---Advertisement---

Cute Love Story in Bengali: ভালোবাসার পথে

Published On:
Cute Love Story in Bengali
---Advertisement---

বাসে উঠে সিট খুঁজছিলাম। এক পাশে জানালার ধারে বসে থাকা মেয়েটার পাশে ফাঁকা সিট দেখে গিয়ে বসতেই হালকা ধাক্কা লাগল ওর গায়ে।

মেয়েটা বিরক্ত চোখে আমার দিকে তাকাল।
আমি হাসলাম—

“আছে আছে!”

ও ভ্রু কুঁচকে বলল, “কি আছে?”

আমি হেসে বললাম, “এই যে, আপনি হয়তো ভাববেন বাসায় মা-বোন নেই, তাই ইচ্ছে করে আপনার পাশে এসে বসলাম! কিন্তু শুধু মা-বোন না, বউও আছে!”

ওর চোখে সামান্য বিস্ময় ফুটে উঠল। হয়তো এমন কথা আশা করেনি।

আমি ওর আরেকটু কাছে সরে এলাম। মেয়েটা সঙ্গে সঙ্গেই নাক কুঁচকে জানালার দিকে সরল। আমি একটু দুষ্টুমি করে আবারও চেপে বসতেই কড়া গলায় বলে উঠল—

“আশ্চর্য! মানুষ তো আপনি! ভদ্রতা জানেন না নাকি? গা ঘেঁষে বসছেন কেন?”

আমি একটু থমকে গেলাম, এরপর মুচকি হেসে বললাম—

“পানির বোতল আছে?”

ও সামান্য বিরক্তি নিয়ে ব্যাগ খুলে একটা বোতল বের করে দিলো।

“নিজের পানি নিয়ে বাসে উঠতে পারেন না?”

আমি বোতল থেকে এক চুমুক পানি খেলাম, তারপর ওর দিকে এগিয়ে দিয়ে বললাম, “পানি দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ!”

ও কিছু বলল না, কেবল জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকল।

আমি কানে হেডফোন গুঁজে গান শুনতে লাগলাম। কিন্তু মন যেন শান্ত হচ্ছে না। অজানা এক ভালোলাগার অনুভূতি কাজ করছে। মেয়েটার গা থেকে হালকা সুবাস আসছে, যা আমাকে অদ্ভুত এক আবেশে জড়িয়ে ফেলছে। একটু দুষ্টুমি করার শখ হলো। ঘুমের ভান করে আস্তে করে ওর কাঁধে মাথা এলিয়ে দিলাম।

“মাথাটা সরান!”

আমি হড়বড়িয়ে উঠলাম—
“ওপ্‌স! স্যরি!”

মেয়েটা শুভ্র সাদা ড্রেস পরেছে। সাদা রঙ আমাকে সবসময়ই দুর্বল করে দেয়। আর ওকে দেখে মনে হচ্ছে যেন কোনো স্বর্গের অপ্সরী। তার উপর ঠোঁটের নিচে ছোট্ট একটা তিল… যেন সৌন্দর্যের এক অনন্য ছোঁয়া!

এমন সময় কন্ডাক্টর এল—
“ভাড়া দিন!”

আমি মনে মনে ভাবলাম— “শালার কন্ডাক্টর আসার আর টাইম পেল না!”

মেয়েটা ব্যাগ থেকে টাকা বের করছিল, আমি তাড়াতাড়ি বললাম—

“আরেহ! কি করছেন? আমি দিচ্ছি আপনার ভাড়া!”

মেয়েটা অবাক হয়ে বলল, “কেন? আপনি কেন দেবেন? আমি কি গরীব?”

আমি মুচকি হেসে বললাম, “আপনার দেওয়া এক বোতল পানির ঋণ শোধ করলাম!”

মেয়েটা কিছু বলল না। কিন্তু মুখের অভিব্যক্তিতে অস্বস্তি স্পষ্ট!

হঠাৎ সে কন্ডাক্টরকে বলল—
“ভাইয়া, অন্য কোনো সিট ফাঁকা নেই? এখানে বসতে সমস্যা হচ্ছে!”

