সমু আর নিলয়ের মধ্য খুব বন্ধুত্ব সব সময় তারা দুজনে থাকতো অল্প সময়ের জন্যও তারা ছাড়াছাড়ি হতো না। সমু ছিল একটু চালাক চতুর আর সাহসী টাইপের কাওকেই ভয় করতো না প্রায় , আর নিলয় ছিল ঠিক এর বিপরীত একটু বোকা টাইপ এর আর খুব লোকের সাথেই মিশতে পারতো , কিন্তু তাদের দুজনের মধ্য খুব বন্ধুত্ব এখনো প্রযন্ত কোনো জগড়া হয় নি তাদের দুজনের মধ্য। সমু প্রায় সব সময় নিলয়কে আগলে রাখতো
নিলয়কে ছেড়ে যাওয়ার ইচ্ছা তো একদম ছিল না কিন্তু আর কোনো উপায়ও ছিলো না। নিলয়ও মনে মনে কষ্ট পাই আর সমুকে ছাড়া একা হয়ে পড়ে, তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে পড়াশুনাতে মন দেয়।
কলেজ যাওয়ার সময় নিলয়ের একটি মেয়েকে খুব পছন্দ হয় , খবর নিয়ে জানতে পারে মেয়েটার নাম তিয়া।
তিয়া এই কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী আর ধনী পরিবারের মেয়ে। কিন্তু ভালোবাসা ধনী গরিব কাউকে দেখে না জাস্ট হয়ে যায়। নিলয়েরও সেইরকম হয়েছিল কিন্তু নিলয় একটু লাজুক হওয়ার জন্য তার মনের কথা তিয়াকে বলতে পারে নি শুধু তাকিয়ে যায় আর মনে মনে ভাবে আজ যদি সমু থাকতো তাহলে তার মনের কথা টা অবশ্যই বলে দিতো।
এদিকে তিয়াও ব্যাপার টা বুঝে নেই , সেও মজা নেওয়ার জন্য নিলয়ের সাথে নিজে থেকে পরিচয় শুরু করে। তারপর শুরু হলো তিয়া আর নিলয়ের পথ চলা
এরপর যেমন বাকি প্রেমিকদের হয় সেরকম এদেরও প্রিতিদিন কলেজে বসে আড্ডা দেওয়া , ঘোরাঘুরি আর দুজন দুজনের কেয়ারিং করা। এরই মধ্য নিলয়ের মনের অনেকটা জায়গা নিয়ে নেয় তিয়া , এমন এক পর্যায় আসে যে নিলয় তিয়াকে এতপরিমানে ভালোবেসে ফেলেছে যেন তাকে ছাড়া বাঁচা অসম্ভব।
Bengali sad romantic love story
হটাৎ একদিন নিলয় দেখে , তিয়া রিক্সাতে অন্য একটা ছেলের সাথে ঘুরছে। তিয়াকে ফোন করলে সে তুলছে না তাই কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে ছেলেটা কে ?
তিয়া :- বয়ফ্রেন্ড
নিলয় :- তাহলে আমি কে ?
টিয়া:- কেও না
নিলয়:- আমি তোমার বয়ফ্রেন্ড না
তিয়া :- ছিলে এখন নেই
নিলয়:- কি করেছি আমি যে তুমি আমার সাথে এমন করছো ?
তিয়া :- কিছু করো নি তবে আমি তোমার সাথে টাইম পাস করে ছিলাম
নিলয়:- কেন করলে এমন ?
