---Advertisement---

Emotional love story in Bengali: তুমি আমার পরী

Updated On:
Emotional love story in Bengali
---Advertisement---

— “বউ ও বউ!”
— “কে তোর বউ?”
— “কে আবার? তুই!”
— “মাথা খারাপ? আমি তোর বউ হতে যাবো কেন রে?”
— “তো কার হবি… তাহসানের? যা, দেখে আস যদি সিরিয়ালে চান্স হয়!”

আখি হেসে দিলো, সেই হাসি দেখে আমার বুকের বাঁ পাশে ধুকধুকানি বেড়ে যায়। কী সুন্দর করে হাসে মেয়েটা! কিন্তু হাসতে হাসতেই গম্ভীর হয়ে গেল—

— “আচ্ছা, রাজ! তুই সত্যি বলতে পারিস না?”
— “মানে?”
— “তুই তো আমাকে ভালোবাসিস, তাই না?”

আমি থমকে গেলাম। এই মেয়ে তো সব বুঝেও কিছু বোঝে না! নাহলে এতদিন ধরে আমি যেটা আকার-ইঙ্গিতে বলার চেষ্টা করেছি, সেটা বোঝার মতো বুদ্ধি ওর অবশ্যই আছে। কিন্তু আজ ও নিজেই বলল?

আমি ওর চোখে তাকালাম। আজ ওর চোখে যেন অন্য কিছু ছিল। সাধারণত মজা করতো, খুনসুটি করতো, কিন্তু আজ… আজ ওর চোখের ভাষা একদমই অন্যরকম!

কথা বাড়ালাম না। কারণ, এই মেয়ের সঙ্গে কথা বাড়ালে কপালে দুঃখ আছে!

— “তোর জন্য আইসক্রিম আনবো?”

আখি আবার হেসে ফেলল।

— “তুই না… সত্যি একটা বোকার বাচ্চা!”

ও কিছু না বলে পাশ থেকে হেঁটে চলে গেল। আমি বোকার মতো দাঁড়িয়ে রইলাম।

সন্ধ্যায় ফোন দিল শুভ।

— “দোস্ত, তুই কোথায়?”
— “বাসায়।”
— “আখি আজ পুরো ভার্সিটিতে তোর খোঁজ করলো। বললো, তুই ওর ফোন ধরছিস না!”

আমি চুপ করে থাকলাম। সত্যিই তো, গত দু’দিন ধরে আমি ইচ্ছা করেই আখির ফোন ধরিনি। এতদিন আমি ওকে ছাড়া থাকতে পারতাম না, আজ দেখি ও আমার ছাড়া থাকতে পারে কিনা!

সকালবেলা দরজায় ঠক ঠক আওয়াজ শুনে উঠলাম। দরজা খুলতেই সামনে দাঁড়িয়ে আখি। হাতে একটা ব্যাগ, মুখে রাগ আর চোখে অভিমান!

— “তুই ফোন ধরিস না কেন?”

আমি কিছু বললাম না। ও ভেতরে ঢুকে একেবারে আমার বিছানায় বসে পড়লো।

— “তুই আমাকে না বলেই কেন ভার্সিটিতে যাচ্ছিস না? জানিস, আমি কত চিন্তা করছিলাম?”

আমি অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালাম।

— “তুই এতটা চিন্তা করছিলিস?”

— “তা না হলে কি? তোর ওপর আমার কোনো অধিকার নেই নাকি?”

এই প্রথমবার ওর মুখে এমন কথা শুনলাম! ও কি তাহলে সত্যিই…!

আমি ওর হাতটা ধরতে গেলাম, কিন্তু ও এক ঝটকায় সরিয়ে নিলো।

— “এখনো রাগ করছিস?”

— “হ্যাঁ! যতক্ষণ না তুই সরি বলবি!”

আমি ওর হাত শক্ত করে ধরলাম, আর সরাসরি ওর চোখে তাকিয়ে বললাম,

— “আমি তোর প্রেমে পড়েছি, আখি! অনেকদিন ধরেই! কিন্তু তুই… তুই তো আমাকে কখনো পাত্তা দিসনি। কেবল বন্ধু বলে চালিয়ে দিয়েছিস।”

আখির চোখে জল চিকচিক করছিল।

— “আমি তোকে বন্ধু বলেছি, কারণ তুই ছিলি আমার সবচেয়ে কাছের মানুষ! আমি জানতাম না, বন্ধুত্বের চেয়েও বেশি অনুভূতি থাকতে পারে।”

আমি ওকে আর কিছু বলতে দিলাম না। শক্ত করে ওকে জড়িয়ে ধরলাম।

আমি আখির কানের কাছে ফিসফিস করে বললাম,

— “এবার কি তুই আমার বউ হবি?”

আখি একটু লজ্জা পেয়ে বলল,

— “আগে দেখা যাক, তোর প্রেমিক হিসেবে কেমন পারফরম্যান্স!”

আমি হেসে বললাম,

— “তাহলে তো এক্সট্রা কেয়ারফুল হতে হবে!”