কন্ডাক্টর মাথা নাড়িয়ে বলল, “না আপা, ২০ কিমির পর দুটো সিট ফাঁকা হবে!”

মেয়েটা হতাশ হয়ে জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকল। আমি মজা পেয়ে বললাম—

“চিন্তা করবেন না, ওই সিট ফাঁকা হলে আমরাও ওখানে চলে যাবো!”

ও মুখ বাঁকা করে বলল, “আমার বয়েই গেছে আপনার পাশে বসতে!”

আমি একটু হেসে চুপ করে গেলাম।

কিছুক্ষণ পর দেখি মেয়েটা ব্যাগ থেকে বোতল বের করে পানি খাচ্ছে। আমি দুষ্টুমিভরা চোখে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম—

“আপনাকে কোথায় যেন দেখেছি… মনে করতে পারছি না!”

মেয়েটা বিরক্ত হয়ে তাকাল, তারপর ঠাস করে আমার মাথায় পুরো বোতল খালি করে দিলো!

আমি পুরো ভিজে গিয়েছি!

কন্ডাক্টর চোখ গোল করে বলল—
“এইটা কি করলেন আপা?”

মেয়েটা ঠোঁট টিপে হেসে বলল—

“আমার জামাইয়ের মাথায় আমি পানি ঢেলেছি! এতে আপনাদের কি?”

বাসের সবাই অবাক হয়ে আমার দিকে তাকাচ্ছে! কন্ডাক্টরও যেন বিশ্বাস করতে পারছে না। আর আমি? আমি অবাক নয়, বরং আনন্দিত!

“এই যে শুনছেন?”

আমি ওর দিকে তাকালাম। মেয়েটা একটু অভিমানী গলায় বলল—

“আপনার রাগ ভাঙানোর কথা, আর আপনি আরও রাগিয়ে দিচ্ছেন!”

আমি মৃদু হাসলাম—

“স্যরি!”

“হুম!”

“বললাম তো স্যরি!”

“হুম!”

আমি ওর গাল টিপে বললাম— “স্যরির উত্তর দাও!”

ও হেসে আমার হাতে চিমটি কাটল— “উফফফ!”

তারপর আমার বাহুতে মাথা রেখে বলল—

“আর কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে?”

আমি ওর কপালে আলতো চুমু দিয়ে বললাম—

“আর দশ-বারো মিনিট!”

চন্দ্রীমা আমার স্ত্রী। ঈদের ছুটিতে শ্বশুরবাড়ি যাবার পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু আমার ঘুমকাতুরে মন সকালে যেতে দিল না। তাই অভিমান করে চন্দ্রীমা একা চলে এলো। আর আমি? পিছু পিছু চলে এলাম।

এই হলো আমাদের ভালোবাসার গল্প। 😊❤️

বাস ধীরে ধীরে স্টপেজে এসে থামল। আমি আর চন্দ্রীমা একসাথে নেমে এলাম। চারপাশে গ্রামের পরিচিত গন্ধ— কাঁচা মাটির ঘ্রাণ, গাছের পাতার দুলুনি, আর দূরে ছোট ছোট দোকানপাট।

আমি ব্যাগটা ঠিক করতে করতে বললাম, “তুমি এত রাগ করো কেন, বলতো?”

চন্দ্রীমা হাত কাঁধে রেখে বলল, “তুমি এত জ্বালাও কেন বলো তো?”

আমি হাসলাম। চন্দ্রীমার ঠোঁটের নিচে তিলটা দেখে আমার আবারও ভালো লাগল। মনে হলো, একটু ছুঁয়ে দেখি। কিন্তু হঠাৎ ওর দুষ্টু চোখের চাহনি দেখে ভাবনা বাদ দিলাম।

হাঁটতে হাঁটতে শ্বশুরবাড়ির কাছে চলে এলাম। গেটের সামনে দাঁড়িয়ে চন্দ্রীমা বলল, “মনে রেখো, তুমি আমার রাগ ভাঙানোর জন্য আসছো, তাই আবার কিছু ভুল করো না!”