তিয়া :- মজা করেছি। তুমি ভাবলে কি করে তোমার মতো হেবা টাইপের ছেলের সাথে প্রেম করবো। জাস্ট মজা করছিলাম
নিলয়:- কিন্তু আমি তো তোমায় সত্যি ভালোবেসেছি
তিয়া :- তো আমি কি করবো , এবার ভুলে যায়
নিলয়:- ভুলতে পারবো না
তিয়া :- তাহলে মরে যাও , আর হ্যাঁ আমাকে আর ফোন করে ডিস্টার্ভ করবে না
এই বলে চলে যাই তিয়া। তিয়ার এই ব্যাপার টা নিলয় মেনে নিতে পারে নি। নিলয় ছিল খুবই আবেগ প্রবণ তাই ভালোবাসার মানুষ টা কে ভুলা তার পক্ষে খুব কষ্টকর।
তিয়া মরতে বলেছে , তাই নিজেকে ঘর বন্দি করে ফেলে নিলয়। হটাৎ একদিন নিলয়ের মরদেহে পাওয়া যায় তার রুম থেকে আর নিলয় না ফিরে আসার দেশে চলে যাই।
সমু দেশে ফিরে আসে , নিলয়ের মৃত্যু টা সে মেনে নিতে পারে নি। কিছু দিন পর সমু নিলয়ের ডায়রি পড়ে জানতে পারে , তিয়া নামক কাউকে সে পছন্দ করতো। আর সে তারসাথে প্রতারণা করেছে মিথ্যা ভালোবাসার অভিনয় করেছে , যার জন্য নিলয় আস্তে আস্তে মির্ত্যু কোলে ঢলে পড়ে।
Bengali love story
তারপর থেকে সমু মনে মনে ঠিক করে নেয় তিয়া নিলয়ের সাথে যেমন করেছে সমুও তার সাথে তেমনই করবে, ব্যাস তার পর আর কি , সমু তার কাজে লেগে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানতে পারে তার সদ্য ব্রেকাপ হয়েছে তাই তিয়াকে প্রেমে ফেলার জন্য পৌঁছে যাই তাদের কলেজে। সমু এর স্টাইল ফ্যাশন দেখে তিয়াও সমুকে পছন্দ করতে শুরু করে দেয়।
সমু আর তিয়ার সম্পৰ্ক এগোতে থাকে। তিয়াকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া ফাস্টফুড খাওয়ানো , গিফট দেওয়া এসব দিয়েই চলতে থাকে তাদের সম্পৰ্ক। তিয়া ভাবে তার অন্য সব বয়ফ্রেন্ড থেকে সমু একটু আলাদা না চাইতে সব কিছু পেয়ে যাই , আর এদিকে সমু জাস্ট অভিনয় করে যাচ্ছে শুধু একটা সময়ের অপেক্ষায়।
অবশেষে সমুর অপেক্ষার দিন শেষ হয়। একদিন সমু মাসির বাড়ি বলে তিয়াকে এক জায়গায় নিয়ে যাই আর শারীরিক সম্পর্ক করে আর পুরোটা রেকর্ড করে নেই। আর তা সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়
Bangla valobasar golpo
তারপর থেকে তিয়া রাস্তায় বের হলে মানুষ অন্য চোখে দেখে। সমু সব যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় চোখে আঙ্গুল দিয়ে মনে করিয়ে দেয় নিলয়ের কথা , মনে করিয়ে দেয় একটা নিষ্পাপ ভালোবাসার কথা ম মনে করিয়ে দে নিলয়ের পাগলের মতো ভালোবাসার কথা। তাই সে প্রতিশোধ নিয়েছে
প্রতিশোধের পরে শুরু হয় নতুন গল্প
সমু যখন তিয়ার জীবন থেকে সরে যায় এবং তাকে তার কৃতকর্মের জন্য শাস্তি দিয়ে নিলয়ের আত্মাকে শান্তি দিতে চায়, তখন একসময় সমুর নিজের মনেও একটা অদ্ভুত শূন্যতা তৈরি হয়। প্রতিশোধ নেওয়ার পরে সে বুঝতে পারে, তার জীবনেও একটা ফাঁকা জায়গা রয়ে গেছে। নিলয়ের স্মৃতি তাকে কষ্ট দেয়, কিন্তু সে জানে নিলয়ের মতো কারোর স্মৃতি ধরে জীবন চালানো সম্ভব নয়।
