোমাকে না দেখে থাকতে পারি না…”

কিছুক্ষণ চুপ করে ওর দিকে তাকিয়ে থাকলাম। তারপর নিশিকে এক ঝটকায় বুকে জড়িয়ে নিলাম! 😍

দুই মাস পরে নিশির শ্বশুরমশাই আমাদের দেখতে এলেন। যাবার আগে কানে কানে বললেন,
👴 “বাবা, নিশির লেখাপড়ার শখ তো আছেই, তবে বাচ্চাদের প্রতিও ওর ভীষণ দুর্বলতা। এবার একটা নাতি-নাতনি এনে দাও!”

আমার মাথা চক্কর দিল! 😵

নিশির দিকে তাকাতেই দেখি সে ক্যালেন্ডারের পাতায় দিন গুনছে!
🤣 “এই জন্যই তুমি মুরগির ডিম বসিয়ে দিন গুনছিলে?”

নিশি লজ্জায় মুখ নিচু করে ফেলল।

এখন আর নিশি দিন গুনছে না, আমি-ই হাতের কড়া গুনে দিন হিসাব করছি।
🤰 “কবে যে বাবা হবো! আমার বউয়ের কোলে এক বাচ্চা, আর আমার সামনে আরেকটা ছোট নিশি!” 🥰

💖 ভালোবাসার গল্প কখনো পুরোনো হয় না, রোজ নতুন অনুভূতি নিয়ে ফিরে আসে… 💖

(২৮০ দিনের অপেক্ষা… আর তারপর!)

দিন যেন আর কাটতেই চায় না। রাতগুলো আরও লম্বা মনে হয়। নিশির মুখে এখন সারাক্ষণই এক কথা—”রিয়াদ, আমি মোটা হয়ে যাচ্ছি!”
আর আমার একটাই উত্তর—”তাতে কী? আমার চোখে তুমি আগের থেকেও সুন্দর লাগছো।”

আমার এই কথা শুনে ওর মুখ ফুলে ওঠে, আবার কিছুক্ষণ পরই খিলখিল করে হেসে ওঠে। এখন ওর মুড যেন ঝড়ের মতন বদলায়! এই হাসি তো পরক্ষণেই চোখ ভিজে আসে। আমার সদ্য বিবাহিত জীবন যে এতটা অদ্ভুত হবে, কে জানত?

নিশির জন্য এখন সবকিছুতেই একটা আলাদা ভালোবাসা কাজ করে। রান্না করতে গেলে মাঝে মাঝে মনে হয়, এভাবে কতদিনই বা পারবে? আমি একদিন ওকে বলেই ফেললাম—
“এই যে পাগলি, একটু বিশ্রাম নাও। আমিই না হয় রান্নাটা করে দেই!”

নিশি সাথে সাথে চোখ বড় বড় করে বলল, “ওহ্! আজ তুমি রান্না করবে?”
আমি মাথা চুলকে বললাম, “হ্যাঁ, কী এমন কঠিন ব্যাপার!”

ঠিক ৩০ মিনিট পর, রান্নাঘরের পুরো পরিবেশ এলোমেলো! কড়াইতে কিছু একটা পুড়ে কালো হয়ে গেছে। গন্ধে নিশি কিচেনের দরজা বন্ধ করে দিলো! আমি অপরাধীর মত দাঁড়িয়ে আছি।
নিশি হাসতে হাসতে বলল— “তোমাকে দিয়ে কিছু হবে না! শুধু রোমান্টিক কথা বললেই হবে না, কাজে ও পারদর্শী হতে হবে।”

আমার মনে হলো, রান্না করতে না পারলেও আমি ওর মনটা জিততে পেরেছি।

নিশি এখন আমাকে মাঝে মাঝেই চুপচাপ ভাবে বলে,
“রিয়াদ, আমি কী ভালো মা হতে পারবো?”

আমি অবাক হয়ে ওর দিকে তাকাই, তারপর ওর কপালে একটা চুমু খেয়ে বলি,
“তুমি যেমন একজন ভালো স্ত্রী, তেমনই ভালো মা হবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই!”

কিন্তু সত্যি বলতে, ভয়টা আমারও লাগছে। বাবা হওয়া যে এতটা উত্তেজনার সাথে সাথে দুশ্চিন্তাও নিয়ে আসবে, তা আগে বুঝিনি। নিশির যত্ন নেওয়া, ওকে খুশি রাখা, মাঝে মাঝে বাবার সাথে পরামর্শ করা—সবকিছু এক অদ্ভুত দায়িত্ববোধের জন্ম দিয়েছে আমার মধ্যে।

২৮০ দিনের দিন গুনতে গুনতে অবশেষে সেই সময় চলে এলো। নিশি হাসপাতালে ভর্তি। আমি নার্ভাস হয়ে বারবার করিডোরে হাঁটছি। মাঝে মাঝে ওর হাতটা শক্ত করে ধরে বলি,
“ভয় পেও না, আমি আছি তোমার পাশে!”

নিশি ক্লান্ত চোখে তাকিয়ে শুধু মাথা নেড়ে হাসে।

ঘণ্টাখানেক পর নার্স এসে বলল, “অভিনন্দন! আপনি বাবা হয়েছেন!”
আমি শ্বাস বন্ধ হয়ে আসার মতো অনুভব করলাম। একটা ছোট্ট প্রাণ আমারই অংশ!

বেডের কাছে যেতেই দেখলাম নিশি বিছানায় শুয়ে আছে, আর ওর কোলে ছোট্ট একটা পুঁচকে বাচ্চা।
আমি আস্তে করে বললাম—
“আমার লক্ষ্মী বউ, কেমন আছো?”
নিশি ক্লান্ত মুখে হাসল, আর বলল,
“তোমার মেয়েটা দেখতে তোমার মত হয়েছে!”

আমি ছোট্ট পরীর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। নিশির চোখে খুশির অশ্রু, আর আমার মনে শান্তির পরশ।

জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হলো… এখন থেকে শুধু আমি আর নিশি নই, আমাদের ছোট্ট পৃথিবীর আরেকটা সদস্যও রয়েছে! ❤️

Payel Mahato

I am Payel Mahato, a passionate storyteller who loves weaving emotions into words and crafting tales that touch hearts. As a Bengali love story writer, I specialize in creating narratives filled with romance, drama, and human connections that resonate deeply with readers.

---Advertisement---

Related Post

Leave a Comment