আমি মজা করে বললাম, “তোমার বাবার সামনে হাত ধরে থাকবো নাকি?”

চন্দ্রীমা চোখ বড় বড় করে বলল, “চুপ করো! যদি মা শুনে ফেলে!”

আমার শ্বশুরবাড়ি তেমন বড় না, তবে দোতলা একটা বাড়ি। উঠোনে কলাগাছের সারি আর সামনে একটা দোলনা। বাড়িতে ঢুকতেই শাশুড়ি মা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে হাসি মুখে বললেন, “এত দেরি করলে কেন?”

আমি মাথা চুলকে বললাম, “এই তো মা, তোমার মেয়েকে আনতে এসেছি!”

শ্বশুরমশাই চেয়ারে বসে পত্রিকা পড়ছিলেন। আমাকে দেখে বললেন, “কি জামাইবাবু, কেমন আছো?”

আমি একগাল হাসি দিয়ে বললাম, “একদম ভালো! এই তো তোমার মেয়ের দুষ্টুমি সহ্য করছি!”

চন্দ্রীমা আমার দিকে চোখ বড় করে তাকাল, যেন ইশারায় বলছে, “এত কথা বলছো কেন?”

শাশুড়ি মা আমাদের ভেতরে নিয়ে গেলেন। খাবারের টেবিলে দারুণ সব রান্না সাজানো। গরম গরম ভাত, মাছ ভাজা, ডাল, আলুভর্তা আর মাংস।

খেতে বসতে না বসতেই শাশুড়ি মা বললেন, “বউকে একা রেখে চলে গেলে কেন?”

চন্দ্রীমা সঙ্গে সঙ্গে বলল, “জিজ্ঞেস করো না মা! আমি একা চলে আসছি, আর ও সাহেব পরে আসছে! অবশ্য মাঝপথে ধরা পড়ে গেছে!”

শাশুড়ি মা হেসে বললেন, “বউকে একা ফেলে রেখে শাস্তি পাওয়া দরকার!”

আমি মজা করে বললাম, “কি শাস্তি মা?”

চন্দ্রীমা সঙ্গে সঙ্গে বলল, “আমি বলছি! রান্নাঘরে গিয়ে প্লেট ধুতে হবে!”

আমি অবাক হয়ে বললাম, “কি?! আমি প্লেট ধোবো?”

শ্বশুরমশাই মুখ গম্ভীর করে বললেন, “হ্যাঁ, জামাইবাবু, শাস্তি তো পেতেই হবে!”

আমি অসহায় মুখে চন্দ্রীমার দিকে তাকালাম। ও হাসতে হাসতে বলল, “এখন বুঝলে আমার সাথে দেরি করে আসার ফল?”

রাতের বেলায় ছাদে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। চন্দ্রীমা পাশে এসে দাঁড়িয়ে বলল, “তুমি তো সবসময় আমাকে জ্বালাও, কিন্তু আজ একটু অন্যভাবে পাশে থেকো!”

আমি ওর দিকে তাকালাম। চাঁদের আলোয় ওর মুখটা স্বর্গীয় লাগছে। আমি আস্তে করে ওর হাত ধরলাম।

“আমি তো সবসময়ই তোমার পাশে আছি, চন্দ্রী!”

চন্দ্রীমা মাথা আমার কাঁধে রাখল। চারপাশে নিস্তব্ধতা। শুধু আমাদের নিঃশ্বাসের শব্দ আর হৃদয়ের স্পন্দন।

এই ভালোবাসার পথে, আমরা দুজনই দুজনের সঙ্গী… সারাজীবনের জন্য। ❤️

Payel Mahato

I am Payel Mahato, a passionate storyteller who loves weaving emotions into words and crafting tales that touch hearts. As a Bengali love story writer, I specialize in creating narratives filled with romance, drama, and human connections that resonate deeply with readers.

---Advertisement---

Related Post

Leave a Comment