আখি হাসলো। আমি বুঝে গেলাম, এবার সত্যিই ও আমার! ❤️

পূর্বের গল্পের শেষে আখি আর রাজ অবশেষে নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করেছিল। কিন্তু ভালোবাসার গল্প কি এত সহজেই শেষ হয়? এখানে শুরু হয় নতুন এক অধ্যায়…

আজ রাজ আর আখির বিয়ের দুই মাস পূর্ণ হলো। একেবারে ছোটখাটো গায়ে হলুদ আর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিয়েটা সেরে নিয়েছিল তারা। তবে বিয়ের পর থেকেই আখির রাগ একটু বেড়ে গেছে, বিশেষ করে রাজ যদি কোনো মেয়ের দিকে তাকায়!

সকালবেলা, রাজ ঘুমাচ্ছে। আখি বিছানায় বসে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।

“এই রাজ, ওঠো!”

রাজ চোখ খুলতে চায় না।

“উফফ, একটু ঘুমাতে দাও না পাগলী!”

“পাগলী বললে খবর আছে! এখনই উঠে পড়ো।”

রাজ এক চোখ খুলে আখির দিকে তাকিয়ে বলল,

“তুমি না আমার বউ হয়েও একেবারে বান্ধবীর মতো ব্যবহার করো!”

“মানে? বউরা কি রাগ করতে পারে না?”

“রাগ করতে পারো, কিন্তু এত বেশি না!”

আখি মুখ ফুলিয়ে বলল,

“ঠিক আছে, তাহলে আমি চলে যাচ্ছি!”

আখি রেগে উঠে চলে যেতে চাইল, রাজ দ্রুত ওর হাত ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে এলো।

“এই তো, চলে যাওয়া মানা! তুমি জানো, আমি তোমাকে কত ভালোবাসি?”

আখির রাগ কমে গেল, কিন্তু সে মুখে কিছু বলল না।

একদিন রাজের অফিসে একটা বড় পার্টি ছিল। রাজ কিছুটা আনমনে ছিল, কারণ অফিসের বস সবাইকে সপরিবারে নিমন্ত্রণ করেছিলেন, কিন্তু আখি পার্টিতে যেতে চাইছিল না।

রাজ জোরাজুরি করায় আখি রাজের সঙ্গে গেল। পার্টিতে রাজের এক পুরোনো বন্ধু রিয়া ছিল, যাকে দেখে আখি কেমন একটা অস্বস্তি বোধ করল। রাজ আর রিয়া একসঙ্গে অনেকক্ষণ গল্প করছিল। আখি ওদের দেখে মনে মনে জ্বলতে লাগল।

পার্টি শেষে গাড়িতে ওঠার পর আখি কোনো কথা বলছিল না।

রাজ বুঝতে পারল কিছু একটা সমস্যা হয়েছে।

“এই, এত চুপ কেন?”

“কিছু না!”

“আবার মিথ্যে বলছো?”

“তোমার পুরোনো বান্ধবীর সঙ্গে গল্প করতে এতই ব্যস্ত ছিলে যে খেয়ালই করোনি আমি কেমন বোর হচ্ছিলাম!”

রাজ মুচকি হেসে বলল,

“ওহহো! তাহলে তুমি জেলাস?”

“জেলাস? কে? আমি? একদমই না!”

“সত্যি?”

“হুম!”

রাজ গাড়ি থামিয়ে আখির দিকে তাকিয়ে বলল,

“শোনো, আমি শুধু তোমাকে ভালোবাসি। অন্য কেউ আমার জীবনে আসতে পারবে না। তুমি শুধু আমার স্ত্রী নও, তুমি আমার জীবন।”

আখি মুখ ঘুরিয়ে বাইরে তাকাল, কিন্তু রাজের কথা শুনে ওর ঠোঁটে মুচকি হাসি ফুটে উঠল।

একদিন সকালে আখি ঘুম থেকে উঠে দেখে রাজ কোথাও নেই। ফোন করতেই রাজ বলল,

“বাইরে আসো, তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে!”

আখি বেরিয়ে এসে দেখে, রাজ একটা নতুন বাইক কিনেছে আর আখির জন্য একটা হেলমেট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

“এইটা তোমার জন্য!”

“আমার জন্য? কেন?”

“কারণ এখন থেকে আমরা একসঙ্গে রাইডে যাবো!”

আখি খুশি হয়ে রাজকে জড়িয়ে ধরল।

“তোমাকে ছাড়া আমার জীবন অসম্পূর্ণ রাজ!”

রাজ হাসল,

“তাহলে আমাকে একটা পাপ্পি দাও?”

আখি ধাক্কা দিয়ে বলল,

“উঁহু! ওটা বিয়ের পর বলেছিলাম! এখন বলছি, তোমাকে সারাজীবন ভালোবাসবো!”

রাজ আবার আখিকে কাছে টেনে নিল, আর আকাশের নিচে, বাতাসের সাথে মিলিয়ে দুজনের ভালোবাসা আরও গভীর হয়ে গেল…

(চলবে…)

এই গল্পের পরবর্তী পর্বে কী হতে পারে? রাজ আর আখির মধ্যে নতুন কোনো মজার কাহিনি ঘটবে? নাকি কোনো ভুল বোঝাবুঝি আসবে? তোমার কি কোনো টুইস্ট মাথায় আছে? 😍

Payel Mahato

I am Payel Mahato, a passionate storyteller who loves weaving emotions into words and crafting tales that touch hearts. As a Bengali love story writer, I specialize in creating narratives filled with romance, drama, and human connections that resonate deeply with readers.

---Advertisement---

Related Post

Leave a Comment