---Advertisement---

Bengali Sweet Love Story: ভালোবাসার লাল গোলাপ

Updated On:
Bengali Sweet Love Story
---Advertisement---

“তোমাকে না বলেছি সিগারেট ছাড়তে?”

রাগে চোখ বড় করে বলেই সদ্য ধরানো সিগারেটটা কেড়ে নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দিল। মুখটা একদম গম্ভীর।

আমি কিছু বললাম না, চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম। ভালোবাসার মানুষের কাছে বকা খাওয়ায় যে অন্যরকম একটা শান্তি আছে, সেটা ওকে বোঝাবো কী করে?

কিন্তু যা পরের মুহূর্তে ঘটলো, তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।

ও এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “তোমার ঠোঁটগুলো দিন দিন কালো হয়ে যাচ্ছে!”

বলেই নিজের ওড়না দিয়ে আমার ঠোঁট ঘষতে লাগল।

আমি অবাক হয়ে বললাম, “এই! পাবলিক প্লেস!”

“হোক! খাওয়ার সময় মনে থাকে না?”

“আউচ! ব্যথা পাচ্ছি!”

“লাস্ট ওয়ার্নিং! এরপরেও যদি খাও…”

আমি হাসতে হাসতে বললাম, “তারপর কী হবে?”

“তোর মাথা!”

বলেই ঘুরে দাঁড়িয়ে চলে গেল।

আমি চুপ করে রইলাম, কিন্তু মনে মনে বুঝে গেছি, আজ ওর রাগ ভাঙানো সহজ হবে না।

বেচারি মন খারাপ করে লেকের ধারে বসে রইল। আমি ওর পছন্দের চকলেট আর একটা লাল গোলাপ নিয়ে ওর সামনে হাজির হলাম। কিন্তু মুখটা এখনো কালো করে আছে।

আমি একটু কৌশল করলাম। পাশে দাঁড়িয়ে এক পথশিশুকে ডেকে এনে ওর হাতে চকলেট ধরিয়ে দিলাম, “এটা আপুকে দাও তো!”

ওর চোখমুখ আরও গম্ভীর হয়ে গেল। বুঝতে পারলাম, প্রিয় জিনিস কাউকে দিয়ে দিতে ওর কষ্ট লাগছে।

আমি পকেট থেকে আরেকটা চকলেট বের করে ওর সামনে ধরলাম, “আমাদের জন্য একটাই যথেষ্ট, তাই না?”

ও কিছু বলল না।

আমি মুচকি হেসে বললাম, “আজ থেকে সিগারেট বাদ। সত্যি বলছি!”

ও এবারও নিশ্চুপ।

আমি ওর হাত ধরে বললাম, “তোমার জন্য ছেড়ে দিলাম!”

ও চোখ বড় করে তাকিয়ে বলল, “আমাকে ছুঁয়ে বলো!”

আমি হাসলাম, ওর কপালে আলতো করে ছুঁয়ে বললাম, “আমি আর সিগারেট খাই না। তবে তুমি যদি আমার হয়ে থাকো…”

ও কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল, “আচ্ছা, থাকবো!”

তারপর মুচকি হেসে চকলেটটা মুখে পুরে দিল।

এই মেয়েটাকে আমার অদ্ভুত রকম ভালো লাগে।

আমি বললাম, “চলো হাঁটি!”

দুজনে লেকের পাড় ধরে হাঁটছি। চারপাশটা আজ বেশ সুন্দর লাগছে। হঠাৎ একটা ওয়াটার বোট দেখে বললাম, “চলো, ভাসি!”

ও কিছুক্ষণ ভাবলো, তারপর বলল, “হুম, মন্দ না, চলো!”

বোটে উঠে দুজনে বাদাম চিবোচ্ছি। আমি একটু ভয় দেখানোর জন্য বললাম, “তুমি তো সাতার জানো না, এখন যদি ডুবে যাই?”

ও একদম স্বাভাবিকভাবে বলল, “তুমি তো আছো!”

আমার বুকের ভেতর ধক করে উঠলো। মেয়েটা আমাকে কতটা বিশ্বাস করে!

আমি চুপ করে ওর দিকে তাকিয়ে থাকলাম।

ও খেয়াল করল, বলল, “এই আদিত্য, কী দেখছো?”

আমি কিছু বললাম না।

ও চোখ সরিয়ে নিলো, তারপর অভিমানের সুরে বলল, “চোখ ফেরালে কেন?”

আমি হেসে বললাম, “বেশিক্ষণ তাকাতে পারি না তোমার দিকে!”

ও আবারও অভিমানী কণ্ঠে বলল, “আমি দেখতে খুব খারাপ?”