একদিন সমু তার পুরনো ডায়েরি পড়তে বসে। ডায়েরিতে সে আর নিলয়ের শৈশবের গল্প, হাসি-ঠাট্টার দিনগুলো, আর সেই নির্ভেজাল বন্ধুত্বের মুহূর্তগুলো পড়ে। তার মনে হয়, প্রতিশোধ নিতে গিয়ে সে নিলয়ের স্মৃতিগুলোকে আরও বেশি পাথর বানিয়ে নিজের হৃদয়ে বয়ে বেড়াচ্ছে।
তিয়ার জীবন যখন এক অন্ধকার গর্তে ঢুকে গেছে, সমু তার জীবনকে আবার নতুন করে সাজানোর সিদ্ধান্ত নেয়। সে ঠিক করে, প্রতিশোধের মাধ্যমে নয়, ভালোবাসার মাধ্যমে নিলয়ের স্মৃতিকে চিরস্থায়ী করবে।
একদিন কলেজে সমুর সঙ্গে এক নতুন মেয়ের দেখা হয়। মেয়েটির নাম ছিল অনন্যা। অনন্যা ছিল সরল, সাধারণ, আর নিলয়ের মতোই একটু বোকাসোকা। তার চোখে ছিল কৌতূহল আর মনে ছিল একরাশ সরলতা। সমু প্রথমে তাকে পাত্তা দেয়নি, কারণ তার জীবনে আর কোনো আবেগ জায়গা করতে পারবে বলে তার বিশ্বাস ছিল না। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনন্যার সরল হাসি আর নির্ভেজাল ভালোবাসা সমুর শূন্যতাগুলোকে ভরিয়ে তোলে।
অনন্যা ধীরে ধীরে সমুর জীবনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে। সে সমুকে বলে, “তোমার মনের ভিতরে এত কিছু চাপা পড়ে আছে, যা তোমাকে বেঁধে রেখেছে। এগুলো থেকে বেরিয়ে আসো।”
সমু নিলয়ের কথা সব খুলে বলে অনন্যাকে। সে তাকে জানায়, কিভাবে নিলয়ের সঙ্গে তিয়ার প্রতারণা তার জীবনকে দুঃখ আর ক্রোধে ভরিয়ে তুলেছিল। অনন্যা চুপ করে শোনে, তারপর বলে, “তুমি প্রতিশোধ তো নিয়েছ, কিন্তু প্রতিশোধে কি তোমার মন শান্ত হয়েছে?”
সমু বলে, “না, আমার মনে হয় আমি নিলয়কে আরও দূরে ঠেলে দিয়েছি।”
অনন্যা তখন তাকে বোঝায়, “নিলয় যেখানেই থাকুক, সে কখনো চাইবে না তুমি তার জন্য এভাবে নিজের জীবন নষ্ট করো। তার ভালোবাসার জন্য তুমি নতুনভাবে জীবন শুরু করো।”
সমু বুঝতে পারে, প্রতিশোধ তাকে শান্তি দেয়নি। সে অনন্যাকে তার জীবনের অংশ করার সিদ্ধান্ত নেয়। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অনন্যা সমুকে শেখায় কীভাবে জীবনের ক্ষতগুলো মেরামত করা যায়।
এদিকে তিয়া, যাকে সমু ছেড়ে গিয়েছিল, এখন নিজের ভুলের মাশুল দিতে দিতে বুঝতে পারে, ভালোবাসা হলো এক ধরনের দায়িত্ব। অন্যের মন নিয়ে খেলা নয়। সে নিজেকে শুধরে নেয়।
সমু আর অনন্যা একসঙ্গে নতুন জীবনের শুরু করে, আর নিলয়ের স্মৃতিকে তারা তাদের জীবনের এক সুন্দর অংশ হিসেবে মনে রাখে। নিলয়ের প্রতি ভালোবাসা আর বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে তারা একটা স্কুল খোলে, যেখানে ভালোবাসার শক্তি আর বন্ধুত্বের গুরুত্ব শেখানো হয়।