আমি ওর কপালে চুমু দিয়ে বললাম, “উজ্জ্বলতাটা একটু বেশি দিয়েছে বিধাতা!”

ও হেসে লজ্জায় মুখ নিচু করল।

সন্ধ্যা নেমে আসছে। ওর হাতটা শক্ত করে ধরলাম।

ও ফিসফিসিয়ে বলল, “খুব ভালোবাসি!”

আমি ওর কপালে ঠোঁট ছুঁয়ে বললাম, “তোমার ভালোবাসার ছোঁয়ায় সব কিছু ছেড়ে দিতে পারি!”

রিকশায় বসে ও আমার কাঁধে মাথা রেখে বলল, “তুমি হারিয়ে গেলে আমাকেও নিয়ে যেও, প্লিজ!”

আমি ওর হাতটা শক্ত করে ধরলাম, মনে মনে বললাম, “তোমাকে কখনো হারিয়ে যেতে দেব না!”

রিকশায় বসে ওর মাথাটা আমার কাঁধে রাখা, সন্ধ্যার বাতাস আমাদের চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। রাস্তার ল্যাম্পপোস্টের হলুদ আলোয় ওর মুখটা আরও মায়াবী লাগছে। আমি চুপচাপ ওর হাতটা ধরে বসে আছি, মনে হচ্ছে এই মুহূর্তটাই ধরে রাখতে চাই চিরদিনের জন্য।

“আদিত্য…”

ওর কন্ঠে এক অন্যরকম নরম ভাব।

“হুম?”

“একটা কথা বলবো?”

আমি হাসলাম, “তুমি তো সবসময়ই বলো, এখন আলাদা করে অনুমতি চাইছো কেন?”

ওর হাতটা আমার হাতের ভেতর শক্ত করে ধরে বলল, “ভালোবাসা কেমন করে বোঝা যায়?”

আমি একটু অবাক হলাম।

“মানে?”

ও একদৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে থাকল, যেন আমার চোখের মধ্যে উত্তর খুঁজছে।

“তুমি কেমন করে বুঝলে যে আমাকে ভালোবাসো?”

আমি একটু থেমে ওর চুলে হাত বুলিয়ে বললাম, “যখন তোমার অভিমান ভাঙাতে চকলেট কিনতে ইচ্ছা করে, যখন তোমার এক একটা কথায় হাসি পায়, আবার এক এক সময় বুকটা চিনচিন করে ব্যথা হয়… তখন বুঝলাম, এটা ভালোবাসা!”

ও মৃদু হেসে বলল, “তাহলে আমিও তোমাকে ভালোবাসি!”

আমি মজা করে বললাম, “এতদিন পর বুঝলে?”

ও চোখ টিপে বলল, “হুম, একটু দেরি হলো, কিন্তু দেরিতে বোঝা ভালো, তাই না?”

আমি হেসে ওর হাতটা আরও শক্ত করে ধরলাম।

### পরের দিন:

সকালে ফোনে একটা মেসেজ এলো—

💬 “আজ বিকেলে লেকের ধারে আসবে? তোমার জন্য কিছু আছে…”

আমি উত্তেজিত হয়ে রেডি হলাম। ওর জন্য একটা ছোট্ট গিফট কিনলাম—একটা ছোট্ট ব্রেসলেট, যার মধ্যে লেখা “Forever Us”

বিকেলবেলা লেকের ধারে গিয়ে দেখি, ও একটা প্যাকেট হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

“কি আছে প্যাকেটে?” আমি জানতে চাইলাম।

ও হাসল, “আগে তুমি দাও, তারপর আমি দেব!”

আমি ওর হাতে ব্রেসলেটটা দিলাম।

ও অবাক হয়ে বলল, “তুমি জানো, আমি এমন কিছুই চাইছিলাম!”

“তাই নাকি?” আমি হেসে বললাম।

ও এবার আমার দিকে প্যাকেটটা বাড়িয়ে দিল।

ভেতরে একটা ছোট্ট কাগজে লেখা—

“আজ থেকে সিগারেট ছেড়ে দিলে, আমি আমার জীবন তোমার হাতে ছেড়ে দেবো!”

আমি একটুও দেরি করলাম না, সাথে সাথে বললাম, “আমি অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছি, এখন তুমিই আমার একমাত্র নেশা!”

ও লজ্জায় মুখ ঘুরিয়ে নিল, আর আমি বুঝলাম—এই মেয়েটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া!

Payel Mahato

I am Payel Mahato, a passionate storyteller who loves weaving emotions into words and crafting tales that touch hearts. As a Bengali love story writer, I specialize in creating narratives filled with romance, drama, and human connections that resonate deeply with readers.

---Advertisement---

Related Post

Leave a Comment